শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলার নেপথ্য – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কমলগঞ্জের শমশেরনগরে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দিনভর যানজট কুলাউড়ায় অবৈধভাবে বেঁড়িবাধ কাটার সময় মাটি চাপায় দিনমজুর নিহত আত্রাইয়ের শুঁটকিপল্লীতে  উৎপাদনে ভাটা  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শাহবাগ ব্লকেড শান্তিরক্ষা মিশন সুদানে নিহত ও আহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের পরিচয় প্রকাশ বড়লেখায় শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে আলোচনা ও দোয়া কুড়িগ্রামে বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ভুয়া ভর্তি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ কমলগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ার কর্মধায় ২য় বারের মতো ট্রাস্ট মেধাবৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণ করবে বেতন কমিশন

শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলার নেপথ্য

  • শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

Manual3 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক:সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় হেফাজত নয় এবার বেরিয়ে আসছে নেপথ্যে থাকা অনেক অজানা তথ্য।

দেশ বিদেশে থাকা অসংখ্য নেটিজেনাদের ধারণা জলমহাল বিরোধ কান্ডে কথিত হিন্দু যুবকের ফেসবুক ষ্ট্যাাটাস ও হেফাজতকে ইস্যু কিংবা অজুহাত তৈরী হিন্দু গ্রামে তান্ডব ঘটিয়ে ধর্মীয় অনুসারীদের বিরুদ্ধে দেশ বিদেশে গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টা করেছেন প্রগতিশীল অতি চেতনাধারী নামে কোন কোন কু-চক্রি মহল। ,

সরজমিনে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে ওই উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর মুখেই বেড়িয়ে আসে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে মামুনুল হকবিরোধী ফেসবুক স্ট্যাটাসের কোনো সম্পর্ক নেই বরং জলমহাল নিয়ে পূর্ববিরোধের জের ধরে ঝুমন দাশ আপনের আপত্তিকর ফেসবুক স্ট্যাটাসকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেই এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী অসীম চক্রবর্তী ও দীপক দাস জানান, হামলার মূল নেতৃত্বে ছিলেন দিরাই উপজেলার নাচনী গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য সরমঙ্গল ইউনিয়ন যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ও একই গ্রামের পক্কন মিয়া।

তারা জানান, স্বাধীন মেম্বার ও পক্কন মিয়ার নেতৃত্বে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তারা লোকজনকে সংগঠিত করে গ্রামে তাণ্ডব চালায়।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাচনী গ্রামের স্বাধীন মেম্বার স্থানীয় বরাম হাওরের কুচাখাই বিলের ইজারাদার। জলমহাল নিয়ে স্বাধীনের সঙ্গে কিছুদিন ধরে ফেসবুকে কটূক্তির দায়ে গ্রেফতারকৃত যুবক ঝুমন দাশসহ নোয়াগাঁওয়ের কিছু লোকের বিরোধ চলছিল।

জলমহালে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ ও জলমহালের পানি শুকানোর ফলে চাষাবাদে সেচের পানির সংকটের ব্যাপারে নোয়াগাঁওয়ের হরিপদ দাশ ও মুক্তিযোদ্ধা জগদীশ দন্দ্র দাস শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্বাধীন মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি সরেজমিন কুচাখাই বিলে গিয়ে অবৈধ শ্যালোমেশিনসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করে জলমহালের পানি ছেড়ে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন।

এ সময় বাঁধ কাটার কাজ করেন নোয়াগাঁও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা অকিল চন্দ্র দাসের ছেলে অমর চন্দ্র দাস ও পানি ছেড়ে দেয়ার দৃশ্য ফেসবুকে প্রচার করেন একই গ্রামের ঝুমন দাশ।

Manual5 Ad Code

এ ঘটনায় স্বাধীন মেম্বার নোয়াগাঁও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ঝুমন দাসের এ ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে হেফাজতের অনুসারী ও তার নিজস্ব লোকদের দিয়ে বুধবার নোয়াগাঁও গ্রামে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেন গ্রামের অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।

ভুক্তভোগীদের দাবি, মামুনুল হকের অনুসারীদের উসকে দিয়ে নিজের শরীরের ঝাল মেটাতে হিন্দুদের বাড়িতে তান্ডব চালান স্বাধীন ও তার অনুসারীরা।

Manual8 Ad Code

নোয়াগাঁও গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত শৈলেন চন্দ্র দাশ বলেন, স্বাধীন ও পক্কনের নেতৃত্বে আমাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। তারা আমার ঘরের টাকা-পয়সা ও অলঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে। স্বাধীনের সঙ্গে আমাদের গ্রামবাসীর ঝামেলা চলে আসছিল। সে বরাম হাওরের কুচাখাই বিল সেচতে চায়, আর আমরা গ্রামবাসী বাধা দেই। বিল সেচার কারণে জমিতে পানি দেয়া যায় না। পানির অভাবে জমি ও ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা ইউএনও সাহেবের কাজে অভিযোগ করেছি। অভিযোগকারী ছিলেন আমার কাকা হরিপদ দাশ। এ কারণেই হরিপদ বাবুর আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘর বেশি ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধা অকিল চন্দ্র দাশ বলেন, আমি ঘরে ছিলাম। আমার ঘরের দরজা ভেঙে সব কিছু তছনছ করে টাকা-পয়সা ও মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেটসহ অনেক কিছু নিয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা বলার পরও তারা আমারে রেহাই দেয়নি। হামলা করেছে শত শত মানুষ। আমি শুধু পক্কন মিয়া ও স্বাধীন মেম্বারকে চিনতে পেরেছি। স্বাধীন মিয়ার সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল। ওসি ও ইউএনও সাহেব যখন বাঁধভাঙার অনুমতি দিলেন তখন আমার ছেলে অমর চন্দ্র দাশ বাঁধ কাটে। এ কারণেই সে আমার ঘরে বেশি ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় স্বাধীন মেম্বারের বিচারের দাবি করেন তিনি।

এদিকে নোয়াগাঁও মাঠে এ ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত নাটেরগুরু স্বাধীনসহ সব অপরাধীর গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

Manual3 Ad Code

ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ২২ জনকে গ্রেফতার করলেও নাটেরগুরু স্বাধীন মেম্বার ও পক্কন মিয়া অধরা থাকায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ ও শঙ্কা বিরাজ করছে। তবে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবাইকে আশ্বস্থ করে বলেন, স্বাধীন ও তার পেছনে যারা জড়িত আছে সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। কেউ রেহাই পাবে না।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলাম স্বাধীন গণমাধ্যম্যকে বলেন, আমি হামলার সঙ্গে জড়িত নই। নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর সঙ্গে জলমহাল নিয়ে আমার বিরোধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার শাল্লা থানায় বসা হয়েছে। সেই আক্রোশ থেকেই তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার নাম বলছে।

Manual4 Ad Code

শুক্রবার নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ক্ষতিগ্রস্থদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ (পিপিএম), জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত আলোচিত স্বাধীন মেম্বারসহ সবাইকে দ্রত সময়ে আইনের আওতায় আনা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!