৪৯ বছরেও মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কমলগঞ্জের শমশেরনগরে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দিনভর যানজট কুলাউড়ায় অবৈধভাবে বেঁড়িবাধ কাটার সময় মাটি চাপায় দিনমজুর নিহত আত্রাইয়ের শুঁটকিপল্লীতে  উৎপাদনে ভাটা  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শাহবাগ ব্লকেড শান্তিরক্ষা মিশন সুদানে নিহত ও আহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের পরিচয় প্রকাশ বড়লেখায় শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে আলোচনা ও দোয়া কুড়িগ্রামে বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ভুয়া ভর্তি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ কমলগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ার কর্মধায় ২য় বারের মতো ট্রাস্ট মেধাবৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণ করবে বেতন কমিশন

৪৯ বছরেও মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

  • বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১

Manual5 Ad Code

সংবিধান দিবস আজ

Manual3 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গণপরিষদ বিতর্কে সংবিধান সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের আখরে লেখা’ বাংলাদেশের সংবিধান। পাকিস্তানি শোষকদের নাগপাশ থেকে বাঙালি মুক্তির আন্দোলনের মূল প্রতীক ছিল একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান অর্জনের আকাঙ্ক্ষা।

এ কারণে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই দেশের চরম খারাপ অবস্থার মধ্যেও মাত্র ৯ মাসে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। অথচ গত ৪৯ বছরে সংবিধান গ্রহণের দিনটিকে (৪ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘সংবিধান দিবস’ ঘোষণা করেনি সরকার। শুধু দিবসেই নয়, সংবিধান ছাপার ক্ষেত্রেও কৃপণতা সরকারের। সাড়ে পাঁচ বছর ধরে সংবিধান ছাপা বন্ধ রেখেছে আইন মন্ত্রণালয়।

 

সংবিধান দিবসের স্বীকৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বুধবার যুগান্তরকে বলেন, সংবিধান দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বিষয়টি এখন বিবেচনা করা উচিত।

১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের সংবিধান গ্রহণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে এই দিনটিকে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন সংবিধান দিবস হিসেবে পালন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এই দিনে কোনো কর্মসূচি নেই। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ সংবিধান দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। যুগ মেয়াদে সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারও সেই দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি।

Manual1 Ad Code

আক্ষেপের সুরে সংগঠনটির নেতা শাহরিয়ার কবির যুগান্তরকে বলেন, আমাদের সরকারগুলোর কাছে কোনো দাবি তুললে সেটা বুঝতেই তাদের দশকের পর দশক সময় লেগে যায়। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসকে জাতীয় দিবসের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানানো শুরু করেছিলাম ১৯৯৯ সালে। সেই দাবি সরকার গ্রহণ করেছে ২০১৭ সালে।

Manual4 Ad Code

তিনি বলেন, ৩০ বছর আগে থেকে সংবিধান দিবসের স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছি। প্রত্যেক বছর আমরা এই দিনটিকে কেন্দ্র করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। শাহরিয়ার কবির বলেন, জাতির পিতা রক্তের অক্ষরে লেখা সংবিধানের কথা বলে গেছেন। পৃথিবীর আর কোনো সংবিধান লিখতে এত রক্তের প্রয়োজন হয়নি। তারপরও আমাদের দেশের সরকারগুলো এই দিবসটির গুরুত্ব বোঝে না। কবে বুঝবে জানি না।

জাতীয় পর্যায়ে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে কিছু দিবস পালন করার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে দিবস সংক্রান্ত প্রস্তাব উঠানোর পর মন্ত্রিসভা সম্মতি দিলে সেটির পরিপত্র জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস সম্পর্কিত একটি তালিকা পরিপত্র আকারে প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ। পরিপত্রে প্রতিবছরে তিন ক্যাটাগরিতে ৮৬টি দিবস পালনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এই তালিকায় অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ কোনো কোনোদিনকেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংবিধান প্রণয়নের মতো একটি দিনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়নি কোনো সরকারই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিবস পালনের অন্তর্ভুক্ত আছে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস। এই দিবসগুলো পালনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বা সরকারের প্রধানের সম্পৃক্ততা থাকে।

এছাড়া এই শ্রেণিতে দেশের প্রধান ধর্মীয় উৎসবগুলোও আছে। বর্তমানে ক শ্রেণিভুক্ত দিবসের সংখ্যা আছে ১৯টি। খ ক্যাটাগরিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসগুলো ঐতিহ্যগতভাবে পালিত হয়। খ ক্যাটাগরিতে থাকা দিবসের সংখ্যা ৩৪টি। এই দিবসগুলোতে সাধারণত মন্ত্রীরা অংশ নেন। এর বাইরে দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিপত্রে গ ক্যাটাগরির দিবসের বিষয়ে বলা হয়েছে, বিশেষ প্রতীকী দিবস পালিত হবে ৩৩টি।

সংবিধান গবেষক ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আরিফ খান যুগান্তরকে বলেন, ‘সংবিধান দিবস’কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি তুলতে হচ্ছে, বাংলাদেশের যে কোনো সরকারের জন্য এটাই লজ্জার বিষয় হওয়া উচিত। আর দাবি তোলার পরও সেই দাবির প্রতি কর্ণপাত না করাটা কোন ধরনের কাজ, তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।

উল্লেখ্য, সংবিধানেই বলা হয়েছে সংবিধান ও আইন মানার জন্য। সংবিধানের ২১(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংবিধান ও আইন মান্য করা… প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।’ কিন্তু প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর যাবৎ সরকারিভাবে কোনো সংবিধান ছাপা হচ্ছে না। আর আইনগতভাবে বেসরকারিভাবে সংবিধান ছাপানো নিষিদ্ধ। তাহলে মানুষ সংবিধান কোথা থেকে পড়বে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যুগান্তরকে বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালতে আছে তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগে আমরা সংবিধান ছাপতে পারি না।

সংবিধান ছাপার দায়িত্ব আইন মন্ত্রণালয়ের। আইন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গত সাড়ে পাঁচ বছর যাবৎ সংবিধান ছাপছে না সরকার। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের অন্যতম আলোচিত সংশোধন আনা হয়। এরপর ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকারিভাবে ছাপানো হয়েছিল মাত্র তিন হাজার কপির কিছু বেশি সংবিধান।

এতে সংসদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম অবস্থা। সাধারণ মানুষ সরকারি ছাপার সংবিধান কিনতে চাইলেও পায়নি। দশম সংসদের শেষদিকে ২০১৮ সালের ৮ জুলাই সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্যদের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে সংবিধানের সর্বশেষ ১৭তম সংশোধন আনা হয়। এরপরও নতুন করে সংবিধান ছাপেনি সরকার। অর্থাৎ সর্বশেষ সংশোধনের পর ছাপা সংবিধান সরকারের হাতেও নেই।

Manual3 Ad Code

প্রসঙ্গত, উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নিতে ২১০৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাশ হয়। বিষয়টি আদালতে গড়ালে ২০১৬ সালের ৫ মে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই আপিল বিভাগও ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। এখন বিচারিক প্রক্রিয়ার শেষ স্তর অর্থাৎ ‘রায় পুনর্বিবেচনা’ বা ‘রিভিউর’ অপেক্ষায় রয়েছে বিষয়টি।

বেসরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও দেশব্যাপী সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনের আপডেটসহ সংবিধান বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার নীলক্ষেত বই মার্কেটের আইন বইয়ের একজন ব্যবসায়ী যুগান্তরকে বলেন, বিসিএস পরীক্ষার জন্য সংবিধানের ব্যাপক চাহিদা আছে। আমরা চাই সরকারি ছাপার সংবিধান বিক্রি করতে, কিন্তু পাওয়া না যাওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করি।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংবিধান বেসরকারিভাবে ছাপার বৈধ অনুমতি দেওয়া দরকার। সেই সঙ্গে আদালতের চূড়ান্ত রায় আসার আগে যে রায় বিদ্যমান আছে সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেই সংবিধান ছাপতে পারে সরকার।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!