বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখা উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামের ৫০ কেজির চালের (খাদ্যশস্য) প্রতিটি বস্তায় ওজনে চাল মিলছে দেড় থেকে সাড়ে তিন কেজি পর্যন্ত কম। প্রতি বস্তার ঘাটতি মেটাতে অতি দরিদ্রের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগিদের ২/৩ কেজি চাল কম দিচ্ছে ডিলাররা। ওজনে কম নিয়ে ডিলারদের সাথে উপকারভোগিদের প্রায়ই ঘটছে বাক-বিতন্ডা ও উত্তেজনা। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোন কোন উপকারভোগিকে ডিলাররা বাজার থেকে চাল কিনে তাদের ঘাটতি পুষিয়ে দিতে বাধ্য হন।
জানা গেছে, অতি দরিদ্রের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল (খাদ্যশস্য) বিতরণের জন্য উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ডিলার নিয়োগ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। কার্ডধারী অতিদরিদ্র ব্যক্তিরা নিজ এলাকার ডিলারের কাছ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল ক্রয় করতে পারেন। উপকারভোগিরা ৪৫০ টাকায় ৩০ কেজি চাল ক্রয়ের পর তাদের কেউ কেউ ওজন করে দেখেন তাতে দেড় থেকে সাড়ে তিন কেজি চাল কম। তখন ডিলারের কাছে জানতে চাইলে ডিলাররা জানান, খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত ৫০ কেজির চালের বস্তায় ৩/৪ কেজি চাল কম থাকে। এই ঘাটতি পুরণ করতেই তারা উপকারভোগিদের কম দিচ্ছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের ডিলার রেদওয়ান আহমদের পিতা ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, সব ডিলারকেই খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত ৫০ কেজির চালের বস্তায় ওজনে ৩/৪ কেজি চাল কম দেওয়া হয়। এই ঘাটতি পুরণ করতেই ডিলাররা উপকারভোগিদের কিছু চাল কম দেন। বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকজন উপকারভোগি সামান্য চাল কম দেওয়ায় নানা ঝামেলা করেন। পরে তিনি বাজার থেকে চাল কিনে দিয়ে তাদের ঘাটতি পুরণ করে দিয়েছেন। তিনি জানান, গত ১৪ নভেম্বর তার ছেলে খাদ্য গুদাম থেকে ৮ টন ৯০ কেজি চাল উত্তোলন করেছে। তার এলাকায় ৩০৩ জন কার্ডধারী অতিদরিদ্র রয়েছেন। প্রত্যেককে ৩০ কেজি করে চাল দিলে গড়ে প্রায় চারশ’ কেজি চালের ঘাটতি পড়ে। গুদাম থেকে সঠিক মাপে চাল সরবরাহ করলে এমন জটিলতার সৃষ্টি হতো না। তিনি এই প্রতিনিধির সামনে ১০/১২টি বস্তা ডিজিটাল স্কেলে মেপে প্রতি বস্তায় ২/৩ কেজি চাল কম থাকার প্রমাণ দেন।
উপজেলার সদর বড়লেখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালেহ আহমদ জুয়েল জানান, ৫০ কেজির চালের বস্তায় শুষ্ক জনিত কারণে ২০০/৩০০ গ্রাম ওজন কমে যাওয়া মেনে নেওয়া যায়। প্রতি বস্তায় দেড় থেকে সাড়ে তিন কেজি চাল কমে যাওয়া রহস্যজনক। খাদ্যগুদামের প্রতিটি প্রকল্পের খাদ্যশস্যের ওজন কম থাকার ঘটনা দীর্ঘদিনের। এতে করে জনপ্রতিনিধি ও ডিলাররা মারাত্মক সমস্যায় পড়েন। গুদামের বস্তায় চাল কম থাকার ঘটনায় কারা জড়িত তা তদন্ত করে বের করা উচিত। এবং এই সমস্যার সমাধান করা জরুরি।
বড়লেখা সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) সুশীতল সুত্রধর জানান, সব বস্তা মেপে দেওয়ার সুযোগ নেই। ৫০ কেজির চালের বস্তায় ওজনে এত কম হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
Leave a Reply