এইবেলা, কুলাউড়া ::: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়নে আলোচিত রেখা বেগম (২০) কে হত্যার অভিযোগে তার সাবেক স্বামী রিয়াজ উদ্দিন (২২) কে ঢাকা থেকে ৩০ মার্চ শনিবার রাতে গ্রেফতার করে কুলাউড়া থানা পুলিশ। ৩১ মার্চ রোববার আদালতে সোপর্দ করা হয়। পুলিশের কাছে ও আদালতে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে ঘাতক রিয়াজ।
পুলিশ জানায়, নিহত রেখা বেগম ও তার ঘাতক স্বামী রিয়াজ উদ্দিন দু’জনেই ছিলো টিকটকার। টিকটকার থেকে তাদের পছন্দেই বিয়ে হয়। উভয় পরিবার তখন মেনে নিলেও রিয়াজ উদ্দিনের পরিবার বিষয়টি সহজে মেনে নেয়নি। ফলে বিয়ের কিছুদিন পর পারিবারিক চাপে রেখাকে তালাক দেয় রিয়াজ। কিন্তু তাদের উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো বিদ্যমান। অন্য ছেলের সাথে রেখা একটু খোলামেলা টিকটক করায় ক্ষিপ্ত হয় রিয়াজ উদ্দিন। বুধবার ২৭ মার্চ রেখা ও রিয়াজ একসাথে টিকটক করার এক পর্যায়ে অন্য ছেলের সাথে খোলামেলা টিকটক করার বিষয় নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে রিয়াজ রেখার গলা টিপে ধরে। রেখা এসময় চিৎকার করলে ওড়না দিয়ে তার মুখ পেচিয়ে রাখে। এরকম ঘটনার এক পর্যায়ে রেখা মারা যায়। ভোরে সেই ওড়না দিয়ে সুপারি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। সকালে সে ঢাকায় চলে যায়। ঢাকা থেকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
রিয়াজের টিক নিয়ে আলোচনা-
অবশ্যই আমি প্রতিশোধ নিবো। তবে সেটা ভিন্ন ভাবে … এবং ভয়ঙ্কর রূপে। এমন কথা লিখে টিকটক বানায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা বরমচালে সংঘটিত ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ড স্বামী পরিত্যাক্তা গৃহবধু রেখার সাবকে স্বামী রিয়াজ মিয়া। যা নিয়ে এলাকায় চলছে তোলপাড়। ফলে রেখা হত্যাকান্ডের সাথে তার বিচ্ছেদ হওয়া স্বামী রিয়াজ মিয়ার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত। তবে একা এতো ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ড সংঘটিত করা সম্ভব নয়। নিশ্চয় এর সাথে আরও লোকজন জড়িত। তবে ঘটনার পর থেকে রিয়াজ মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন ঘরে তালা দিয়ে নিরুদ্দেশ রয়েছে। তবে পুলিশ বলছে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে রিয়াজকে গ্রেফতার করবে।
বরমচাল ইউনিয়নের পশ্চিম সিংগুর (নয়া বাগান) এলাকার লোকজন জানান, এই রিয়াজ সত্যি একজন ভয়ঙ্কর মানুষ। ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সে হাজতবাসও করেছে। রিয়াজ মিয়ার সাথে একবছর আগে বিয়ে হয় একই গ্রামের রেখা বেগমের। ৩ মাস আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। গত বুধবার ২৭ মার্চ দুপুরে রিয়াজ ও রেখাকে একসাথে দেখেন এলাকার লোকজন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর রিয়াজ মুলত ঢাকায় থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিয়াজের ভাইরাল হওয়া টিকটক যে রেখা বেগমকে উদ্দেশ করে তৈরি করেছে এবং তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে তার টিকটকের বাস্তবায়ন হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ডটি ঘটিয়ে সে আবার ঢাকায় ফিরে গেছে বলেও তারা জানান।
নিহত রেখা বেগমের পিতা রুহুল আমিন জানান, বুধবার রেখার সাথে তার আগের স্বামী রিয়াজকে এক সাথে দেখতে পান। ওইদিন থেকে রেখা নিখোঁজ। আমার মেয়েকে রিয়াজ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। হত্যার পর গলায় ওড়না পেচিয়ে জঙ্গলে নিয়ে সুপারি গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। ফাঁসি চাই খুনি রিয়াজের।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রহিম রোববার তাকে আদালতে হাজির করেন। আদালতেও সে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, উভয়ই টিকটকার ছিলো। মনমালিন্যের জের ধরে রিয়াজই হত্যা করেছে রেখাকে। স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার পর কৌশলে সে এলাকা ছেড়ে রাজধানীতে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নে ২৯ মার্চ শুক্রবার রেখা বেগম (২০) নামক এক স্বামী পরিত্যাক্তা গৃহবধুর লাশ সুপারি গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।#
Leave a Reply