২-৩ গুণ বেশি ভাড়া গুণতে হয় বেসরকারি গাড়িতে
এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি গত দেড় মাস থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারণ রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স ২-৩ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ব্যবহার করছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, তেল বরাদ্দ না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা যায়, ১৩ ইউনিয়ন আর একটি পৌরসভা নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা। প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জন্য একমাত্র সরকারী চিকিৎসালয় হচ্ছে ৫০শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালটি। পার্শবর্তী জুড়ী উপজেলা থেকেও অনেক রোগী এখানে সেবা নিতে আসেন। যদিও জুড়ীতে বর্তমানে নতুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপতি হয়েছে। সবমিলিয়ে রোগীর প্রচন্ড চাপ থাকে এই হাসপাতালে। তবে এখানে সেবার মান খুবই নি¤œ। বেশিরভাগ সময় সাধারণ রোগীকেও রেফার্ড করা হয়। তা নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। এর উপর গত দেড় মাস থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবাটিও বন্ধ। সবমিলিয়ে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা রোগীদেরকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
এদিকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে কুলাউড়ায় চলছে নিরব বানিজ্য। কুলাউড়া থেকে মৌলভীবাজার যেতে সরকারী অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া আসে ৮শত টাকা, সেখানে বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্সে লাগে ২ হাজার থেকে ২৫শত টাকা। সিলেট যেতে সরকারী অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া আসে ১৬শত টাকা, সেখানে বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্সে লাগে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।
উপজেলা শহরের বাসিন্দা মামুন তালুকদার বলেন, আমার একজন আত্মীয় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এসময় হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স নিতে চাইলে তাকে জানানো হয় তেল সংকটের কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ রয়েছে। পরে তিনি বাইরে থেকে অনেক তর্কবিতর্ক করে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন থেকে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন মকবুল মিয়া নামের এক হতদরিদ্র ব্যক্তি। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত মৌলভীবাজার অথবা সিলেট যেতে বলেন। কিন্তু তিনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে একটি সিএনজি ভাড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে মৌলভীবাজার সদর হাসাপতালে যান।
স্থানীয় লোকজন ও হাসপাতালের কর্তব্যরত একাধিক সূত্র জানায়, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স থেকে সুবিধা নিয়ে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স অচল করে রাখা হয়েছে। দেড় মাস থেকে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ অথচ সংশ্লিষ্টদের কোন দায় নেই বলে মনে হয়।
সরকারী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক লিটন জানান, অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় তার হাসপাতালে কোনো কাজ নেই। তবে তিনি প্রতিদিনই হাজিরা দেন হাসপাতালে এবং মাসিক বেতনও নিয়মিত পাচ্ছেন।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার জানান, তেল বরাদ্দ না পাওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি বন্ধ রয়েছে। যে পেট্রোল পাম্প থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের তেল নেয়া হতো, সেই পেট্রোল পাম্পে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। ফলে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাম্প কর্তৃপক্ষ তেল দেয়া বন্ধ রেখেছে। যার ফলে রোগীদের সেবায় আমরা অ্যাম্বুলেন্স দিতে পারছি না। বরাদ্দ পাওয়া গেলেই আবার এই সেবা চালু হবে। তবে কবে বরাদ্ধ পাওয়া যাবে- সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply