এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের পূর্ব সিঙ্গুর গ্রামে এলাকাবাসী ও স্থানীয় কৃষকদের দীর্ঘদিনের চলাচলের সরকারি রাস্তা (বিপি সম্পত্তি) দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন একই এলাকার পারুল বেগম নামের এক মহিলা। গ্রামবাসী প্রাচীর নির্মাণে বাধা দেওয়ায় তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিকার চেয়ে এলাকার প্রায় ২৫ জন লোক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দেয়া হয়েছে। যার অনুলিপি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরমচাল ইউনিয়নের পূর্ব সিঙ্গুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী পারুল বেগম সরকারি (বিপি সম্পত্তি) ওপর বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়িটি সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হলেও বাড়ির উত্তরপাশের্^ সরকারি ম্যাপ অনুযায়ী প্রায় ১৫-২০ ফুট রাস্তা জোরপূর্বক দখলে নিয়ে রাস্তার একপাশে সীমানা প্রাচীর কাজ শুরু করেন। ওই রাস্তা দিয়ে এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকসহ স্থানীয় সহ¯্রাধিক কৃষক হাকালুকি হাওরে কৃষিকাজের জন্য যাতায়াত করেন। এর আগে ২০১৫ সালে ওই মহিলা একই রাস্তা ঘেষে তাঁর দোকানের একটি সিঁড়ি নির্মাণ করেন। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন সিঁড়ি নির্মাণের সত্যতা পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ওই সিঁড়ি ভেঙ্গে দেন।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন, আব্দুল মতিন, শফিক উদ্দিন, আব্দুর রব, রেজাউল ইসলাম, আব্দুল রুপ, আলাউদ্দিন, মাছুম আহমদ, নজরুল ইসলামসহ ২০ জন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি রাস্তায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার জন্য বাঁধা প্রদান করলে ওই মহিলা তাঁর এক আত্মীয় পরিচয়ে রাসেল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি র্যাবে চাকরী করেন বলে এলাকার লোকদের হুমকি প্রদান করেন। সেই প্রভাব খাটিয়ে মহিলা দাপট দেখিয়ে সরকারি জায়গায় প্রাচীর নির্মাণ করতেছেন। আমরা উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। স্থানীয় তহশিলদার এসে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন। কিন্তু সোমবার সকালে আবার কাজ শুরু করা জন্য দুই গাড়ি ইট এনে রেখেছেন ওই মহিলা।
এ বিষয়ে রাসেল আহমেদ বলেন, পারুল বেগম আমার সম্পর্কে চাচী। উনি প্রাচীর নির্মাণ করার সময় স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি এসিল্যান্ড মহোদয়ের সাথে আলাপ করেছি। বিরোধপূর্ণ জায়গার তিনটি দাগের দুটি দাগ প্রিন্ট ফর্সায় আসেনি। এজন্য কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত মহিলা পারুল বেগম প্রাচীর নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় সার্ভেয়ার দিয়ে জরিপ করে আমি প্রাচীরের কাজ শুরু করি। প্রাচীর নির্মানের সময় স্থানীয় কয়েকজন লোক বাঁধা দেন। সরকারি তহশিলদার কাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল মোল্লা বলেন, রাস্তা দখল করে সরকারি জায়গার ওপর প্রাচীর নির্মাণের বিষয়টি জেনেছি। প্রাচীরের কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। তারপরও যদি ওই মহিলা কাজ বন্ধ না করেন তাহলে জনস্বার্থে রাস্তাটি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদারকে পাঠিয়েছি কাজ বন্ধ রাখতে। জনস্বার্থে বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখবো।
Leave a Reply