আমলাতন্ত্র নির্ভর প্রশাসনিক হুকুমে মহামারী প্রতিরোধ ফলোপ্রসু হয়না: ওয়ার্কার্স পার্টি আমলাতন্ত্র নির্ভর প্রশাসনিক হুকুমে মহামারী প্রতিরোধ ফলোপ্রসু হয়না: ওয়ার্কার্স পার্টি – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আত্রাইয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে প্রস্তুতি সভা কমলগঞ্জে সরকারি যাকাত ফান্ডে যাকাত সংগ্রহ সংক্রান্ত মতবিনিময় কমলগঞ্জে চা শ্রমিক নারীর লাশ সৎকার থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে  স্পেনের বার্সেলোনায় বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের ইফতার সম্পন্ন বড়লেখা সমাজসেবা অফিসের ‘সমাজকর্মী’ সুব্রত বিশ্বাসের পরলোকগমন : শোক প্রকাশ কুলাউড়ায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের উপশাখার উদ্বোধন জুড়ী ট্র্যাজেডি : সোনিয়ার মৃত্যুতে বেঁচে রইলো না আর কেউ কুলাউড়ায় এনার ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা আত্রাইয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত বড়লেখায় স্বাধীনতা দিবসে ২শ’ দুস্থ পরিবারে ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী দিল বিজিবি

আমলাতন্ত্র নির্ভর প্রশাসনিক হুকুমে মহামারী প্রতিরোধ ফলোপ্রসু হয়না: ওয়ার্কার্স পার্টি

  • শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১

সৈয়দ আমিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি :: “রাজনৈতিক, সামাজিক ও জনপ্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে আমলাতন্ত্র নির্ভর প্রশাসনিক হুকুমে মহামারী প্রতিরোধ ফলোপ্রসু হয়না।”
করোনা পরিস্থিতি, লকডাউন ও শোকাবহ আগষ্ট মাস বিষয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (৬ আগস্ট ২০২১) সকাল ১১টায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
চলমান স্বাস্থ্যবিধি বাধ্যকতার কারনে ভিডিও কনফারেন্সিংএর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড কামরূল আহসান।
অনুষ্ঠানে পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেডনুর আহমেদ বকুল, কমরেড জ্যোতি শংকর ঝন্টু, কমরেড হাজি বশিরুল আলম, কমরেড এনামুল হক এমরান ও পার্টির কেন্দ্রিয় প্রচার বিভাগের সদস্য কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন সহ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যগণ উপন্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে হিরোশিমা দিবসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জাপানের শহর হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ করে লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়ার ঘটনার স্মৃতিতে শোক জ্ঞাপন করা হয়।

করোনা পরিস্থিতি,লকডাউন ও শোকাবহ আগষ্ট মাস বিষয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সংবাদ সম্মেলনের পুরো বক্তব্য নিম্নে তুলা ধরা হলো:

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনারা আমাদের শুভেচ্ছা জানবেন। করোনা অতিমারী দেশজুড়ে এখন তার সংক্রমণের ভয়াল থাবা বিস্তার করেছে। গ্রামে গ্রামে মানুষ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুকিতে পড়ছে, এমন অবস্থায় আমাদের এই ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে আপনাদের উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে শোকাবহ আগষ্ট মাসের দিনটিতে ১৫ আগষ্টের কালোরাত্রিতে নারকীয় হত্যাজজ্ঞে লিপ্ত একদল দুস্কৃতিকারিদের দ্বারা বাংলাদেশের স্থপতি জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সহ তাঁর পরিবারের নিহত সকল সদস্যদের প্রতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা কিছু আসামীকে দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এজন্য বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। ঐ হত্যাজজ্ঞে জড়িত প্রত্যক্ষ আসামীদের বিচার হলেও এর নেপথ্যে থাকা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাকারী (মাষ্টারমাইন্ড) ষড়যন্ত্রকারী প্রকৃত অপরাধীদের এখনো চিহ্নিত করা হয়নি। আমরা বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছি এবং এই সভা থেকে আপনাদের মাধ্যমে আবারো জানাতে চাই, একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে ১৫ আগষ্টের প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারী (মাষ্টারমাইন্ড) অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং তাদেরও বিচারের আওতায় আনার।
সাংবাদিক বন্ধুগণ,করোনা অতিমারী আশংকাজনক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় তা ঠেকাতে সরকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে গত ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত সারাদেশে ১৪ দিনের লকডাউন দিয়েছিল। হঠাৎ একদিনের নোটিশে গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে রপ্তানীমুখি শিল্প বিশেষ করে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরী চালুর ঘোষনা দেয়। যা ছিল পুর্বাপর বিবেচনাহীন ও হটকারিতাপুর্ন এবং লকডাউনের নামে জনগনের সাথে তামাশার মত। কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন দিয়ে আবার রপ্তানীমুখি শিল্পের মালিকদের চাপে কারখানা চালুর ঘোষনা করোনা অতিমারী রোধ ব্যাহত ও ঘোষিত সাস্থ্যবিধি বিধান পালনে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এতে প্রতিয়মান হয়, সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বা করোনা মহামারী রুখতে আন্তমন্ত্রনালয় কোন সমন্বয় নেই। সরকারের এই বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত করোনা সংক্রমন ও মৃত্যুর মিছিলকে আরো প্রলম্বিত করবে। অন্যদিকে করোনা অতিমারীর আতংকজনক পরিস্থিতিতে আকস্মিক কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষনা ও একদল মুনাফাগ্রাসী মালিকদের চাপে গ্রামে চলে যাওয়া উদ্বিগ্ন শ্রমিকদের দুর দুরান্ত থেকে কাজে যোগদানে পরিবহনের ব্যবস্থা না করে তাদের বিপুল পরিমান যাতায়ত ব্যয় নির্বাহ ও অবর্নণীয় দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দেয়া হয়েছিল যা অমানবিক এবং বিবেক বর্জিত ঘটনা। অথচ স্বাস্থ্যমন্ত্রি এই পরিস্থিতি তৈরীতে তাদের যে দায়ভার তার অনুতাপ না করে উল্টো এর দায়ভার সাধারণ মানুষ ও কর্মে ফিরতে মরিয়া অসহায় শ্রমিকদের উপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন।
সাংবাদিক বন্ধুগণ,২০২০ সালের মার্চে দেশে কভিড-১৯ তথা করোনা ভাইরাস সংক্রমন দ্রুত বিস্তর করার সময়েও সরকার দফায় দফায় লকডাউন দিয়েছিল। সেই দিনও লক্ষ্য ছিল জনগনকে সংগনিরোধে রেখে করোনা সংক্রমন ঠেকানো, বাস্তবে তা হয়নি। সেদিনও প্রথমে গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেয়া পরে ঈদ বনিজ্যের জন্য মার্কেট ও দোকানপাট খুলে দেয়ার কারনে স্বাস্থ্যবিধির বাধ্যবাধকতা রাখা যায়নি। আসলে পরিপুর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনগনকে সচেতন ও নিয়ন্ত্রন করা যায়নি। জনগনের মধ্যেও এনিয়ে এক ধরনের বেপোরোয়া মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে। ফলে সে সময়ে সামাজিক ও ব্যক্তি দুরত্ব বজায় রাখার পরিবর্তে সামাজিক সংক্রমন বৃদ্ধির ঝুকি বেড়েছিল।বর্তমান বৈশ্বিক মহামারির কারনে যেখানে সৌদি আরব,আরব আমিরাত সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ মসজিদ ও ময়দানে ঈদের জামাত বা হজ্বে পালনে বিধি নিষেধ আরোপ এমন কি কারফিউ পর্যন্ত ঘোষনা করেছে, সেখানে বাংলাদেশে এই শিথিলতা কাদের প্রয়োজনে তা বোধগম্য নয়। দেশে এখন করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সংক্রমনের তীব্রতা চলছে। করোনা সনাক্তের পরিক্ষা যত বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর। প্রতিদিন গড়ে পনের হাজারের মত করোনা রোগী সনাক্ত হচ্ছে এবং গড়ে দুই শতাধিকের উপর মানুষের মৃত্যু ঘটছে। হাসপাতালগুলো রোগীর আধিক্ষে শয্যা সংকটে; আইসিউ ও অক্সিজেনের অভাবে নিরুপায় মৃত্যু ঘটছে। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই পুর্ব অনুমিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহালদশা হবে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, করোনা সংক্রমন রোধে এই মুহুর্তে ভ্যাকসিনই হচ্ছে প্রধান বিকল্প। শুরু থেকেই করোনা প্রতিরোধে জনগনের সকল অংশকে ভ্যাকসিন প্রদান করার এবং মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ অন্য অন্যুসঙ্গগুলো প্রতিপালন একই সঙ্গে জরুরী বলে আমরা বলে আসছি। এজন্য সরকারের প্রতি ভ্যাকসিন কর্মসুচির একটি রোডম্যাপ দাবী করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশ প্রথমেই ভ্যাকসিন এনে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারলেও দীর্ঘসময়ে তা অনিশ্চিয়তায় পড়েছিল। সে সময়ে ভ্যাকসিন সংগ্রহে একটি উৎসে নির্ভরতা, একক ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন আনায় বাধা প্রদান এবং ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি ও কুটনীতি সরকারের প্রাথমিক সাফল্যকে ম্লান করে দেয়নি কেবল, জনগনের জীবন ও জীবিকাকেও ঝুঁকিতে ফেলেছিল। সীমান্ত জেলাগুলোতে যেখানে বহু আগেই লকডাউন প্রয়োজন ছিল, সেখানে তা না করায় সংক্রমন বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রির নির্দেশ থাকার পরও এখনও অর্ধেকের বেশী জেলায় ‘আইসিউ’র কোন ব্যবস্থা নেই। সরকার এখন প্রতি মাসে এককোটি টিকা দানের কর্মসুচি ঘোষনা করেছে। এ জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাই। ঘোষিত টিকাদান কর্মসুচি যাতে ব্যহত না হয় এবং মানুষ যাতে সহজ প্রক্রিয়ায় টিকা নিতে পারে তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সক্রিয় কর্মউদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, কভিড-১৯ একটি প্রবল সামাজিক সংক্রামক ব্যধি। তাই আমরা প্রথম থেকে করোনা মহামারিপ্রতিরোধে সমাজের সকল অংশ সম্পৃক্ত করার আহবান জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম ‘লকডাউন’ সফল করতে হলে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক শক্তি, সামাজিক শক্তিসহ সমাজের অপরাপর অংশকে যুক্ত করা প্রয়োন। প্রশাসনিক হুকুমদারিতে তা চলে না। আমরা লক্ষ্য করেছি, করোনা মোকাবেলায় সরকার শুরু থেকেই রাজনৈতিক, সামাজিক ও জনপ্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে আমলাতন্ত্রের উপর নির্ভর করে প্রশাসনিক হুকুম দারিতে করোনা থেকে উদ্ধার পাওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ, সমন্বয়হীনতা ও সর্বোপরি অব্যবস্থাপনা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশেষ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আবারো উল্লেখ করতে চাই, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তির সংশ্লিষ্টতা ও অংশগ্রহণেই করোনা জাতীয় দুর্যোগের মোকাবিলা করা উচিত। করোনা প্রতিরোধে সামাজিক উদ্দোগকে সম্পৃক্ত করতে হলে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের বিকল্প নাই। দুর্ভাগ্যক্রমে এবার তার প্রচন্ড অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি যাদের সাথে মানুষের সম্পর্ক রয়েছে, তাদের নিয়ে সচেতেনতা, প্রনোদনা সহায়তা বা স্বাস্থ্যবিধি পালনের বাধ্যবাধকতা কর্মসুচি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিলে ফলপ্রসু হতো। কিন্তু আমরা পুর্বাপর লক্ষ করে আসছি সরকার এইক্ষেত্রে সম্পুর্নই আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে এসেছে। করোনা মোকাবেলায় জনসম্পৃক্ততার অভাব অনুভুত হয়েছে। প্রশাসনিক আমলাতান্ত্রিক হুকুমদারীর কারণেই এবারের দুর্যোগকালে এত অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হলো। এখন অবশ্য সরকারের তরফ থেকে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সামাজিক প্রতিরোধের কথা বলা হচ্ছে যা দ্রুত করা দরকার।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা বলতে চাই, দেশে বিরাজনীতিকরণের একটি হীন কারবার চলছে। বিরাজনীতিকরণের নীতিহীন এই প্রক্রিয়ার সাথে দেশের গণমাধ্যমের ভুমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। এর উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই, করোনা প্রতিরোধে নিজেদের সামর্থ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসুচি পালন করে আসছে। তার সংবাদ গণমাধ্যম গুলোতে প্রকাশ হয় না। অথচ কোন একটি ব্যক্তি উদ্যোগ বা কোন প্রতিষ্ঠানের সহায়তার সংবাদ ফলাও করে প্রকাশ করা এখন নিয়মিত বৈশিষ্টে পরিনত হয়েছে। অথচ এ বছরও ধনী হওয়ার তালিকায় বাংলাদেশ পৃথিবীর শীর্ষে। কিন্তু করোনাকালে তাদের কি অবদান আছে? রাজনৈতিক দলের কর্মসুচি প্রকাশে সংবাদ মাধ্যমের এই অনিহা আমাদের ভাবিত করে। আমরা বলতে চাই করোনা প্রতিরোধে রাজনৈতিক দলের কর্মসুচির সংবাদ প্রকাশ সংবাদ মাধ্যমের নীতিমালার বাইরে নয়। আমরা আশা করি গণমাধ্যম তার নীতিমালার ভিত্তিতেই করোনার এই কালে রাজনৈতিক দলের প্রচেষ্টাগুলো জনগনের কাছে তুলে ধরবেন।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, বছরের শুরুতেই আমাদের তরফ থেকে, করোনা সংক্রমনে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে বিপর্যয় সৃষ্টিহয়েছে তা থেকে উদ্ধার পেতে জরুরী ভিত্তিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় এনেশিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহবান জানিয়েছিলাম। একই সঙ্গে অতিমারির প্রভাবে বিধ্বস্থ্য দরীদ্র ও শ্রমজীবীদের জন্য খাদ্য সহাতা প্রদান, ভ্যাকসিন প্রাপ্তি সহজিকরণ, ছয়মাস পর্যন্ত
মাসে পাঁচ হাজার টাকা নগদ সহায়তা প্রদান ও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সার্বজনীন পেনশন চালুর দাবী করেছিলাম। আমরা মনে করি এই সংকট কালে জীবন বাঁচাতে উল্লেখিতসহায়তা বা প্রনোদনা সাধারণ মানুষের পাওয়ার অধিকার রাখে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, করোনা মোকাবেলা এবং জনগনের জীবন ও জিবিকা রক্ষায় তাদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১৮দফা যে নির্দেশনা কর্মসুচি গ্রহন করেছে। তার ভিত্তিতে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন নামে ‘সেচ্ছাসেবক ব্রিগেড’ গঠন করে পার্টি স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ‘সেচ্ছাসেবক ব্রিগেড’ গুলোর মধ্যে রাজশাহীতে ‘শহিদ জামিল ব্রিগেড, ঢাকা মহানগরে ‘শহিদ রাসেল ব্রিগেড’ সাতক্ষীরায় শহিদ রিমু ব্রিগেড, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে ‘শহিদ জামিল ব্রিগেড’ যশোহরে ‘মৈত্রী ব্রিগেড’ খুলনায় ‘ করোনা প্রতিরোধ ব্রিগেড’, নারায়নগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেটে রেড ব্রিগেড,,নড়াইলে কমরেড অমল সেন ব্রিগেড, ,নীল ফামারিতে ‘কমরেড ত¤œারায়ন ব্রিগেড,’ রংপুরে ‘কমরেড অসিৎ ভট্টাচায্য ব্রিগেড’ দিনাজপুরে হাজি দানেস ব্রিগেড’ বগুড়ায় ‘কমরেড আব্দুর রাজ্জাক ব্রিগেড’ বাহ্মণবাড়িয়ায় ‘ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান ব্রিগেড’ শেরপুর জেলায় ‘কমরেড আবুল বাশার ব্রিগেড’ বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় ব্রিগেড কাজ করছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী,ফেনী, লক্ষিপুর, গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায় ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মীরা করোনা প্রতিরোধ সচেতেনতা মুলক প্রচার ও মাক্স বিতরণ কর্মসুচি পালন করছে। ব্রিগেডের কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতিমধ্যে জেলাগুলোতে দশ লক্ষাধিক সচেতনতামুলক প্রচার পত্র বিলি, দুই লক্ষ ‘মাস্ক’, দশ হাজার হাত ধোয়ার সাবান বিলি করা হয়েছে। রাজশাহী, নীলফামারী ও ব্হ্মাণবাড়িয়ায় করোনা রোগীদের সিলিন্ডার অক্সিজেন সরবরাহ করা। রাজশাহীতে ‘জামিলব্রিগেড করোনা রোগীদের গ্রাম পর্যায়ে আনা নেয়ার জন্য বিনামুল্যে এ্যম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করেছে। বরিশাল ও যশোহরের ব্রিগেড কর্মহীন দরীদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসুচি চালু করেছে।আমরা সরকারের নিকট আহবান জানাই করোনা প্রতিরোধে নিয়োজিত সেচ্ছাসেবকদের কর্মসুচি চালাতে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত ভ্যাকসিন প্রদান এবং জনগনকে বিনামূল্যে মাক্স বিতরনের জন্য এ সকল ব্রিগেডকে মাক্স সরবরাহ করার।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, করোনা ভাইরাসের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অভিঘাত আগামী দিনগুলোতেও বহাল থাকবে। তাই জীবনকে রক্ষা করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে সেই ধরনের পরিকল্পনা প্রয়োজন। আবারো যে কথা বলা প্রয়োজন তাহলো, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সংশ্লিষ্টতা ও অংশগ্রহণেই করোনা মহামারী ও সকল জাতীয় দুর্যোগের মোকাবিলা করা সম্ভব। দুর্ভাগ্যক্রমে এবার তার প্রচন্ড অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। রাজনৈতিক দল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লে গণতন্ত্রও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনাদের মাধ্যমে সকল গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আমরা আবারো আহবান জানাতে চাই, আসুন সামাজিক সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে করোনা অতিমারিকে রুখে দাঁড়াই। ধৈর্যের সাথে আমাদের বক্তব্য শোনার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews