সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিটি নির্বাচন না করলে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোই অনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক নির্বাচন করবেন কি না, শনিবার তা ঘোষণা করবেন। তবে তিনি নির্বাচন করবেন না-এমন ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন দলের একধিক শীর্ষ নেতা।
এতে বোঝা যাচ্ছে, মেয়র আরিফ র্নিবাচন না করলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। একপেশে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কমে যাবে। এদিকে দলের নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। ফলে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত মেয়র পদে আটজন মনোনয়ন ফর্ম কিনেছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা)। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন আবদুল হানিফ কুটু, আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, ছালাহ উদ্দিন রিমন ও মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এমনিতেই ১০ শতাংশ মানুষ নানা কারণে ভোটকেন্দ্রে যান না। বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন-সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে ১০টায় শেষ হয়ে যায়। কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক সংসদ-সদস্যকে (এমপি) কমিশন নির্বাচনি মাঠ থেকে সরাতে পারেনি। ঠিক তেমনই সিলেটে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন সংসদ-সদস্যরা। সিলেটে একপেশে নির্বাচন না করে সিলেকশন করে নেওয়া ভালো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জেলা বারের সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লা শহিদুল ইসলাম শাহিন মেয়রের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা প্রসঙ্গে বলেন, যে কেউ মেয়র হলে নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। প্রত্যাহার করা শোভনীয় নয়। বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনই সুশৃঙ্খলভাবে হয়নি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন অতীতের সব কারচুপি ছাড়িয়ে গেছে। মাত্র ৫ পার্সেন্ট ভোট কাস্ট হয়েছে। একপেশে নির্বাচন হলে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে না।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকি বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের প্রার্থীকে আচরণবিধির ব্যাপারে চিঠি দিয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের কোনো দোষ নেই। নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক ভূমিকা রাখছে। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত। মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পায়। তাই তারা একপেশে নির্বাচনের আয়োজন করেছে। অবৈধ সরকারের প্রতারণামূলক ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে বিএনপি কোনোভাবেই অংশ নেবে না।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কো-চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, কে নির্বাচনে যাবে না যাবে, এটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনের কাজ করছি। সেন্টার কমিটি করে দিয়েছি। ভোটকেন্দ্রে আসবে কি আসবে না, এটি ভোটারদের ব্যাপার। অপরদিকে নির্বাচনে এবার কাউন্সিলর প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ৪নং ওয়ার্ডের চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর বিএনপি নেতা রেজাউল হাসান লোদী (কয়েস লোদী)। সংবাদ সম্মেলন করে বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এতে তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েকদিনে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেমসহ নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের বহুসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখনো মুক্ত নন। আমাদের নেতা তারেক রহমান সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে আজ গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাক্স্বাধীনতা ও সুশাসন বলতে কিছু নেই। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমি এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করলাম।# (যু)
Leave a Reply