প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্প ০২: গৃহ নির্মাণে কুলাউড়া রোল মডেল প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্প ০২: গৃহ নির্মাণে কুলাউড়া রোল মডেল – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নবীগঞ্জে কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার কুলাউড়া রাস্তা জবর দখলের চেষ্টা : প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৭ বড়লেখায় কনেপক্ষের চাহিত দেনমোহর দিতে রাজি না হওয়ার জেরে ছেলের হাতে পিতা খুন কমলগঞ্জে ভারতীয় মদসহ আটক ২ সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে দূর্ঘটনায় এক নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু বড়লেখায় ৯ মাসের পাকার কাজ ১৩ মাসে ৩ ভাগ! ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতায় চরম ভোগান্তি কমলগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে এক ডাকাত নিহত : আহত ২ : আটক ৩ জন কুলাউড়ায় অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার কুলাউড়ায় এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শতভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৩টি প্রতিষ্ঠান ৩ মাস থেকে ১২ চা বাগানের শ্রমিকদের রেশন-বেতন বন্ধ

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্প ০২: গৃহ নির্মাণে কুলাউড়া রোল মডেল

  • মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

এইবেলা. কুলাউড়া ::

‘আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় কুলাউড়ায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে মোট ২১০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেয়েছেন ঘর। সারাদেশে গৃহ নির্মাণে অনিয়মের খবরে যখন চলছে তোলপাড়, তখন কুলাউড়া উপজেলায় নির্মিত ঘরগুলো যেন রোলমডেল।

গৃহহীনদের জন্য যা স্বপ্নের বাড়ি। চারপাশে ইটের দেয়াল এবং ছাদে লাল ও সবুজ টিনের ছাউনি। ভূমিহীনরা কখনো স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি যে তারা জীবনের একটা পর্যায়ে এসে এখন একটি নতুন ঘর পাবে। দীর্ঘদিন তারা অন্যের বাড়িতে দু:খকষ্টে আশ্রিত ছিলেন। এখন তারা প্রত্যেকে উঠেছেন নিজেদের স্বপ্নের নীড়ে।

সরেজমিন কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলী, জয়চন্ডী ইউনিয়নের উত্তর কুলাউড়া, ভাটেরা ইউনিয়নের কড়ইতলা, ইসলামনগর এলাকায় প্রকল্পের অন্তত অর্ধ শতাধিক ঘর পরিদর্শন করে দেখা গেছে, দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলার তুলনায় কুলাউড়ায় আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্মিত ঘরে কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। ঘরগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে সবুজ ও লাল রঙের টিন। দুই রুমবিশিষ্ট ঘরে রয়েছে একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও স্টোর রুম। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া স্বপ্নের বাড়িতে ইতিমধ্যে যারা উঠেছেন তাদের মধ্যে অনেক উপকারভোগীরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে হাসি আনন্দে বসবাস করছেন। কেউ কেউ শোভাবর্ধনের জন্য ঘরের আঙ্গিনায় লাগিয়েছেন ফুল ও ফলের গাছ। ঘর ঘেঁষে তৈরি করছেন আলাদা আরও প্রয়োজনীয় গুদাম ঘর।

কুলাউড়ার জয়চন্ডী ও কর্মধা ইউনিয়নে প্রকল্পের ঘরের কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মল্লিকা দে। এর আগে গত ১৯ জুন কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলী এলাকায় প্রকল্পের ঘর সরেজমিন পরিদর্শণ করে ঘরের কাজের মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ আবু জাফর রাজু।

এসময় তিনি স্থানীয় উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে তাদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং উপকারভোগীদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া কামনা করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি কাজে সন্তোষ্টি প্রকাশ করেন।

উপকারভোগী ভ্যান চালক হেলাল মিয়া (৪১) উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব কর্মধা এলাকার বাসিন্দা। পরিবারে স্ত্রীসহ ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান রয়েছেন। একই ইউনিয়নের টাট্টিউলী এলাকার গাড়ী চালক ফখরুল আলম (৩৭) পরিবারে তার স্ত্রীসহ নয় বছরের এক ছেলে ও ৩ মাসের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কর্মধা গ্রামের বেওয়া ফয়জুন বেগম (৪৬) ও আজিরুন বেগম (৪৫) তারা অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে পরিবার চালাতেন। এখন মাথা গোজার ঠাঁই পেয়েছেন।

জয়চন্ডী ইউনিয়নের উত্তর কুলাউড়া এলাকার বাসিন্দা গৌরি দাস (৪০)। রিকশা চালক স্বামী কৃতিষ দাস (৬০) আর দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। মো. শুকুর মিয়া (৪৫) একজন চটপটি বিক্রেতা। তার পরিবারে তিন ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। স্বামী পরিত্যাক্তা সবজান বিবি (৫৫) তার ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে সন্তান নিয়ে আছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

বরমচাল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাউৎগাও গ্রামের গোলাপ মিয়া (৭০) দুই ছেলে সন্তানসহ এবং ভাটেরা ইউনিয়নের কড়ইতলা গ্রামের জাবেদ মিয়া (৩৮)। ভাটেরা ইউনিয়নের বেড়কুড়ি গ্রামের দিনমজুর ফিরুজ মিয়া (৪৫) পেয়েছেন ঘর।

এরা সবাই গৃহহীন হয়ে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করে আশ্রিত ছিলেন। এখন তারা প্রত্যেকে সরকারি ঘর পেয়ে সবাই খুশি। কিন্তুু মুজিববর্ষ উপলক্ষে তাদের সকলের ভাগ্যে বদল হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমিসহ পেলেন একটি পরিপূর্ণ পাকা ঘর।

স্বপ্নের নতুন ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপকারভোগীরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মানুষর বাড়িত আশ্রিত আছলাম। জীবনে চিন্তাউ করছি না, বাড়ি পাইমু। এখনতো পাক্কার বাড়ি পাইছি। মরার আগে মাথা গুজার ঠাঁই পাইলাম।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০০টি পাকাঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘরের খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক তালিকাভুক্ত ৪৪০ ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। তারমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১১০ ভূমিহীন পরিবার পেয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার। প্রতিটি ঘরের খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে ৪টি, জয়চন্ডীতে ৫টি, রাউৎগাঁওয়ে ১২টি, টিলাগাঁওয়ে ১৫টি, পৃথিমপাশায় ৩২ টি, কর্মধা ৩টি, শরীফপুরে ৩০টি ও হাজিপুরে ৮টি ভূমিহীন পরিবার পেয়েছে এই ঘর। দ্বিতীয় পর্যায়ে উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে ৩৩টি, জয়চন্ডীতে ১১টি, রাউৎগাঁওয়ে ৪টি, টিলাগাঁওয়ে ১১টি, পৃথিমপাশায় ১০টি, কর্মধা ১০টি, শরীফপুরে ১৬টি, হাজিপুরে ৪টি, বরমচালে ১টি ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে এই ঘর।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী বলেন, ১ম পর্যায়ের ১১০টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষে ইতোমধ্যে উপকারভোগীদের কাছে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১০০টি ঘরের মধ্যে ৪২টি ঘরের কাজ সমাপ্ত।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে সারাদেশের ন্যায় কুলাউড়ায়ও ১০০ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘরনির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেক উপকারভোগীদের হাতে ইতিমধ্যে কবুলিয়ত, নামজারি খতিয়ান, গৃহ হস্তান্তরের সনদপত্র প্রদান করা হয়। কমসময়ের মধ্যে উপকারভোগীদের বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানিয় জলের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। #

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews