এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন থেকে জন্ম নিবন্ধনের জন্য একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ভূল জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখে হতবাক এলাকার সাধারণ জনগণ।
এ থেকে পরিত্রানের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২ টায় বরমচাল রেলষ্টেশন চৌমুহনীতে “ভুক্তভোগী জনসাধারণ ব্যনারে” এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে স্থানীয়রা।
স্থানীয় অধিকাংশ লোকজনের নাম ঠিকানায় বার বার ভূল বানানের ছড়াছড়ি থাকায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করা হয়। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদে সচিবের উপস্থিতি খুব কম থাকায় জন্ম সনদ আনতে গিয়ে অপেক্ষা করতে হয় মাসের পর মাস এরকম অভিযোগ করেন বরমচাল ইউনিয়নের অসংখ্য জনসাধারণ। এক সচিব একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের অতিরিক্ত কার্যকম পরিচালনা করায় এ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বরমচাল ইউনিয়নের লোকজনকে। বিশেষ করে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্কুল কলেজে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীরা। তারা বার বার জন্ম নিবন্ধনের জন্য যেতে হচ্ছে বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদে। তারিখ মতো ইউনিয়নে গেলেও পাচ্ছেন না সঠিক সময়ে জন্ম সনদ। আর মাসের পর মাস অপেক্ষার পর জন্ম সনদ হাতে পেলেও দেখা যাচ্ছে নাম,ঠিকানায় মারাত্বক ভূল। এতে করে স্কুল কলেজে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়।
মানব বন্ধনে উপস্থিত ভোক্তভোগী মহলাল গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে হাদি জানান,কিছু দিন আগে তিনি গিয়েছিলাম তার বোনের জন্ম সনদ আনতে। উপযুক্ত কাগজ পত্র দেয়ার পরেও তার বোনের নাম এসেছে তাসনিম আক্তার থেকে তাসদিদ আক্তার। ভূল দেখে পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদে গেলে আবার চাওয়া হয় উপযুক্ত কাগজ পত্র। আবার তিনি তা জমা করেন। কিন্তু আবারো তার নাম সঠিক হয়ে আসলেও তার মায়ের নামে আসে ভূল। নুরুন্নার নামের জায়গায় আসে নুরুদনাহার।
আকিলপুর গ্রামের সুরমান মিয়া,সুবল মিয়া সহ অনেকেই জানান তিন মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের যাওয়া আসা করছেন জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য প্রথমে নামে ভুল আসলে পরবর্তীতে একা দারে তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো তিনি সমাধান পাচ্ছেন না। গাড়ি চালক সঞ্চিত বড়ুয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন তার জন্ম নিবন্ধন সনদ আনতে। সবকিছু জমা দিলেও তার নামের জায়গায় আসে সঞ্জিতা। জন্ম নিবন্ধন সনদ হাতে পেয়ে তিনি রীতি মতো অবাক।আপাদমস্তক একজন পুরুষের নাম এক নিমিষেই মহিলা হয়ে গেল। বরমচাল রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকার রোমা বেগম জানান তিনি একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ করতে তিন মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়া আসা করছেন কিন্তু তার কোন সমাধান পাচ্ছেন না।
বরমচাল ইউনিয়নের বেশ কয়েক জন জনসাধারণ নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে জানান, তারা কয়েক মাস ধরে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে দৌড়াদৌড়ি করছেন কিন্তু বার বার তারিখ দিলেও তিনি তার জন্ম নিবন্ধন সনদ পাচ্ছেন না। অনেক সময় ইউনিয়ন পরিষদের গেলে তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোগতা মিজানুর হোসেন খানের কাছে শুনতে হয় নানা কথা।
ইটাখলা গ্রামের ছয়ফুল নামের এক ভুক্তভোগী জানান তিনি তার একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ আনতে গিয়ে কয়েক মাস ধরে যাওয়া আসা করছেন ইউনিয়ন পরিষদে। কিন্তু তার কোন সমাধান পাচ্ছেন না। নাম ঠিকানায় এরকম ভূলের জন্য এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান এরকম বানান ভূলের জন্য বরমচাল ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোগতা মিজানুর হোসেন খান জসিমের চরম উদাসিনতার ফলে এসব ভূল প্রতিনিয়ত হচ্ছে। তথ্য সেবা কেন্দ্রে যোগ্যতা সম্পন্ন লোক নিয়োগ দিলে কিছুটা হলেও এর পরিত্রাণ হবে। প্রতিনিয়ত এরকম ভূলে ভরা জন্ম নিবন্ধন সনদে ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ চাচ্ছে বরমচালবাসী।
এব্যাপার বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আহমদ খাঁন সুইট জানান, ইউনিয়নের সচিব ৩টি ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন যার কারনে তার পরিষদের অনেক কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি দাবী করেন স্থায়ীভাবে একজন সচিব নিয়োগ করা হলে জনগনের আর কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না।#
Leave a Reply