বড়লেখায় লো-ভোল্টেজ ভুতুড়ে বিলের হয়রানীতে অতিষ্ট গ্রাহকরা বড়লেখায় লো-ভোল্টেজ ভুতুড়ে বিলের হয়রানীতে অতিষ্ট গ্রাহকরা – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বেলজিয়ামের রানির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ শাবিতে ছাত্র রাজনীতির অনুমতি, যা ভাবছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা? প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিউইয়র্কে দিদারুল ইসলামের পরিবারের সাক্ষাৎ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ১৮ নভেম্বর একেকটা ক্যানভাসে একেকটা গল্প নিয়ে দলীয় প্রদর্শনী সম্পন্ন সিলেটে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি দৈনিক শ্যামল সিলেটের বার্তা সম্পাদকের মৃত্যুতে ছাতকে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের শোক কুলাউড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা ভূরুঙ্গামারীতে ইয়াবাসহ নারী মাদক কারবারি আটক উলিপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতিমূলক সভা

বড়লেখায় লো-ভোল্টেজ ভুতুড়ে বিলের হয়রানীতে অতিষ্ট গ্রাহকরা

  • মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১

পিডিবির বিধিবর্হিভুত বিদ্যুৎ সংযোগ

 

আব্দুর রব, বড়লেখা ::

বড়লেখায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিধিবর্হিভুত বিদ্যুৎ সরবরাহ ও চরম অব্যবস্থাপনায় উপজেলার ৫ শতাধিক গ্রাহক মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। বিদ্যুৎ আইনের পরিপন্থী নিউটেল লাইন ছাড়াই সিঙ্গেল ফেইসে ১৫-১৬ বছর ধরে জরাজীর্ণ বাঁশের-কাঠের খুঁটিতে মাথা পরিমাণ উচ্চতায় ও জীবন্ত গাছে তার টেনে সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে হতাহতের আশংকায় দিন কাটে এলাকাবাসীর।

ঝুঁকিপূর্ণ লাইনের সংস্কার, লো-ভোল্টেজ সমস্যার সমাধান ও সংস্কারের নামে অর্থ আদায়সহ নানা হয়রানীর ব্যাপারে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা সম্প্রতি পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর অনুলিপি পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি, জেলা প্রশাসক, পিডিবির প্রধান (বিভাগীয়) প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে দেয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল সুত্র ও বিদ্যুৎ আইনে বলা হয়েছে যেকোন এলাকার সাধারণ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ প্রদানের জন্য তিনটি ফেস আর একটি নিউটেল তারের ফোর-ফোরটি এলটি লাইন স্থাপন করে নতুন সংযোগ দেওয়ার কথা। পরে ফোর-ফোরটি এলটি লাইন থেকে একটি ফেস ও নিউটেল তার দিয়ে গ্রাহকের বাড়িতে সংযোগ দিতে হবে। তারও আগে কোনো গ্রাহক বিদ্যুতের আবেদন করলে উপসহকারী প্রকৌশলীকে সরেজমিনে সার্ভে করে সহকারী প্রকৌশলীকে রিপোর্ট করতে হয়। সহকারী প্রকৌশলীর রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুমোদন সাপেক্ষে সংযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু পিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ফোরম্যান আর লাইনম্যানের অসাধু সিন্ডিকেট সরেজমিনে পরিদর্শণ না করে বড় অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই অফিসে বসেই ভুয়া রিপোর্ট তৈরীর পর সংযোগ প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আদায় করে বড়লেখার কাশেমনগর, দোহালিয়া, গজভাগ, পুটাডহরসহ বিভিন্ন গ্রামে বাঁশের খুঁটি, মরা সুপারি গাছ, কাঠের খুঁটি ও জীবন্ত গাছে তার টেনে ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগ প্রদান করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডিবির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নিউটেল (তার) লাইন ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানে বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত সিস্টেম লস দেখা দেয়। যা সম্পুর্ণ বিদ্যুৎ আইন পরিপন্থী। আর এ সিস্টেম লস পুষিয়ে নিতে পিডিবির অসাধু সিন্ডিকেট নিরীহ গ্রাহকের ওপর ভুতুড়ে বিল চাপিয়ে দেয়। এসব বিধিবর্হিভুত বিদ্যুতে একদিকে গ্রাহকরা পড়ছেন দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে, অন্যদিকে হচ্ছেন মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন।

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার ১০ নং দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপির বৃহত্তর কাশেমনগর ও পুটাডহর গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারকে প্রায় ১৬ বছর আগে পিডিবি বিধিবর্হিভুত সংযোগ প্রদান করেছে। লাইনের সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সংস্কার না করেই একের পর এক দেওয়া হয়েছে নতুন সংযোগ। এতে কোনো গ্রাহকই পাননি সঠিক আলো। লো-ভোল্টেজ আর ভুতুড়ে বিলই যেন তাদের নিয়তি। ট্রান্সফরমারের ফিউজ পুড়ে গেলে তা লাগানো, নষ্ট হলে মেরামত/ক্রয়, ঝড়তুফানে খুঁটি পড়ে গেলে তা পূণঃস্থাপনে, লাইন সংস্কারসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে পিডিবির লোকজনকে ঘুস দিয়ে কাজ হাসিল করতে হয়। তারপরও গ্রাহকরা পায় না কাঙ্খিত সেবা, বাড়েনি ভোল্টেজ, কমেনি দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

