রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার- কুলাউড়ায় খাসিয়াদের বাঁধায় বাগানের কোটি কোটি টাকার গাছ নষ্ট হচ্ছে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার- কুলাউড়ায় খাসিয়াদের বাঁধায় বাগানের কোটি কোটি টাকার গাছ নষ্ট হচ্ছে – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩ মাস থেকে ১২ চা বাগানের শ্রমিকদের রেশন-বেতন বন্ধ কুলাউড়ার নবারুন আদর্শ বিদ্যাপীটের সভাপতির প্রবাস গমন উপলক্ষে সংবর্ধনা প্রদান কমলগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব “সেং কুটস্নেম” বড়লেখায় শিক্ষা ও সেবা ফাউন্ডেশনের মেধাবৃত্তি পরীক্ষা ও পুরস্কার বিতরণ কুড়িগ্রামে শ্রমিক লীগ নেতাকে শ্রমিক দলে রাখার পায়তারা বড়লেখায় পৌর যুবদল নেতার মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেফতার বড়লেখায় শিক্ষক ও সাংবাদিক মইনুল ইসলামের ইন্তেকাল : শোক প্রকাশ নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিটার মিনিবার নাইট ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন এফসি ডার্ক নাইট একজন মেহেদী হাসান রিফাতের গল্প : স্বপ্ন থেকে সাফল্যের পথে

রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার- কুলাউড়ায় খাসিয়াদের বাঁধায় বাগানের কোটি কোটি টাকার গাছ নষ্ট হচ্ছে

  • বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

এইবেলা, কুলাউড়া::

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাই চাবাগানের পরিপক্ক গাছ কাটতে আবারও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে খাসিয়ারা। বাগানের অভ্যন্তরে বসবাসরত ৩০-৩৫টি খাসিয়া পরিবার মেয়াদ উত্তীর্ণ গাছ কাটলে তারা উচ্ছেদ হতে পারে এ আশংকায় সম্প্রতি নানা তৎপরতায় লিপ্ত থেকে গাছবিক্রির অনুমোদন যাতে কর্তৃপক্ষ না দেয়, সেজন্য নানা টালবাহানা শুরু করেছে বলে অভিযোগ বাগান কর্তৃপক্ষের। তবে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, টি-বোর্ডের অনুমতি পাওয়া ঝিমাই চা বাগানের প্রায় ২ হাজার ৯৬ টি গাছ কাটার অনুমোদন দিতে বনবিভাগের কোন আপত্তি নেই। তিনি বলেন,বাগান কর্তৃপক্ষ পরিপক্ক গাছবিক্রি করবে এবং নতুন করে গাছ লাগাবে এটা চিরাচরিত নিয়ম। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে অনুমোদনের ১৫ বছর অতিক্রান্তে বাগানের ২ হাজার ৯৬টি গাছের মধ্যে ২-৩ শত গাছ ইতিমধ্যে পচে নষ্ট হয়ে পড়েছে। অতি দ্রুত গাছ বিক্রির চুড়ান্ত অনুমোদন না দেওয়া হলে কোটি কোটি টাকা মূল্যের গাছগুলি নষ্ট হয়ে যাবে এবং কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।

চা বাগান সুত্রে জানা গেছে,২০১০ সালে ঝিমাই চা বাগানের ২ হাজার ৯৬টি পরিপক্ক গাছ কাটার জন্য অনুমতি প্রদান করে টি-বোর্ড। এরপর থেকে খাসিয়ারা গাছকাটতে বাধা প্রদান করে আসতে থাকে। আইন মোতাবেক চাবাগান কর্তৃপক্ষ গাছ বিক্রির অনুমোদনে এগিয়ে যেতে থাকলে জনৈক রানাসুরং নামক খাসিয়া কর্তৃক হাইকোর্টে ২০১৫ সালে রিট পিটিশন দায়ের করার কারনে গাছবিক্রির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে দীর্ঘ শুনানী শেষে ২০১৭ সনে হাইকোর্টের রায় চা বাগানের অনুকুলে আসে। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রানাংসুরং গংরা সর্বোচ্চ আদালতে আপিল বিভাগে (৪৫৮/১৭) সিভিল আপিল দায়ের করেন। চুড়ান্ত শুনানী শেষে ২০১৯ সালে আপিলটি খারিজ হয় এবং হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।

রায়ের প্রেক্ষিতে ঝিমাই চাবাগান কর্তৃপক্ষ সিলেট বিভাগীয় বনকর্মকর্তাকে গাছকাটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে লিখিতভাবে আবেদন জানালে সিলেটের ডিএফও ২০২২ সালে ঝিমাই চাবাগানের ভূমি হতে গাছকর্তন ও স্থানান্তরের জন্য মার্কিংতালিকা প্রস্তুত পূর্বক দাখিলের নির্দেশনা প্রদান করেন কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসারকে।

রেঞ্জকর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত এবং উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা মোতাবেক ডিএফও’কে দেওয়া পত্রে উল্লেখকরেন, চা বোর্ড ঝিমাই চা বাগানের ২ হাজার ৯৬ টি গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করেছেন। এবং উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী ঝিমাই চা বাগান কর্তৃপক্ষ বাগানের বিভিন্ন সেকশনে নতুন করে গাছের চারা রোপন পূর্বক ৩ বছর পরিচর্যা করেছেন । রেঞ্জ কর্মকর্তা কর্তৃক রিপোর্ট পাওয়ার পর সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক অর্থাৎ জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটিকে গাছবিক্রির অনুমোদনের বিষয়ে পত্রপ্রদান করেন।তৎকালীন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ২০২৩সালের ২১ মার্চ তারিখে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে ঝিমাইচাবাগানেরভূমিহতেগাছকর্তন ও স্থানাস্থর সংক্রান্তবিষয়েমহামান্য হাইকোর্টেররায়যথাযথভাবেবাস্তবায়নহয়েছেকিনা,চা বোর্ডেরঅনুমোদিততফশিলের লিজভুক্ত ভূমিতে গাছের সংখ্যা নির্ধারণ করার বিষয়গুলো সরেজমিনে পরিদর্শন ও যাচাই বাচাই করার জন্য কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে প্রদান করে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন ও বনবিভাগের রেঞ্জকর্মকর্তাকে সদস্য করে ৩ সদস্য কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। কিন্তু উক্ত কমিটি গত ১০মাসেও মাঠে তদন্ত করেনি এবংনানাভাবে সময়ক্ষেপন করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান,পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো: রিয়াজুল ইসলাম ও কুলাউড়া রেঞ্জকর্মকর্তা রিয়াজউদ্দিন ঝিমাই চাবাগানে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেন।

তদন্ত শেষে তদন্ত টিমের প্রধান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান জানান, তদন্তকার্যক্রম শেষ হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবেনা। তারা তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথ কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করবেন।

এদিকে তদন্ত কার্যক্রম শেষ হওয়ারপরদিনঅর্থাৎ ২৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.কামাল উদ্দিন আহমদকে ঝিমাই চাবাগানের অভ্যন্তরে পুঞ্জিতে খাসিয়ারা নিয়ে আসেন তাদের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এ অভিযোগে। মানবাধিকার চেয়ারম্যানের সাথে ছিলেন কমিশনের সার্বক্ষনিক সদস্য মো: সেলিম রেজা। তারা পুঞ্জি পরিদর্শণ করেন এবং খাসিয়া ও চা বাগান ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামানেরও কথা শুনেন। এসময় ড.কামাল উদ্দিন আহমদ চা বাগান ও খাসিয়াদের স্থায়ী সমস্যা নিরসনের জন্য একটি উপায় বের করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এব্যাপারে ঝিমাই চা বাগানের ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বলেন, খাসিয়াদের নানা টালবাহানার কারনণ গত ১৫ বছর থেকে বাগানের পরিপক্ক গাছবিক্রি করা যাচ্ছেনা।টি-বোর্ডের অনুমোদন, উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য কওর মানবাধিকারের কথা বলে নানা টালবাহানা করে বিভিন্নজনকে এনে উস্কানি দিয়ে এবং সময় ক্ষেপনের কারনে পরিপক্ক গাছগুলি মরে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাগানের কোটি কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে এবং সরকারও কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এব্যাপারে খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান রানাসুরং অভিযোগ করে বলেন, তারা যুগযুগ থেকে ঝিমাই পুঞ্জিতে বসবাস করে আসছেন। তারা গাছরক্ষা করে এবং পানচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। চা বাগান কর্তৃপক্ষ গাছ কাটার আড়ালে মূলত: আমাদেরকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, চাবাগান কর্তৃপক্ষ পরিপক্ক গাছ কাটবে এবং নতুন করে আবার লাগাবে এটা চিরাচরিত নিয়ম। ঝিমাই চাবাগানের ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটেছে। এখন যেহেতু উচ্চ আদালতে রায় রয়েছে সেহেতু আমরা উচ্চ আদালতের রায় মানতে বদ্ধ পরিকর।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews