সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের বরাবরে আবেদন-
এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার ডলুছড়া ও বেলকুমা খাসিয়াপুঞ্জির ভূমি রক্ষার জন্য সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পুঞ্জিবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। গত ০৩ অক্টোবর এই লিখিত আবেদন সরাসরি বিভাগীয় কমিশনারের কাছে জমা দেন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রতœতত্ত্ব সংগ্রাহক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, কুলাউড়া ধর্মপল্লীর ফাদার যোসেফ গোমেজ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুদীপ্ত অর্জুন।
লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বনবিভাগ ও সামাজিক বনায়নের তথাকথিত উপকারভোগীসহ ডলুছড়া খাসিয়া পুঞ্জির ভূমিতে যাবেন এবং জোরপূর্বক গাছ রোপণ করবেন। সামাজিক বনায়নের নামে বনবিভাগের একটি ত্রুটিপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রশাসনের এমন তৎপরতা প্রশ্নের উদ্রেক করে।
আরও উল্লেখ করা হয়, খাসিয়া জনগণ যুগ যুগ ধরে তাদের প্রথাগত ও ঐতিহ্যগত ভূমিতে বসবাস করে আসছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সনদ আদিবাসীদের এই প্রথাগত ভূমি মালিকানার সংস্কৃতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশন নং ১০৭ যা আদিবাসী ও ট্রাইবাল জনগণের জন্য নিবেদিত অনুসমর্থন করেছেন, যেখানে আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ভূমি অধিকার স্বীকৃত। বিভাগীয় কমিশনার বরাবর দেয়া এই আবেদনে বনবিভাগ সামাজিক বনায়নের নীতিমালা উপেক্ষা করে, খাসিয়াদের সাথে কোনো আলোচনা না করে উপকারভোগীর একতরফাভাবে তালিকা করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ডলুছড়া, বেলকুমা ও তৎসংলগ্ন অন্যান্য পুঞ্জির নিরীহ খাসিয়াদের উপর আক্রমনের ঘটনায় ইতিমধ্যে নাগরিকদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। নাগরিকেরা এমতাবস্থায় ডলুছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খাসিয়াদের উপর আদিবাসী অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করা ও প্রাকৃতিক বন ধংস করে সামাজিক বনায়নের প্রকল্প গ্রহণ না করতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, আমরা এখনও এই আবেদন প্রসঙ্গে কোন নির্দেশনা পাইনি। সামাজিক বনায়ন সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। খাসিয়াদের অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা। সামাজিক বনায়ন নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ৭ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে খাসিয়াদের প্রতিনিধি ও উপকারভোগীদের প্রতিনিধি রয়েছে। কমিটির সবার উপস্থিতিতে আমার অফিসে সমান সংখ্যক অর্থাৎ ১৫ জন করে উভয়পক্ষে উপকারভোগী নির্ধারণ করা হয়। তবে খাসিয়াদের মামলাধীন কোন বিষয়ে আমরা হস্তক্ষেপ করবো না।#
Leave a Reply