আত্রাইয়ে কদর বেড়েছে পাটকাঠির আত্রাইয়ে কদর বেড়েছে পাটকাঠির – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন

আত্রাইয়ে কদর বেড়েছে পাটকাঠির

  • বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: উত্তর জনপদের শষ্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় চলতি মৌসুমে সোনালি আঁশ পাটের ভালো ফলন হয়েছে। মৌসুমের প্রথম দিকে পাটের দাম কিছুটা বাড়তি থাকলেও বর্তমানে কমেছে পাটেরবাজার দর। তাই উৎপাদন খরচ উঠাতে কৃষকদের চোখ এখন
পাটকাঠির দিকে। বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠির ব্যবহার বৃদ্ধিতে এর প্রতি যত্নবান হয়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে পাটের আঁশের লোকসান পুষিয়ে নিতে পাটকাঠিতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫৫ হেক্টর জমি। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাট প্রতি মণ ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা এবং নিম্নমানের পাট ২০০০ থেকে ২৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই পাটের আঁশের লোকসান পুষিয়ে নিতে পাটকাঠিতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষিরা।

পাটচাষিরা বলছেন, অনাবৃষ্টি, শ্রমিক সংকট ও মজুরি বৃদ্ধি, পাট পচানোর জন্য পুকুর ভাড়াসহ নানা কারণে পাটের উৎপাদন খরচবেড়েছে। অথচ বাজারে পাটের দাম একেবারই কম। তবে পরিবর্তন হচ্ছে না শুধু পাটখড়ির; তাই পাটের আঁশের লোকসান পুষিয়ে নিতে পাটকাঠিতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষিরা। উপজেলা ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামানিক বলেন, এবছর পাট নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ছিলাম। পানির অভাবে পাট কাটতে পারছিলাম না। এলাকার একজনের পুকুরে জমির পাট জাগ দিয়েছিলাম। অল্প পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের রং ভালো আসে নাই। তারপরও ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। এখন পাট কাঠি শুকানোর কাজ করছি। কিছু পাট কাঠি নিজের প্রয়োজনের জন্য বাড়িতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। বাকি পাটকাঠি বিক্রি করে দিয়েছি। পাটকাঠির বাণিজ্যিক ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় একই ফসলে আমাদের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।

উপজেলার সাহেবগঞ্জ ব্লকের কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, এবার আমি ২বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে পড়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ও ভালো হয়েছে। এখন পাটকাঠি বিক্রি করেও ভালো দাম পাচ্ছি। আমি মনেকরি পাটকাঠি হলো কৃষকদের জন্য বাড়তি লাভ।

উপজেলার সাহেবগঞ্জ বকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান জানান, এবার গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় পাটের আবাদ লক্ষমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি, পাটের ফলনও অনেক বেশি। এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পাটের আঁশের সঙ্গে পাটকাঠিও কৃষকদের আর্থিক সমর্থন দিতে পারে। আগে শুধু পাটকাঠি রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো; কিন্তু এখন পাটকাঠি দিয়ে ঘর নির্মাণ করা, পানের বরোজ তৈরি ছাড়াও এগুলো দিয়ে পার্টিক্যাল বোর্ড ও পাটকাঠি পুড়িয়ে এর ছাই দিয়ে কম্পিউটারের প্রিন্টিং মেশিনের কালি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

ফলে জেলায় এবার পাটের দাম কিছুটা কম থাকলেও পাটখড়ির দাম এবার ভালো। যে কারণে কৃষকরা পাটখড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews