এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের এক প্রবাসীর খরিদা জায়গার উপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পাশে সরকারী জায়গা থাকলেও কুচক্রি মহলের ইন্দনে প্রবাসীর প্রায় ৩ শতক জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এবিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ওই প্রবাসীসহ তার ভাইদের ৪মাস থেকে একঘরে করে রাখারও অভিযোগ তুলেছেন কাতার প্রবাসী তাহির আলী। জায়গা ফিরে পেতে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, ভূকশিমইল ইউনিয়নের মহেষগৌরি গ্রামের বাসিন্দা, কাতার প্রবাসী তাহির আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে সরকারী একটি গোপাট (খাল) রয়েছে। পরবর্তীতে এই গোপাটটি রাস্তায় পরিণত হয়। ওই সময় একই গ্রামের নামর আলী গংসহ স্থানীয় কিছু কুচক্রি মহলের যোগসাজসে সরকারী গোপাট দিয়ে রাস্তা তৈরি না করে কাতার প্রবাসীর জমির উপর দিয়ে সিংহভাগ রাস্তাটি করা হয়। তাৎক্ষনিক প্রবাস থেকে তাহির আলী আপত্তি জানালেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। উল্টো সালিশ বৈঠক করে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাহির আলী ও তার ভাইদেরকে পঞ্চায়েত থেকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।
গতকাল শনিবার আয়োজিত এক মানববন্ধনে ভুক্তভোগিরা জানান, ২০০৬ সালে কোরবানপুর মৌজায় এস এ ৫৯৭৭ দাগে ৩ শতক ৩৬ শতাংশ জমি জয়চন্ডী ইউনিয়নের আবু তালিবপুর গ্রামের মো. দেওয়ান খার কাছ থেকে ক্রয় করে একটি টিনসেডের ঘর নির্মাণ করেন তাহির আলী। কিন্তু একই এলাকার নামর আলী, রকিব আলী খান, আজাদ মিয়া, তাজুল ইসলাম ও জয়নাল মিয়া এই জমিটি দখল করতে বিভিন্ন সময় অপচেষ্টা চালায়। এ নিয়ে তাহির আলী ২০২৩ সালের অক্টোবরে নামর আলী গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে ও কুলাউড়া থানায় পৃথক মামলা করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও আমাদের বাধা আপত্তিকে অমান্য করে টিনসেডের ঘর ভেঙ্গে রাস্তাটি সম্প্রসারণ করে ইট বসানো হয়।
প্রবাসী তাহির আলী বলেন, ওই ভূমির পূর্ব পাশের সরকারি গোপাট (খাল) রয়েছে। অথচ সেই জায়গাটুকু নামর আলী গংরা জবরদখলে রেখেছে। আমাদের খরিদকৃত জমি উদ্ধারপূর্বক সরকারী জায়গা চিহ্নিত করে রাস্তা করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। রাস্তাকে কেন্দ্র করে নামর আলী গংরা হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত থেকেও অমানবিকভাবে আমার ভাইসহ ৬ পরিবারকে পৃথক করে দেওয়া হয়। এইসব জটিলতায় পড়ে ছুটিতে আসা তাহির আলী আর প্রবাসে ফিরতে পারেননি। যার ফলে ভিসা, টিকেট বাতিল হয়ে বেশ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন তিনি।
মহেষগৌরি পঞ্চায়েত কমিটির সেক্রেটারী মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, জমি ও রাস্তা নিয়ে জটিলতা থাকায় তাহির আলী গংকে একাধিকবার ডাকলেও তারা পঞ্চায়েতের ডাকে আসেননি। নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তারা না আসায় পঞ্চায়েতের লোকজন তাদের পৃথক করে রাখে। পরে জানতে পারি প্রশাসন রাস্তার উপর নির্মিত ঘরটি উচ্ছেদ করেছে।
ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন, পঞ্চায়েত থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি জানিনা। তবে রাস্তা নিয়ে একটা বিরোধ রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেবো।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, আদালতে মামলা বা নিষেধাজ্ঞার কোন কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। হাকালুকি হাওর ওই গ্রামে যাতায়াতের রাস্তায় তাহির আলী গংরা অবৈধভাবে টিনের ঘর তৈরি করায় জনস্বার্থে আমরা সেই ঘরটি উচ্ছেদ করে রাস্তাটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি।
Leave a Reply