কমলগঞ্জে টিসিবির তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি কমলগঞ্জে টিসিবির তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইফতারির জন্য ১০ লক্ষ টাকা বিতরণ করলো সাদিপুর ইউনিয়ন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ইউকে সেহরি ও ইফতারি নিয়ে অস্বচ্ছলদের পাশে ছায়াপথ সংগঠন রাজারহাটে বাল্য বিবাহ ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে সংলাপ অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রামে শিশু নির্যাতন ও বাল্য বিবাহ বন্ধে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক ওরিয়েন্টশন কুড়িগ্রামে ‘ভাওয়াইয়া মুকুট’ উপাধি পেলেন অনন্ত কুমার দেব প্রেসক্লাব কুলাউড়ার সভাপতির মায়ের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল কুলাউড়ায় এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্কের “সেইফ ওয়াটার ক্যাম্পেইন “ কুলাউড়ায় ভারতীয় বিএসএফ’র গুলিতে নিহত পারভেজের লাশ হস্তান্তর কুলাউড়ায় নিহত নৈশ প্রহরীর পরিবারকে সহায়তা প্রদান ৮ বছরেও সংস্কার হয়নি বন্যায় বিধ্বস্ত ফুলবাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধ

কমলগঞ্জে টিসিবির তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি

  • রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর উপকার ভোগী তালিকা তৈরীতে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নে ৯২৫ জন কার্ডধারী তালিকায় এক উপসচিবের বাবা, টিভি শোরুমের মালিক, ব্যবসায়ী, বিপুল পরিমান জমির মালিক, দ্বিতলা পাকা ভবনের মালিক, বিত্তশালী ও প্রবাস ফেরত ব্যক্তি নামও রয়েছে। এছাড়াও ইউপি সদস্যদের বাবা, ছেলে, বোনসহ সচ্ছল আত্মীয় স্বজনের নামও তালিকায় আছে। যাদের পরিবারের অনেকেই প্রবাসে থাকেন। স্বল্প আয়ের জনগোষ্টিকে উপকারভোগী হিসেবে তালিকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তর্ভূক্তির জন্য সরকারী নির্দেশনা থাকলেও সেটি মানা হয়নি আদমপুর ইউনিয়নে। বঞ্চিতদের অভিযোগ ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিজেদের ইচ্ছামাফিক আত্বীয়-স্বজন ও নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে টিসিবির ফ্যামেলী কার্ড করেছেন। এতে ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টির পাশাপাশি এলাকায় চলছে তোলপাড়।

জানা যায়, সরকারের ভিজিডি, ভিজিএফ প্রাপ্ত ও করোনাকালীন অসহায়দের তালিকা থেকে টিসিবি পণ্য বিতরনের জন্য উপকারভোগী নাম অন্তর্ভূক্তির সরকারী নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি আদমপুর ইউনিয়নে। এখানে ৯টি ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান তাদের স্বজন ও আস্থাভাজন লোকজনকে তালিকাভুক্ত করেছেন। শুধু তাই নয় হতদরিদ্রদের নাম না দিয়ে দিয়েছেন গাড়ি, বাড়ির মালিক সরকারের এক উপসচিবের বাবার নাম, এলাকার বিত্তশালী, আওযামীলীগের লোকজন, দ্বিতল ভবনের মালিক ও ব্যবসায়ীদের নাম। যাদের পরিবারে নেই কোন অভাব। আবার অনেক পরিবারের সদস্যরা থাকেন প্রবাসে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক টিসিবি পণ্য বিতরণের নামের তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠে। নামের তালিকায় রয়েছেন ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর ভানুবিল গ্রামের বাসিন্দা বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদে চাকুরীরত প্রদীপ কুমার সিংহের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা কৃষ্ণ কুমার সিংহ। তিনি স্বচ্ছল। তার বাড়ি পাকা এবং গাড়ি রয়েছে। জমিজমা আছে। প্রথম কিস্তির পণ্য নিয়েছেন।

৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর এর ছেলে ধান ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, পিতা জহুর উল্যা ও ভাই এরফান আলীর নাম। অথচ ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর এর দুই ছেলে ফ্রান্স ও দুবাই প্রবাসী। আদমপুর বাজারে বড় ঔষধ ব্যবসায়ী কীর্তিজিত সিংহ, উত্তর ভানুবিল গ্রামের বিত্তশালী মো: গনু মিয়া। যার দ্বিতলা বাড়ি ও তিন ভাই প্রবাসে। ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল আজিমের ছেলে ফাহাদ আলী, মেয়ের জামাই জুবের মিয়া ও বোন সাহেদা আক্তারের নামও রয়েছে টিসিবির তালিকায়। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মে পিছিয়ে যাননি ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাজী আলমগীর ফারুক। স্বচ্ছল হয়েও ছেলে শামসুল আলম শুভর নাম দিয়েছেন তালিকায়। সংরক্ষিত নারী সদস্য গুলনাহার বেগমের ভাই ও স্বজনদের নামও রয়েছে। একই ভাবে ৩নং ওয়ার্ডের অধিবাসী আদমপুর বাজারের ওয়ালটন টিভির শোরুমের মালিক যুবলীগ নেতা মইনুল ইসলামের নামও তালিকায় স্থান পেয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে আরো অর্ধশতাধিক স্বচ্ছল ব্যক্তির নাম রয়েছে তালিকায় যারা বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত বা তাদের স্বজনরা প্রবাসে আয় রোজগার করছেন। দরিদ্রদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল ব্যক্তিরা টিসিবি কার্ড পাওয়া বঞ্চিতদের মধ্য দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।

স্থানীয় সমাজকর্মী তাজউদ্দিন আহমেদ তাজু বলেন, তালিকা তৈরীতে আরও যাচাই বাছাই ও স্বচ্ছতার প্রয়োজন ছিলো। দরিদ্ররা পেলে উপকার হতো।

উপকারভোগী উপসচিবের বাবা কৃষ্ণ কুমার সিংহকে নিজের নাম অন্তর্ভূক্তির কথা জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় মেম্বারের সাথে কথা বলার উপদেশ দেন।

৭নং ওয়াডের্র ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর টিসিবির তালিকায় উপ-সচিবের পিতার নাম, নিজের ছেলে, পিতা ও ভাইয়ের নাম অন্তর্ভূক্তির বিষয় স্বীকার করে বলেন, আসলে আমি এতো সব বুঝিনি, আমার ভূল হয়েছে। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ রকম আর হবে না। চেয়ারম্যানকে বলে তালিকা থেকে নাম কেটে দিব।

আরেক ইউপি সদস্য আজিম মিয়া বলেন,দরিদ্র অনেকে টাকা দিয়ে পণ্য কিনতে আগ্রহী না হওয়ায় স্বচ্ছলদের নাম দিতে হয়েছে।

আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন মেম্বারদের স্বজন প্রীতির কথা স্বীকার করে বলেন, আমি অনিয়ম পছন্দ করি না, মেম্বারদের তালিকায় কিছুটা স্বজনপ্রীতি হয়েছে, আমি স্বচ্ছলদের নাম কেটে দিব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, আমি জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তালিকা অনুয়ায়ী কার্ডে স্বাক্ষর করেছি। সেখানে কারা স্বচ্ছল তা জানি না, এ রকম হলে চেয়ারম্যানকে বলে দিব নাম কেটে দেয়ার জন্য। উপসচিবের বাবার নাম টিসিবির তালিকায় রয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন এ ব্যাপরটি আমি জানি না। তবে এ রকম হয়ে থাকলে খোঁজ নিয়ে কার্ড বাতিল করা হবে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews