নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: আর মাত্র কয়েক দিন পরই পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। ঈদকে সামনে রেখে তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কামারপাড়ার শিল্পীরা।
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে যতদিন গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে কামারদের কর্মব্যস্ততা। উপজেলার এই কামারশালার দোকানগুলোতে সারা দিন রাত টুং-টাং শব্দ বিরাজ করছে। গরু-ছাগল কাটার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মেরামত কিংবা নতুন করে তৈরী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আত্রাই উপজেলা সদরসহ ভবানীপুর-মির্জাপুর বাজার, শাহাগোলা, বজ্রপুর, বান্ধাইখাড়া, নওদুলিসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কামারপাড়া।
ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই কামার পরিবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। তারা রাতদিন তৈরী করছে হরেক-রকমের দা, ছুরিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত কামার পরিবার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর-মির্জাপুর বাজারের কামারপল্লী ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি কামারের দোকানেই ব্যস্ততা তারা কেউ বা লোহা আগুনে লাল বর্ণ করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাতিয়ার তৈরির উপযোগী করছেন। কেউবা পশু জবাই করার ছুরি ধার করছেন। একটি হাতিয়ার তৈরি করতে লোহা অনুযায়ী দাম নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের পছন্দের মতো তৈরি করেন বিভিন্ন মাপের পশু কোরবানির চাপাতি, দা, বটি, ছুরি, কুড়াল আর ছোট চাকুর মতো লোহার সব ধারালো অস্ত্র। এগুলো সবই ব্যবহার হবে কোরবানীর পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস ছাড়ানো আর হাড় কাটার কাজে। কেউ কেউ আবার গতবারের পুরাতন ছুরি ধার করিয়ে নিচ্ছেন নতুনভাবে কোরবানি করার জন্য। অনেকেই আবার এগুলো মেরামত করার জন্য কামারের বাড়িতে নিয়ে এসেছে।
উপজেলার ভবানীপুর বাজারের সূর্য কর্মকার জানান, অন্যান্য বারের তুলনা এ বার নতুন দা-বটি তৈরীর অর্ডার বেড়েছে। আর পুরাতন গুলো মেরামত হচ্ছে পরিমানে বেশি। বিশেষ করে কোরবানীর ঈদ এলে এসব দা-বটিসহ অন্যান্য উপকরণের কদর বেড়ে যায়। চলতি মৌসুমে কয়লার অভাবে কাজ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এখন কয়লা পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়লা পাওয়া গেলেও দাম চড়া। কালের বিবর্তনে কয়লা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন গ্রামে এলপি গ্যাস ও বন্ধু চুলা দিয়ে রান্না করা হচ্ছে। কামারপট্টিতে আসা যাওয়া করলে শব্দ থাকায় যায় না। দিন-রাত পোড়া কয়লার গন্ধ, হাঁপড়ের হাঁস-ফাঁস আর হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরী হচ্ছে গ্রাম বাংলার চকচকে ধারালো দা-চাপাতি, ছুরি, বটিসহ গোস্ত কাটার উপকরণ।
এ বিষয়ে কার্তিক কর্মকার জানান, কয়লা, লোহাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে নতুন দা-বটিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদ্রির দামও বেড়ে গেছে। বছরের মধ্যে ১১ মাসই কামার পরিবারদের বসে থাকতে হয়। শুধু কোরবানীর ঈদ এলেই তাদের ব্যস্ততা পুরোদমে বেড়ে যায়। এসময়ে কিছুটা আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনেক কামার বাড়ি বাড়ি গিয়ে দা-বটি-ছড়ি মেরামত করে থাকে।
দোকানে আসা ক্রেতা মো. অমর ফারুক জানান, গরু জবাই করার জন্য বড় একটি ছুরি তৈরীর করার অর্ডার দিয়েছি। তার দাম হলো একহাজার পাঁচশত টাকা। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার কোরবানী দেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
কোরবানির সরঞ্জাম কিনতে আসা আশরাফুল আলম বলেন, এবার কোরবানির গরু একটু আগেভাগেই কিনেছি। কোরবানির জন্য প্রয়োজন চাকু ও ছুরি। সে কারণে বাজাওে এসেছি দা, বটি ও ছুরি কিনতে। #
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply