এইবেলা, কুলাউড়া :: কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কোন নিয়ম তোয়াক্কা না করে সামাজিক বনায়ন কমসূচির প্রায় ৫০টি গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার একমাস অতিবাহিত হলেও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অবহিত ও থানায় মামলা দায়েরের পরও এখন পর্যন্ত ঘচনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। উপকারভোগীরা সর্বশেষ গত ২২ জুন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি অভিযোগ করেছেন।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে দায়েরকৃত অভিযোগ এবং স্থানীয় উপকারভোগী সূত্রে জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচির অধীনে কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে মনু তিলকপুর রাস্তা থেকে মজমপুর (সিকিরজান পুল) এবং হাজীপুর রাস্তা থেকে সোনা দিঘিরপাড় পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তায় আকাশমনি ও বেলজিয়াম প্রজাতির গাছ রোপন করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উপকারভোগী নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল বলেন, কাউকে না জানিয়ে গত ৬ জুন সামাজিক বনায়নের বড় এবং ভালো মানের ৫০টির মতো কাঁচা গাছ কাটেন সামছুল হক সামাদের নেতৃত্বে একটি চক্র। কাটা গাছগুলো হাজীপুর স’মিলের পাশে, হাজীপুর বাজার এবং পাইকপাড়া বাজারে কর্তনকৃত কিছু গাছের স্তুপ পড়ে থাকলেও বেশীর ভাগ কাঠ রাতের আঁধারে অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে বলেও তারা দাবী করেন।
উপকারভোগী আরেক ইউপি সদস্য সায়েস্তা মিয়া জানান, প্রাণের ভয়ে এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেন না। কারণ অভিযুক্তরা স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় এলাকায় এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা কাউকে তোয়াক্কাই করে না।
উপকারভোগী তালুকদার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর গত ১১ জুন সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার অভিযোগে কুলাউড়া থানায় ৩ জনের নামোল্লেখ এবং আরও অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে মামলা দায়ের করেন ইউপি সদস্য ও উপকারভোগী নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল। কিন্তু পুলিশ অদৃশ্য কারণে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অবশেষে উপকারভোগীরা গত ২২ জুন তারিখে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আরেকটি অভিযোগ করেন।
ঘটনার পর খবর পেয়ে বনবিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি কাটা গাছের স্তুপগুলো জব্দ করে রেখেছেন। জব্দকৃত গাছ রাস্তার পাশে থাকায় যেকোন সময় অভিযুক্তরা অন্যত্র পাচার করতে পারেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ওদুদ বক্স গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যেগুলো কাটা হয়েছে তা শুকনো হাতে গোনা দু’একটি। আর সামাজিক বনায়নের অন্তর্গত সবাই এই বিষয়টি জানেন। তবে এখানে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
অভিযুক্ত সামছুল হক সামাদ বলেন, তিনি গাছ কাটার সাথে জড়িত না।
বনবিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, তারা সরেজমিন গিয়ে ৩২টি গাছ কাটার সত্যতা পেয়েছেন। যেহেতু সামাজিক বনায়নের গাছ, সেহেতু স্থানীয় উপকারভোগীরাই আইনীভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে তাদের করার কিছু নেই।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: তৌফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমার জানা নাই। খোজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো ।#
Leave a Reply