“মোবাইলে চিত্র ধারন করে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী”
এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে কথিত সালিশের নামে গভীর রাতে গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণ অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সাথে জড়িত ধর্ষকরা ধর্ষণের ঘটনাটি মোবাইলে রেকর্ড করে এবং ছবি তুলে রাখে। ঘটনাটি কাউকে জানালে স্বামী সন্তানকে হত্যার হুমকি দেয়। পাশাপশি নগ্ন ভিডিও এবং ছবি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ নভেম্বর রোববার রাত আনুমানিক ১টায়। পরদিন ওই গৃহবধু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ১২ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই গৃহবধু কুলাউড়া থানায় এসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা (নং- ০৭ তারিখ, ১২/১১/২০২৩) দায়ের করেন। মামলা দায়েরের একসপ্তাহ পর পুলিশ শাকিব মিয়া (২২) এক আসামী গ্রেফতার করলেও আসামীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গৃহবধুর স্বামীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায়। তিনি শ্বশুর বাড়িতে এসে শহরে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে ভুলক্রমে অন্য বাসায় ঢুকে পড়েন। বাসার মালিক জয়চন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলিম উদ্দিনকে বিষয়টি জানান। বিষয়টি নিষ্পত্তির নামে গৃহবধুর স্বামীকে নিয়ে (গৃহবধুর বাবার) বাড়িতে যান মেম্বার আলিম উদ্দিন। গৃহবধুর ঘরে সালিশের নামে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে রাত ১ টার দিকে আসামীরা গৃহবধুকে বলেন , ‘তোমার স্বামী খারাপ লোক, তাকে ছেড়ে দেও, তোমার ভালো হবে। এভাবে চাপ সৃষ্টি করেন।
এক পর্যায়ে কাদিপুর ইউনিয়নের পূর্বমনসুর গ্রামের ছিদ্দেক আলীর ছেলে সুন্দর আলী (৩২), স্থানীয় লৈয়ারহাই গ্রামের কুতুব আলীর ছেলে শাকিব মিয়া (২২) ও রায়গ্রামের কানাই লাল ঘোষের ছেলে রনধীর ঘোষ (৪০) গৃহবধুকে জোরপূর্বক বাথরুমে নিয়ে ওড়না ও জামা দিয়ে হাতমুখ বেঁধে সম্পুর্ন বিবস্ত্র করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও এবং স্থিরচিত্র ধারণ করে। এক পর্যায়ে ধর্ষণকারীরা গৃহবধুকে ছেড়ে দেয় এবং এই ঘটনা কাউকে জানালে তার স্বামী সন্তানকে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
ধর্ষণকারীরা ঘটনার পরদিন গৃহবধুর বাড়িতে গিয়ে ভিডিও এবং স্থির চিত্র দেখিয়ে এক লক্ষ টাকা দাবি করে। তখন গৃহবধুর মা মানসম্মানের ভয়ে নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং দুটি চেক প্রদান করেন।
এব্যাপারে জয়চন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলিম উদ্দিন জানান, আমি ধর্ষণের ঘটনা কিছুই জানি না। তারাও আমাকে কিছু বলেনি। পরের দিন সুন্দর গংরা টাকা নিয়েছে শুনেছি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুছ ছালেক জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শাকিব মিয়াকে রোববার গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে।#
Leave a Reply