এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় মুহরীর আদালতের জাল সীল-স্বাক্ষরের জালিয়াতির ঘটনায় মামলার আসামী হন এক প্রবাসী। ওই মুহরী আদালতে চলমান মামলা থেকে প্রবাসীকে অব্যাহতি পাইয়ে দিতে ২ লাখ টাকা আত্মসাত করেন ও জামিনের ভূয়া রি-কল দিয়ে উল্টো জালিয়াতির মামলায় ফেলেন। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী প্রবাসী সেফুল মিয়া কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজারের গোবিন্দপুরে বাসিন্দা এবং আদালতের ওই মুহরী উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মুকুন্দপুরের বাসিন্দা নোমান আহমদ।
এ ঘটনায় ওই প্রবাসীর বোন জ্যোৎস্না বেগম মুহরী নোমান আহমদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে (মামলা নং ৩২/২০২১) অর্থ আত্মসাত ও জালিয়াতি মামলা করেন। সম্প্রতি মামলাটির তদন্ত প্রতিবদনে আদালতে জমা দেয়া হয়েছে এবং নোমান আহমদ কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহার ও ভূক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সেফুল মিয়া প্রবাসে থাকার কারণে একটি মামলার নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। এ জন্য সেফুলের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারী পরোওয়ানা জারী করেন। ওই গ্রেপ্তারী পরোওয়ানা থেকে জামিন ও খালাস পেতে সেফুলের বড় বোন এক আত্মীয়ের মাধ্যমে গত বছর জানুয়ারিতে আদালতের আইনজীবির এক মুহরী নোমান আহমদের পরিচয় হয়। এ সময় ভাইকে ওই গ্রেপ্তারী পরোওয়ানা থেকে জামিন ও খালাস করে দিতে পারবেন জানিয়ে জ্যাৎস্না বেগমের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন নোমান। তখন জ্যোৎস্না নগদ এক লাখ টাকা দেন নোমানকে। পরবর্তীতে নোমান আদালতের ও ম্যাজিস্ট্রেটের সীল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জামিনাদেশের ভূয়া রি-কল এনে দিয়ে আরো ৮৪ হাজার টাকা জ্যোৎস্নার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে নেন। কুলাউড়া থানার পুলিশের মাধ্যমে নোমানের দেয়া জামিনাদেশের ওই রি-কলটি আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে আদালতের নথির সাথে ওই রি-কলটির কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে আদালতের বিচারক ওই জালিয়াতির মাধ্যমে রিকলটির জন্য সেফুলসহ মুহরী নোমান আহমদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি মামলা দেন। এতে মুহরি নোমানের জালিয়াতির কারণে ফের মামলার আসামী হোন সেফুল। সেফুলের বোন জ্যোৎস্না মৌলভীবাজার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে নোমান আহমদকে অভিযুক্ত করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তে প্রথমে কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর ও পরে সিআইডি মৌলভীবাজার শাখার উপ পরিদর্শক শায়েক আহম্মেদকে দায়িত্ব দেন।
জ্যোৎস্না বেগম জানান, আদালতের সীল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভূয়া রি-কল ও আমার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে আত্মসাত মামলায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই সপ্তাহ জেল খেটে জামিনে বের হোন নোমান। জামিনে মুক্ত হয়ে কৌশলে আমার দায়েরকৃত বিচারাধীন মামলা মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালত থেকে জেলা জজ আদালতে নিয়ে যান। এতে মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতাসহ নোমান মামলা থেকে খালাশ পেতে অপচেষ্টা করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মুহরী নোমান আহমদ মোবাইলে জানান, গবিন্দপুর এলাকায় আমার কিছু জায়গা আছে। সেটি রেজিস্ট্রারী করে নিতে চান জ্যোৎস্নাবেগম। আমি না দেওয়ায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক শায়েক আহম্মেদ জানান, জ্যোৎস্না বেগমের করা মামলার তদন্ত শেষে চলতি মাসে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। জালিয়াতি ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা নেয়ার বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply