এইবেলা, সুনামগঞ্জ, ১৯ অক্টোবর ::
দিরাই উপজেলার কেজাউড়া গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে শিশু তুহিনকে হত্যার কথা তার বাবা আবদুল বাছির পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু তাহের মোল্লা।
এদিকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে বাছিরকে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সুনামগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালতের বিচারক মো. খালেদ মিয়া।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দিরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের মোল্লা বলেন, রিমান্ডে নেয়ার পর ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বাছির স্বীকার করেছে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য তাকে আদালতে তোলা হয়েছে। এছাড়া তিন দিনের রিমান্ডে থাকা তুহিনের চাচা আবদুল মছব্বির ও জমসেদ আলীকে রিমান্ড শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রোববার রাতে কেজাউরা গ্রামে রাতের আঁধারে ঘর থেকে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে তুলে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘাতকরা তার লাশ রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। দুর্বৃত্তরা তুহিনের পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে রাখে। দুটি কান ও তার লিঙ্গও কেটে ফেলা হয়।
মঙ্গলবার তুহিনের মা মনিরা বেগমের করা মামলায় বাছির, মছব্বির ও জমসেদকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে খুনের ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে তুহিনের চাচা নাসির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।
তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ও ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন : শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার সুনামগঞ্জ শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে শুভসংঘ এ কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র-শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন অংশ নেন। এর আগে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সবগুলোর পুনঃতদন্তের দাবি জানানো হয়। এ মামলায় দ্রুত সময়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
সাংবাদিক শামস শামীমের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর, কমরেড অমরচাঁন দাস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু, অ্যাডভোকেট মো. বুরহান উদ্দিন, শিক্ষক শাহজাহান সিরাজ, সাহেরিন চৌধুরী মিশুক, সাংবাদিক শহিদ নূর আহমদ, সারোয়ার হোসেন, ছাত্রনেতা আসাদ মনি, নূরজাহান সাদেক নূরী প্রমুখ।#