এইবেলা, কুলাউড়া :: ভারতীয় নাগরিক রোহিদাস সরকার (১৮) মায়ের সঙ্গে অভিমান করে বেরিয়ে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে তাকে আটক করে বিজিবি। পরে আদালত তাকে ৩ মাস ২০ দিন কারাদন্ড দেন। কিন্তু এ রায় ঘোষণার আগেই সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারপরও ১৫ মাস ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন রোহিদাস। ফিরতে পারছেন না নিজ দেশে স্বজনদের কাছে।
কারাগারে আটক রোহিদাস সরকার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাসহর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের দুলাল সরকার ও প্রমীলা সরকার দম্পতির ছেলে।
আদালতের সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩ জুন কুলাউড়ার কর্মধা সীমান্ত এলাকায় বিজিবির হাতে আটক হন রোহিদাস সরকার। এ ব্যাপারে বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আদালতের নির্দেশনায় রোহিদাসকে মৌলভীবাজারের কারাগারে পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আদালত তাকে ৩ মাস ২০ দিনের সাজার রায় দেন। তবে এর আগেই সাজার মেয়াদ পার হয়ে যায়।
এদিকে কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দক্ষিণ টাট্রিউলি গ্রামের বাসিন্দা মৌলভীবাজার আদালতের এক আইনজীবীর সহকারী আজাদ মিয়া (২০) দুই মাস আগে তার আইনজীবীর এক মক্কেলের মাধ্যমে রোহিদাস সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি রোহিদাস সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তিনি নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রোহিদাসের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ছুটে যান ভারতেও।
রোহিদাসের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আজাদ মিয়া ৫ ডিসেম্বর ভারতে যান।রোহিদাস দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে বাবুর্চির কাজ করে সংসার চালান। মা গৃহিণী। ছোট ভাই অর্জুন সরকার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে বেশ আগে। রোহিদাস অষ্টম শ্রেণির বেশি লেখাপড়া করেননি। বাবার কাজে সহযোগিতা করতেন।
স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে আজাদ মিয়া জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে রোহিদাস মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে মামার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এরপর আর ফেরেননি। পরে বিভিন্ন সূত্রে স্বজনেরা বাংলাদেশে তাঁর আটক হওয়ার খবর পান। তাকে নিয়ে স্বজনেরা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। তারা সন্তানকে ফিরে পেতে চান।
আজাদ মিয়া আরও জানান, রোহিদাসের বিষয়ে তিনি মৌলভীবাজারের কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অবহিত। রোহিদাসের সব কাগজ নিয়ে সিলেটে সহকারী ভারতীয় হাইকমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে সহকারী হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলে রোহিদাসের মুক্তির ব্যাপারে চেষ্টা চালাবেন।
রোহিদাসকে নিয়ে আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে আজাদ মিয়া বলেন, ‘উনি (রোহিদাস) আমার কোনো আত্মীয় নন। আগে থেকে চিনতামও না। মানুষ তো মানুষের জন্যই। যখন ওনার কথা শুনেছি, তখন থেকেই কিছু করার কথা মাথায় আসে। এর পর থেকে চেষ্টা শুরু করি। রোহিদাস স্বজনদের কাছে ফিরলেই চেষ্টা সফল মনে করব।’
মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার তানিয়া ফারজানা মুঠোফোনে বলেন, ভারতীয় নাগরিক রোহিদাস সরকারের সাজার মেয়াদ পার হওয়ার পর তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিজিবির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়। সেখান থেকে ভারতীয় হাইকমিশনের অনুমতি নিতে বলা হয়। এরপর গত ২৯ নভেম্বর তারা লিখিতভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। কর্তৃপক্ষ ভারতীয় হাইকমিশনে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু হাইকমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply