তাজুল ইসলাম ::
কুলাউড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ফানাই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত খনন কাজের ফলে রাউৎগাঁও, কর্মধা, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ও কুলাউড়া সদরসহ এই ৫টি ইউনিয়নে ১৫টি ব্রীজ হুমকির মুখে রয়েছে। যেকোন সময় ব্রীজগুলো ভেঙ্গে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে ৪-৫টি ব্রীজ দেবে গেছে।
সরজমিন এলাকায় গেলে ন্থানীয় লোকজন জানান, ফানাই নদীর উপর রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কবিরাজী গুতগুতি রাস্তার উপর দলা মিয়ার বাড়ী পাশের ব্রীজ, চৌধুরীবাজার কর্মধা মুকুন্দপুর রাস্তায় খাতুন বিবির বাড়ীর পাশের ব্রীজ।
কর্মধা ইউনিয়নের হাসিমপুর রাঙ্গিছড়া রাস্তায় গেন্দুর বাড়ীর পাশে ব্রীজ দেবে গেছে। এছাড়া পূর্ব বাবনিয়া থেকে রাঙ্গিছড়ার রাস্তায় ব্রীজ এবং হুসনাবাদ হয়ে কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার উপর ব্রীজ যেকোন সময় ব্রীজ ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
মুকুন্দপুর পালগ্রাম রাস্তায় কুরফান উল্লাহ বাড়ীর পাশে ব্রীজ, কুলাউড়া রবিরবাজার সড়কে বেইলী ব্রীজ, ভাটুত গ্রামে রেললাইনের উপর রেলব্রীজ, ভবানীপুর নর্তন রাস্তায় কাজল চৌধুরীর বাড়ীর পাশে নদীর উপর ব্রীজ খুবই ঝুূঁকিপূর্ণ রয়েছে। ব্রীজটি মধ্যখানোর পিলার দেবে যাচ্ছে। শূন্যে রয়েছে পিলারগুলো। ভবানীপুর হেলাপুর রাস্তার মাসুক মিয়ার বাড়ীর পাশে নদীর উপর গত বছর ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয় নির্মিত ব্রীজটি নদী খননের ফলে নদীর মধ্যখানে পড়ে রয়েছে। ফলে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের পাটনী বাড়ীর পাশে ফুট ব্রীজ, কাদিপুর ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামে মনোরঞ্জনের বাড়ীর পাশে নদীর উপর ব্রীজ, মিনার মহল দাড়ার মুখে ব্রীজ।
কিন্তু সাম্প্রতি সরকারীভাবে ফানাই নদীর খনন কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের গাফলতির কারনে এই তিনটি ব্রীজ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে। শ্রমিকরা মাটি কাটার মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ফানাই নদী খনন করতে গিয়ে নদীর মধ্যখানে ব্রীজের পিলারের নীচ থেকে মাটি খনন করায় পিলার নীচ থেকে মাটি সরে যায়। ব্রীজের পিলারের উভয় দিক থেকে প্রায় ৩ ফুট মাটি শূন্য হয়ে পড়ে। যার ফলে ব্রীজের মধ্যখান দেবে গিয়ে বাঁকা হয়ে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে এই ব্রীজগুলো। ব্রীজগুলো দিয়ে মানুষ ও যান চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, এই ব্রীজগুলো নতুনভাবে নির্মাণ খুবই জরুরি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহিব আহমেদ জানান, ফানাই নদী খনন করায় ব্রীজের পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে এমন অবস্থা হয়েছে।
বাবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক শিক্ষক আব্দুল মালিক জানান, ফানাই নদী সম্পুর্ণভাবে অপরিকল্পিতভাবে খনন করায় ব্রীজগুলো এ অবস্থা হয়েছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়বে। আর এই ব্রীজগুলো ভেঙ্গে পড়লে স্থানীয় লোকজনের যাতায়াতের বিকল্প কোনো রাস্তাও নেই। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ফানাই নদী খনন শুরুর আগে সঠিকভাবে খননের জন্য কয়েকবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী বরাবরে আবেদন করা হয়েছিলো। কিন্তু তা উপেক্ষিত থেকে যায়।
রাউৎগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অব্যহিত করা হয়েছে। ব্রীজগুলো প্রায় ৬০ ফুট লম্বা। প্রতিদিন এসব ব্রীজ দিয়ে ভারী যানবাহনসহ স্থানীয় লোকজন যাতায়াত করে থাকেন।
কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এম আতিকুর রহমান আতিক জানান, রাঙ্গীছড়া থেকে হাসিমপুর রোডে অবস্থিত একটি ব্রীজ অনেক পুরাতন। এরমধ্যে ফানাই নদী খননের সময় ব্রীজের নীচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় বর্তমানে আরো ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। তিনি ব্রীজগুলোর দ্রুত সংস্কার করার জোর দাবি জানান।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আখতারুজ্জামান জানান, ব্রীজগুলো নদী খননের কারণে নাকি ব্রীজ নির্মাণের সময় কোন ত্রুটির কারণে দেবে গেছে তা এখন বলা যাচ্ছে না। সরজমিন খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি। #
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply