বিশেষ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাসের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে পুলিশের জারিকৃত স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করে অর্ধশত বছরের একটি রাস্তার প্রায় ৭৫ মিটার স্থানের গতি পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। এতে পার্শবর্তী কয়েকটি পরিবার হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে। এ রাস্তা নিয়ে আদালতে মামলা ও ইউপি চেয়ারম্যানের গতি পরিবর্তন জটিলতায় প্রায় দুই বছর ধরে রাস্তাটির সরকারী উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় এলাকাবাসী দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন।
মৌলভীবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১৭৯/২০১৯ নম্বর মামলা সুত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের ‘বাছিরপুর টু নয়াগ্রাম রাস্তাটি’র পশ্চিম অংশে নয়াগ্রাম শিমুলতলা মাদ্রাসার ফুট ব্রীজের পূর্বদিকের ৬ ফুট প্রশস্ত প্রায় ৭৫ মিটার স্থান পরিবর্তনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাসসহ ৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে পিটিশন মামলা করেন স্থানীয় হাবিবুর রহমান। আদালতের নির্দেশে জুড়ী থানা পুলিশ নালিশা ভুমিতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা মোতাবেক স্থিতাবস্থা জারি করে। কিন্তু পিটিশন মামলার প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাস ও দুই নম্বর আসামী ইউপি মেম্বার আমির হোসেন আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ করে গত বছরের ২ ডিসেম্বর রাস্তাটির বিরোধীয় স্থানের গতি পরিবর্তন করেছেন। রাস্তাটির ৭৫ মিটার স্থান প্রায় ৬ ফুট দক্ষিণ দিকে সরিয়ে ফেলায় হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছেন পার্শবর্তী বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া, আব্দুল মন্নান, রেণু মিয়া, আব্দুস সহিদ, ময়না মিয়া প্রমুখ অভিযোগ করেন, বিগত ৫০ বছর ধরে তারা এ রাস্তা দিয়ে বাছিরপুর, জুড়ী বাজার, আমতৈল, জায়ফরনগর এলাকায় যাতায়াত করছেন। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত এমএ মোমিত আশুক, মইন উদ্দিন মইজন, বদরুল হোসেন প্রমুখ সরকারী বরাদ্দে এ রাস্তার উন্নয়ন কাজ করেছেন। স্থানীয় জনগণও বিভিন্ন সময়ে চাঁদা তুলে রাস্তার মেরামত করেছেন। রাস্তাটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের স্থিতাবস্থাও জারি রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাস ও ইউপি মেম্বার আমির হোসেন রাস্তাটির গতি পরিবর্তন করেছেন। চেয়ারম্যান-মেম্বারের সেচ্ছাচারিতায় এ রাস্তার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দ আটকে আছে। ৭৫ মিটারের প্রায় ৬ ফুট দক্ষিণ দিকে সরিয়ে ফেলায় তারা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন। এব্যাপারে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এব্যাপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাসের মোবাইল নম্বরে কয়েক বার ফোন দেয়া হলে রিং বাজলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এজন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জুড়ী সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে গত ২৪ জানুয়ারী তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্তকালে তিনি জানতে পারেন ইউপি চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাস ও ইউপি মেম্বার আমির হোসেন উপস্থিত থেকে রাস্তাটি স্থানান্তর করেছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তিনি বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছেন।
Leave a Reply