এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বড় আকারের একটি ক্রস মেহগনি গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকার সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (১৩ মে) এলাকাবাসীর পক্ষে কয়েকজন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ, ম্যানেজিং কমিটি এবং বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত টিলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের কাজ চলছে। গত ৫ মে দুপুরের দিকে এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে সীমানা প্রাচীরের ভেতর ঘেঁষে থাকা বড় আকারের উঁচু ক্রস বেলজিয়াম গাছ উপড়ে পড়ে। এতে সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশের ক্ষতি হয়। তাছাড়া বিদ্যুৎ লাইনের উপর গাছের ডালাপালা পড়ে গিয়ে এমনকি রাস্তা চলাচলেও মানুষের বিঘ্ন ঘটে। মুঠোফোনে বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্থানীয়রা জানালে তিনি (প্রধান শিক্ষক) কমিটির সভাপতিকে ঘটনাস্থল দেখে আসার অনুরোধ করেন। কমিটির সভাপতি আমির আলী খান সেখানে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন। তিনি শ্রমিকদের মাধ্যমে গাছের ডালপালা কেটে স্তুপ করে রাখতেও প্রধান শিক্ষককে বলেন।
অভিযোগ রয়েছে, কমিটির কাউকে না জানিয়ে প্রধান শিক্ষক পরদিন রাতে (৬ মে) গাছের গোড়ালি, ডালপালাসহ পুরো গাছ টুকরো করিয়ে রাজমিস্ত্রীদের কাছে বিক্রি করেন। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলছেন, ক্রস বেলজিয়াম গাছের বয়স অন্তত ২৫ বছর এবং ৪ ফুট আকারের ওই গাছের উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট হবে। এর বাজারদর ৪০ হাজার টাকা বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর কয়েকজন জানান, “যেহেতু সরকারি গাছ, তাই আমরা প্রধান শিক্ষককে ডালপালা কেটে স্তুপ করে রাখতে অনুরোধ করছিলাম। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি সভার মাধ্যমে প্রশাসনকে অবহিত করে রেজুলেশন আকারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও তিনি কারো কথা রাখেননি। উল্টো বিভিন্ন অজুহাত দেখান তিনি। তাছাড়া তিনি সরজমিন উপস্থিত হয়ে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরে কাজ করা ৩/৪ জন রাজমিস্ত্রীর কাছে গাছের সবগুলি অংশ বিক্রি করেন। শ্রমিকরা রাত প্রায় সাড়ে ৮টার দিকে পিক-আপের মাধ্যমে গাছ নিয়ে যায়”।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেপাল কান্ত ভৌমিক বলেন, “ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ায় কাঁচা বাউন্ডারি ফেটে যায়। তাছাড়া বিদ্যুৎ লাইনের উপর ডালপালা পড়ে গিয়ে এবং রাস্তায় মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় সভাপতি সাহেবকে জানিয়ে গাছ কাটা হয়। তিনি দায়সারাভাবে আরো বলেন, গাছটি তেমন বড় নয়। সম্ভবত এখানে রাজমিস্ত্রীর কাজ করা লোকজন এগুলো নিয়ে গেছে। আমিও বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি কাটা গাছের কোন অংশ সেখানে নেই।”
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির আলী খান বলেন, মূলত ঝড়েই গাছটি উপড়ে পড়ে। বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে ডালপালা কেটে স্তুপ করে রাখতে প্রধান শিক্ষককে বলছিলাম। পরে কি হলো আমি কিছুই জানিনা। আমার সাথে কোন কথা হয়নি। এখন তিনিই (প্রধান শিক্ষক) ভালো বলতে পারবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইফতেখায়ের হোসেন ভূইঁয়া জানান, এলাকাবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ###
Leave a Reply