এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার উপজেলায় লক্ষ্ণীপুর চা বাগান নামে একটি বাগান ছিলো। ৯৫ একরের চা বাগানটি এখন অস্থিত্বহীন। ভুমিখেকো ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা গিলে খেয়েছে পুরো বাগানটি।
ভূমি দখলকারীদের কবল থেকে উদ্ধার ও চা শ্রমিকদের পূর্নবাসনের দাবী জানিয়েছেন বাগানের সাবেক চা শ্রমিক ও শ্রমিক পরিবারের শতাধিক সদস্য। প্রতিকার চেয়ে ২৯ নভেম্বর মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন। বিলুপ্তপ্রায় চা বাগানের বসবাস করছে মুসলমান, খৃষ্ট্রান, হিন্দু ধর্মাবলম্বি চা শ্রমিক পরিবারের শতাধিক সদস্য।
আবেদন সুত্রে জানা গেছে, লক্ষ্ণীপুর চা বাগানের জায়গা ৪ ও ৫ নং খতিয়ানভুক্ত জমি। প্রায় ৯৫ একর আয়তন বিশিষ্ট চা বাগানের মালিক ছিলেন পৃথিমপাশার জমিদার। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তের পর্চা বাগানটি ৪নং খতিয়ানভুক্ত এবং লক্ষীœপুর টি গার্ডেন নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। মূলত জেলা প্রশাসক চা বাগানের মালিক হন। কিন্তু ৯৫ একরের চা বাগানটির মধ্যে কমপক্ষে ৪০ একর চা বাগানের জায়গা স্থানীয় কতিপয় ভূমি খেকোচক্র জাল দলিল সৃষ্টি করে সর্বশেষ ভূমি জরিপে তাদের নামে রেকর্ড করে ফেলে। ফলে চা বাগানের বাংলো, কোয়ার্টার, কুলি বস্তি, রাস্তা ইত্যাদি রেকর্ডে থাকলেও কয়েকজন ব্যক্তির দখলে রয়েছে বাগানের ৪০ একর জায়গা।
বাকি জায়গায় এখনও কোন ঘরবাড়ি প্রতিষ্টিত না হলেও কতিপয় ভূমি খেকোচক্র বাগানের খালি পতিত জায়গাগুলিও তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। অথচ বাগান পরিচালনায় যারা অতীতে দায়িত্বরত ছিলেন তাদের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ২৪ শতাংশ জায়গা।
বর্তমানে শ্রমিক পরিবারের শতাধিক সদস্য বাগানের বিলুপ্ত প্রায় চা বাগানের কোয়ার্টারে বসবাস করলেও বাগানের রাস্তা দিয়ে চলাচলে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাগানের সাবেক স্টাফ আমজদ আলীর নানতি রেহানা বেগম।
তিনি জানান, বাগানের জায়গা জবরদখলকারী আকুল মিয়া ও নিরঞ্জন কালোয়ার রাস্তা ব্যবহার করতে হলে মোটা অংকের টাকা দাবী করছেন। টাকা না দেওয়ায় আকুল মিয়া ও নিরঞ্জন কালোয়ার নানা টালবাহানা করে রেহানা বেগমসহ ১৬টি পরিবারের নারী-পুরুষ, শিশু, এবং খৃষ্টান সম্প্রদায় ও হিন্দু ধর্মের শতাধিক নারী পুরুষকে বাগানের জায়গা থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছেন ।
এব্যাপারে লক্ষীœপুর চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সদস্য রেহানা বেগম, চিনু মিয়া, রাবিয়া বেগম, শওকত মিয়া, রজনী কেচুয়া, জষ্টিনা চমগ, এন্ডভেন্ডেল, মমতা বেগম, রহিমা বেগম, প্রদীপ রুরাম জানান, এসএ খতিয়ান ৪ ও ৫, জেএল নং ১০২, অংশ ১,মালিকের নাম বিশেষ আবাদকারী মহাল লক্ষ্ণীপুর টি গার্ডেন, এসএ দাগং ১, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, জমির শ্রেনী চা লায়েক, কুলিবস্তি, রাস্তা, পতিত, চারা, ডোবা রকম প্রায় ৯৫ একর চা বাগানের জমিতে তাদের পূর্বপূরুষ আমজাদ আলী স্টাফ ছিলেন এবং আমজাদ আলীর স্ত্রী বাগানের শ্রমিক ছিলেন। আমজদ আলীসহ আমাদের বাবা, চাচারা এই বাগানে জম্মগ্রহন করে শ্রমিকের কাজ করেছেন। এবং লক্ষিপুর চা বাগান একটি প্রতিষ্টিত চা বাগান ছিল। নব্বইর দশকে কালিটি চা বাগানের সুরুলু কালোয়ার, নিরঞ্জন কালোয়ার, আকুল মিয়া গংরা জাল দলিল সৃষ্টি করে উক্ত চা বাগানের জমি দখল করে এবং পূর্বের রোপিত চা গাছ কর্তন করে আবাদ করেছেন। বাগানের সাবেক এসএ দাগ নং ২৪ এর ১০ শতক এই রাস্তা দিয়ে আমরা যাতায়াত করে আসছি। কিন্তু নিরঞ্জন কালোয়ার ও আকুল মিয়া গংরা আমাদের রাস্তা দিয়ে চলাচলে বাঁধা প্রদান করে। এলাকাবাসী চা বাগানের জায়গা উদ্ধার করে এবং বাগানের জায়গা জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত নিরঞ্জন কালোয়ার জানান, তার পিতা সুরুলু কালোয়ার জমিগুলি ক্রয়সুত্রে মালিক। চলতি সেটেলমেন্ট জরিপে তাদের নামে রেকর্ডভুক্তও আছে। জাল দলিল সৃষ্টি করে বাগানের জায়গা দখলের অভিযোগটি সত্য নয়। তারা জমির বৈধ মালিক।
অপর অভিযুক্ত আকুল মিয়া জানান, আবেদনকারীদের সাথে তার কোন বিরোধ নেই। তিনি তার বৈধ সম্পত্তিতে বসবাস করছেন।
কুলাউড়ার সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন জানান, জায়গাটি যদি সরকারি হয় তাহলে সেটেলমেন্ট যদি কারো নামে রেকর্ড হয়ে থাকে তাহলে তা বাতিল হবে। আমি উভয়পক্ষকে ডেকে কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এব্যাপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইছরাইল হোসেন জানান, আবেদনটি পর্যালোচনা করে এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply