আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে
এইবেলা, কুলাউড়া :: কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে সুরঞ্জিত বিশ্বাস (১৯) হত্যাকান্ডের একমাস ১২ দিন অতিবাহিত হলেও ঘটনার সাথে জড়িতরা রহস্যময় কারণে পুলিশে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। উল্টো স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল আপোষ নিষ্পত্তি ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আসামীদের গ্রেফতার ও ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ২০ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত সুরঞ্জিতের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সুরঞ্জিতের বাবা সুধাংশু বিশ্বাস লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এসময় নিহতে মা সাবিত্রী বিশ্বাস , চাচাতো ভাই রজেন্দ্র বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিতের মায়ের কান্না পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
লিখিত বক্তব্যে নিহত সুরঞ্জিতের বাবা সুধাংশুবিশ্বাস অভিযোগ করেন, গত ৭ জুন শ্রীপুর গ্রামের কালিমন্দিরে শীতলী পুজার আয়োজন করেন। কিন্তু নান্টু বিশ্বাস , রসেন্দ্র বিশ্বাস. রনজিত বিশ্বাস ও তাদের সহযোগিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলায় নারী পূরুষসহ ১০ জন আহত হয়। এরমধ্যে সুরঞ্জিত বিশ্বাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার পরদিন ০৮ জুন মারা যায়। ঘটনার আরেকদিন পর অর্থাৎ ৯ জুন কুলাউড়া থানা ১১ জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামীদের মধ্যে পুলিশ নান্টু বিশ্বাস নামক একজনকে আটক করে।
কিন্তু ঘটনার পর থেকে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ রহস্যকারণে তাদের গ্রেফতার করছে না।
এসময় নিহত সুরঞ্জিতের মা সাবিত্রী বিশ্বাস কান্নাজড়ি কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী হাওরে মাছ ধরে বিক্রি করে পরিবারের ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খেতেন। আমার ছেলে সুরঞ্জিত রাজমিস্ত্রী (পাকা কাজের) হেলপার (সহযোগি) ছিলো। তার রোজগারে পরিবারে কিছুটা অভাব দূর হতো। পুজো করতে গিয়ে আক্রোশের শিকার হয়ে আমার নরপরাধ ছেলেটি মারা গেলো। আমি হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ন্যায় বিচার চাই। ছেলেকে হারিয়েছি, কিন্তু স্বামী ও ছোট ছেলেকে হারাতে চাই না। আসামীরা তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে এলাকার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মেম্বার ছয়ফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী মহল মামলা আপোষ নিষ্পত্তি করতে ও তুলে নিতে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করছেন। ইতোমধ্যে জোরপূর্বক ১৩ ইঞ্চি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেন। এ ঘটনায় সুধাংশু বিশ্বাস মৌলভীবাজার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (নং ১৫৮ তারিখ ১৩/০৭/২২) দায়ের করেন।
ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মেম্বার ছয়ফুল ইসলাম জানান, ঘটনা যেদিন ঘটে সেদিন থানায় বসে বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু পরদিন ছেলেটি মারা গেলে থানায় মামলা হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনার সাথে আমাদের আর কোন সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু নিহত সুরঞ্জিতে পিতা সুধাংশু আমিসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপ পরিদর্শক শাহ আলম জানান, সুরঞ্জিত হত্যার ঘটনায় নান্টু বিশ্বাস নামক একজনকে ওইসময় গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। তদন্তক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজহারনামীয় আসামীদের গ্রেফতারে বিলম্বের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্যার কারণে গ্রেফতারে বিলম্ব হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করা হবে।##
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply