ইবি, ডেস্ক :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ও টিলাগাঁও ইউনিয়নে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে দু’টি স্পটে ২০ আগষ্ট মঙ্গলবার মধ্যরাত প্রায় ৬শ ফুট এলাকা জুড়ে বিশাল ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ৪৮ ঘন্টার টানা ভারি বর্ষণে এবং সীমান্তের ওপার থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও টিলাগাঁও ইউনিয়নের আশ্রয়গ্রাম, মিয়ারপাড়া, সন্দ্রাবাজ ও খন্দকারের গ্রাম এই ৪টি ও পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিকড়িয়া, ছৈদলবাজার এবং হাজিপুর ইউনিয়নের মন্দিরা ও কাউকাপন বাজার এলাকায় মনু নদীর পানি প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুকিপূঁর্ণ। একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষাবাঁধের উপর দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এসব স্থানে যেকোন সময় ভাঙন সৃষ্টি হতে পারে। এসব স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকাতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিন টিলাগাঁও ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামে মনু নদীতে সৃষ্ট ভাঙন এলাকা পরির্দশনে গেলে ইউপি সদস্য জুনাব আলী জানান, মঙ্গলবার বিকাল থেকে মনু নদীর পানি গুদামঘাট (হাজিপুর) এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছিলো। এদিকে যে ভাঙন সৃষ্টি হবে তা নিশ্চিত ছিলেন। ফলে আগে থেকে মানুষ সতর্ক ছিলেন। ফলে জানমাল বা গবাদি পশুর কোন ক্ষতি হয়নি। ক্ষতি যা হয়েছে তা মানুষের ঘরবাড়ি ও গাছপালার। হাজীপুর গ্রামের কনাই মিয়া, পারভেজ মিয়া, জলাল মিয়া, ফয়জু মিয়া, ইন্তাজ মিয়া, ইন্তু মিয়া, মতলিব মিয়া, মন্তাজ আলী, রেনু মিয়া, লতিফ মিয়া ও বাতির মিযার বাড়ি সম্পুর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সৃষ্ট ভাঙনের ফলে টিলাগাঁও ইউনিয়নের হাজীপুর, থলের বাজার ও তারাপাশা চা বাগানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। হাজীপুর গ্রামের ২০-২৫টি বাড়ি সম্পূর্ন এবং শতাধিক ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তারাপাশা চা বাগানের প্রায় অর্ধশত কাচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদিকে সৃষ্ট ভাঙনের ফলে কুলাউড়ার পার্শ্ববর্তী রাজনগর উপজেলার তারাপাশা ইউনিয়নের বদরপুর ও চাউরউলি গ্রামেও মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এদিকে বুধবার ২১ আগস্ট বেলা আনুমানিক ৩টা নাগাদ পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিকড়িয়া ডুমা বিল এলাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে পৃথিমপাশা ও রাউৎগাঁও ই্উনিয়নের ১৫-২০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে সৃষ্ট ভাঙনের খবর পেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী সরেজমিন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানান, তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে নদীতে পানি বেশি থাকায় ভাঙন এলাকা আরও প্রশস্থ হয়ে ৭-৮ শ ফুট হতে পারে।
এদিকে বৃষ্টিপাত না থামার কারণে মনু পাড়ে মানুষের মাঝে এখন ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদীতে পানি বাড়া অব্যাহত আছে। #
Leave a Reply