কাশেমনগর গ্রামের ভুক্তভোগী গ্রাহক নুরুল ইসলাম, মো. শাহিন, গিয়াস উদ্দিন, গৌরধন প্রমূখ জানান, প্রায় ১৬ বছর ধরে নিবু নিবু ভোল্টেজে তাদের বাতি জ্বলছে, যা বাচ্চাদের পড়াশুনায় ও গৃহস্থালী কোনো কাজে আসে না। চালাতে পারেন না ফ্যান, ফ্রিজ, ইস্ত্রি, পানির মোটর। কিন্ত প্রতিমাসেই অত্যাধিক হারে বিল দেওয়া হয়। অনেক কষ্টে নিয়মিত বিল পরিশোধ করছি, দিচ্ছি সার্ভিস চার্জ তবুও পাচ্ছি না নুন্যতম সেবা। মিটার না দেখেই দেওয়া হয় ভুতুড়ে বিল। তাও পরিশোধ করছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ লাইন সংস্কারের কোনো নাম নেই। রাস্তায় হাটা-চলা ও ক্ষেতখামারে চাষাবাদের সময় বিদ্যুতের তার গায়ে লাগার মতো নিচে ঝুলে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ইতিপূর্বে বিদ্যুতায়িত হয়ে এলাকায় কয়েকটি গরু মারা গেছে। নিচু লাইনের বিদ্যুতের তার একটি চলন্ত লাইটেসে লেগে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফরহাদ নামক লাইটেস চালক গুরুতর আহত হলে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গ্রাহক গিয়াস উদ্দিনও সিএনজি আটোরিকশায় বাড়িতে ঢুকার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে আহত হন। নিউটেল লাইনহীন বিদ্যুতে প্রতিনিয়ত গ্রাহকরা থাকেন দুর্ঘটনার আতংকে। বিদ্যুৎ সরবরাহে ভয়াবহ অবস্থা চললেও সেদিকে নজর নেই পিডিবির। প্রায় ২ বছর আগে লাইনম্যান পরিচয়দানকারী রবিউল ইসলাম লাইন সংস্কারের নামে ১ লাখ টাকার কন্টাক্ট করে ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে। এর অনেক দিন পর শুধু কয়েকটি খুঁটি পুতা ছাড়া কোনো কাজ হয়নি। এখনো সে ১০-১৫ হাজার টাকায় নতুন সংযোগ দিচ্ছে। রোববার এ প্রতিবেদক গ্রাহক সেজে নতুন সংযোগের ব্যাপারে কথা বললে সে মিটার দিতে ১১ হাজার টাকা দাবী করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ লাইনের লোভোল্টেজের বিদ্যুৎ কোন কাজে আসছে না। সংযোগ পাওয়ার পর থেকেই গ্রাহকরা নানা হয়রানীর শিকার। পিডিবির চরম উদাসীণতায় বছরের পর বছর ধরে আমরা এসমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছি না ।#

 

 

অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম জানায়, সে পিডিবির কর্মী নয়, স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান। লাইন সংস্কারের নামে ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রাহকরা ৪৫ হাজার টাকা নয়, ৪২ হাজার ৫০০ টাকা লাইন সংস্কারের ঠিকাদারকে দিয়েছেন। এসময় তিনি শুধু উপস্থিত ছিলেন।

 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজির উদ্দিন জানান, এখানকার গ্রাহকদের প্রধান সমস্যা লো-ভোল্টেজ ও ঝুঁকিপূর্ণ লাইন। ট্রান্সফরমারের পাশের দু’চার পরিবার ছাড়া রীতিমতো কোনো বাচ্চা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে লেখাপড়া করতে পারে না। একটি পরিবারে সব লাইট বন্ধ করেও কোনোরকম একটি ফ্যান চালানো যায় না। এছাড়া লাইন খুলে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ২০ লাখ খরচ করে এলাকাবাসী লাইন এনেছে। পিডিবি দায়িত্ব নেওয়ার পরেও ট্রান্সফরমার চেঞ্জ করে না। গ্রাহকদের নিজেদের টাকায় ট্রান্সফরমার কিনে আনলে পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। ঝুঁকিপূর্ণ লাইনও সংস্কার করা হচ্ছে না। তিনি ভয়াবহ এই বিদ্যুৎ সমস্যার দ্রুত সমাধান দাবী করেন।’

 

পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমরা গাছ ও বাঁশ দিয়ে জোর করেতো কারো বাড়িতে এভাবে সংযোগ দেইনি। স্থানীয় কোনো নেতা কিংবা সম্মানিত কারো জোরাজুরি, তদবিরে লাইনগুলো হয়েছে। কিন্তু গাছ ও বাঁশের খুঁটি এবং এক লাইনে বিদ্যুৎ দেওয়ার কোনো বিধান নাই। তবে এখন নতুন করে এভাবে আর লাইন দেওয়া হচ্ছে না। সুষ্ঠু বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এখন একটা প্রজেক্ট আসছে। সকল সমস্যার সমাধান হবে। লাইন সংস্কারের নামে টাকা নেওয়ার বিষয়ে বলেন, ‘পিডিবিতে রবিউল নামে কোনো কর্মী নাই। বাইরের দালালের সাথে লোকজন না বুঝে লেনদেন করলে আমাদের করার কিছু নেই। তারপরও তিনি অভিযুক্ত রবিউলকে অফিসে ডেকেছেন’।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!