মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কিশালয় মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে চুরি গেছে সরকারি প্রকল্পের ৫ সেট কম্পিউটারের সরঞ্জামাদি। এ ঘটনায় গত ২০ আগষ্ট চুরির একদিন পর ছুটিতে থেকেও দুই লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সরদার মোছাঃ জীবুন্নাহার খানম। কিন্তু এই চুরি নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ ও ‘সন্দেহের’ তীর এখন তার দিকেই। তার অন্যতম প্রধান কারণ এই সরঞ্জামাদি বিদ্যালয়ের কক্ষে রাখা হয়েছে অধিকাংশ সহকারী শিক্ষকদের অগোচরে। আদোতে কার্টুনের ভেতরে কম্পিউটারের সরঞ্জামাদি ছিলো কী না তা নিয়ে উঠেছে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বলছেন, প্রকল্পের মালামাল প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ দিন তার নিজ বাসগৃহে রেখেছিলেন। যখন তিনি এই মালামাল বিদ্যালয়ে আনেন তখন তারা দেখেছেন কিছু বাক্স (কার্টুন) বিদ্যালয়ের ভবনে রাখা হচ্ছে। তবে সেই বাক্সের ভেতরে কী আছে তা তারা দেখেননি। এমন কী কতটি মালামাল বিদ্যালয় তার ল্যাবের জন্য পেল তাও তারা চুরির আগে জানতেন না।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, গত ১৯ আগষ্ট রাতে কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ এলাকার কিশালয় মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে ৫ টি মনিটর, ৫ টি সিপিইউ, ৫ কী বোর্ড, ৫ টি মাউস,১০ টি পাওয়ার কাড, ৫টি ইউপিএসসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি চুরি হয়ে গেছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দক্ষিণ দিকের নিচতলার গ্রিলগুলো ঝূকিপূর্ণ। যা দিয়ে অনায়ায়েসে একজন মানুষ ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে। উপরের যে কক্ষ থেকে সরঞ্জামাদি চুরি হয়েছে সেই কক্ষের হেজবল ভাঙ্গা।
বিদ্যালয়রে একাধিক সূত্র বলছে, প্রধান শিক্ষক সরদার মোছাঃ জীবুন্নাহার খানম ‘বাংলাদেশের ৫০৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ও ভাষা ল্যাব স্থাপ ‘ শীর্ষক প্রকল্পের আত্ততায় ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখ ৫ সেট কম্পিউটারের সরঞ্জামাদি গ্রহণ করেন। সেই মালামাল দীর্ঘ ৭ মাস পর জুন মাসে তিনি স্কুলের নিচের কক্ষে রাখেন। এতো দিন এ মালামালগুলো তার নিজ বাসভবনেই ছিলো। জুলাই মাসে মালামাল স্কুলের উপরের কক্ষে রাখেন। আর সেখান থেকেই আগষ্ট মাসে তা চুরি যায়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘আমরা শুধ জানতাম আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য কিছু মালামাল এসেছে। তবে সেগুলো আমরা দেখিনি। প্রধান শিক্ষিকা এই মালামালগুলো দীর্ঘ দিন তার বাড়িতে রেখেছিলেন। পরে একদিন তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে তা বিদ্যালয়ে আনেন। তিনি নিজের খেয়াল খুশিমত বিদ্যালয় চালাতেন। আমাদের সাথে কোনো পরামর্শ করতেন না।’
বিদ্যালয়েল সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা বেগম বলেন,‘ প্রকল্পের মালামালগুলো ম্যাডামের বাড়িতে ছিলো। যে দিন সেগুলো স্কুলে আনা হয় আমি দেখেছিলাম। কার্টুনে কিছু মালামাল আনা হয়েছিলো কিন্তু ভেতরে কী ছিলো তা দেখিনি।’
আরেক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘ ল্যাবের জন্য কী মালামাল স্কুল পেয়েছিলো তা আমরা জানতাই না। স্কুলের উপর তলায় কার্টুনে করে কী রাখা হয়েছিলো সেটিও আমরা দেখিনি। আমরা তো মালামালের হিসাব পেলাম মালামাল চুরি যাওয়ার পরের দিন।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরদার মোছাঃ জীবুন্নাহার খানম বলেন, ‘ ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। পরে চুরির ঘটনা জানতে পেরে থানায় গিয়ে মামলা করেছি। এখানে প্রায় ২ লাখ টাকার সরকারি মালামাল চুরি গেছে’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যা আমার বাসায় মালামালগুলো ছিলো কিন্তু আমি সেগুলো পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে রেখেছি।’ তার দাবি তিনি শিক্ষকদের উপস্থিতিতে মালামালগুলো স্কুলে রেখেছিলেন।’ #
Leave a Reply