এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে এমএনএইচ ব্রিক ফিল্ডের মালিকপক্ষ মানিক বর্ধনের কাছে ব্রিকফিল্ড ইজারা প্রদান করেন। এই সুযোগে ইজারাদার মানিক বর্ধন ইট বিক্রির নামে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে জিডিসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন মালিকপক্ষ। আবার প্রতারকের শাস্তি ও পাওনা টাকা উদ্ধারের দাবীতে মানববন্ধন করেছেন ভোক্তভোগীরা।
জানা যায়, উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের হিংগাজিয়া এলাকায় অবস্থিত এম.এন.এইচ ব্রিকস ফিল্ডের স্বত্বাধিকারীরা হলেন মোঃ নজিবুর রহমান, আলী হায়দার ও আহমদুর রহমান। তারা তিনজনই একই এলাকার বাসিন্দা। ২০১৫ সালে অন্যতম স্বত্বাধিকারী নজিবুর রহমান শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের উভয়ের মতে ব্রিক ফিল্ডটি লিজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ব্রিকস ফিল্ডের ম্যানেজার মধ্য হিংগাজিয়া গ্রামের ভূপেন্দ্র বর্ধনের ছেলে মানিক বর্ধন ব্রিক ফিল্ডটি লিজ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এমতাবস্থায় স্বত্বাধিকারীদের পক্ষে মো: নজিবুর রহমান বিগত ২০১৬ সালের ০১ মে মৌলভীবাজার আদালতের অ্যাডভোকেট নিখিল রঞ্জণ দাসের এফিডেভিটের মাধ্যমে (রেজি: নং- ৭০/২০১৬) ৩ বছরের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে চুক্তিবদ্ধে ইজারা দেন। মেয়াদান্তের পর মানিক বর্ধন পূনরায় লিজ নিতে চাইলে ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর হতে আরও ২ বছরের জন্য একই আইনজীবির মাধ্যমে এফিডেভিট (রেজি: নং-১৪৪৯/১৯) ও অঙ্গিকারনামা (রেজি: নং-৬৭৬/২০) করে মানিক বর্ধনকে পুনরায় ইজারা প্রদান করেন। অঙ্গিকারনামায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয় যে, ব্রিকফিল্ড পরিচালনা করতে যত ধরণের লাভ-লোকসান দেনা-পাওনা সম্পূর্ণ দায়বার মানিক বর্ধন নিজ দায়িত্বে বহন করবেন।
এদিকে মালিকপক্ষের অবর্তমানে ইজারাদার মানিক বর্ধন বিভিন্ন মানুষকে ইট দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রিম তুলে নিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে গ্রাহককে ইট বা টাকা দিয়ার-দিচ্ছি বলে টালবাহানা শুরু করেন। গ্রাহকের কাছ থেকে মালিকপক্ষ বিষয়টি জেনে ইটভাটা সমিতির সভাপতি, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানের দ্বারস্থ হন। মালিকপক্ষ, লিজ গ্রহীতা ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকে বসেন ইটভাটা সমিতির সভাপতি। এসময় ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কথা শুনে তাদের টাকা ও ইট ধাপে ধাপে পরিশোধের জন্য মানিক বর্ধনকে কড়া নির্দেশ দেন ইটভাটা সমিতির সভাপতি। এর কিছুদিন পরেই মানিক বর্ধন গা ঢাকা দেন।
এম.এন.এইচ ব্রিকস ফিল্ডের অন্যতম স্বত্বাধিকারী মো: নজিবুর রহমান জানান, ২০১৫ সাল থেকে আমি মেরুদন্ডের চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলাম। ২০১৮ সালে আবার হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় ৪টি রিং লাগানো হয়। এরপর থেকে আমি দীর্ঘদিন বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলাম। এই সুযোগে মানিক বর্ধন গ্রাহকের টাকা দিয়ে না দিয়ে ধাপে ধাপে আমাদের ব্রিক ফিল্ডের ট্রাক্টর, ডিজেল ইঞ্জিন, কারেন্ট মটরসহ যাবতীয় মালামাল বিক্রি করে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে মালিকপক্ষ ও ভুক্তভোগীদের মামলায় মানিক বর্ধন গ্রেফতার হন এবং জেল হাজতে ছিলেন। জামিনে বেরিয়ে আবারও পলাতক হয়ে যাওয়ায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে চিহ্নিত। এই মানিক বর্ধনের কারণে আমাদের ব্রিকস ফিল্ডটি ধ্বংস হয়েছে আর আমরা হয়েছি নি:স্ব। গ্রাহকরা মানিক বর্ধনকে না পেয়ে মনগড়া ও বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে আমাদের ও প্রতিষ্ঠানের মান-সম্মান নষ্টসহ সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মানিক বর্ধনের বাড়ি গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। মানিক বর্ধন পালিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন এ বিষয়টি এলাকার অনেকেই নিশ্চিত করেছেন।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply