এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজার এলাকার পদ্মদিঘীরপাড় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি ) স্থানীয় রবিরবাজার এলাকায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী।
পরে আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাছ খান, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, জেলা এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন সরদার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুল হক খান সাহেদ, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুশীল চন্দ্র দে, রাজনীতিবিদ নবাবজাদা আলী ওয়াজেদ খান বাবু, সিনিয়র সাংবাদিক এম শাকিল রশীদ চৌধুরী, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী ফুল মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান হাসনাইন, পৃথিমপাশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী সাজ্জাদ খান, ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল মতিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভাগ (এলজিইডি) এর সিএইচএসএমএমপি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রবিরবাজার এলাকায় জেলা পরিষদের জায়গায় পদ্মদিঘীরপাড় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় মৌলভীবাজারের মেসার্স জেরিন এন্টারপ্রাইজ।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাক সেনারা সমগ্র উপজেলাব্যাপী নির্মম হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণ চালায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করে গণকবর দেয়। এরমধ্যে আলী আমজদ উচ্চ বিদ্যালয়ের চৌমুহনী পয়েন্টে অবস্থিত বধ্যভূমিতে যুদ্ধকালীন সময়ে পৃথিমপাশার অক্ষয় দেব ও কৃতিময় দেব নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধাসহ আরো নাম না জানা অনেককে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়েছে। এটি সংরক্ষণের জন্য বার বার আন্দোলন, সংগ্রাম করলেও তা সংরক্ষিত না থাকায় জায়গাটি ছিল অবৈধ দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। স্থানীয় মানুষের বিভিন্ন সময়ের আন্দোলনের ফসল হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত জায়গাটি সংরক্ষণের জন্য তৎকালীন সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে মাটি ভরাট করে বর্তমান নির্মাণাধীন পদ্মদিঘীরপাড় স্মৃতিসৌধটি তৈরি করার জন্য সংসদে ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি ডিও লেটার প্রদান করেন। বধ্যভূমি নিয়ে এলাকার মানুষের বিভিন্ন আন্দোলন ও দাবির বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। অবশেষে প্রস্তাবের তিন বছর পর জমিসহ অন্যান্য জটিলতা কাটিয়ে সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আজিজুর রহমান, বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর প্রচেষ্ঠায় প্রকল্পটি সকল বাধা বিপত্তি কাটিয়ে আলোর মুখ দেখে। সম্প্রতি ওই স্মৃতিসৌধটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজের মাধ্যমে কুলাউড়া উপজেলায় প্রথম সরকারি উদ্যোগে ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ তৈরি করায় মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় লোকজনের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। #
Leave a Reply