এইবেলা, কুলাউড়া :: কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা হিল ফরেস্টে ১০ হেক্টর বনভূূমিতে ২৫ হাজার চারা রোপন শেষ করতে না করতেই খাসিয়ারা সেটি জবরদখলে নানা অপতৎপরতা শুরু করেছে। সৃজিত বাগান তাদের দখলে নিতে জবরদখলের চেষ্টা, বাগান বিনষ্ট ও নিম্ন আদালতে খারিজ হওয়া মামলা জজ আদালতে আপিল করেছে।
বনবিভাগ জানায়, খাসিয়ারা সম্পূর্ন মিথ্যে অজুহাতে ভাটেরা হিল ফরেস্টে ১০ হেক্টর বনায়নের জায়গাটি তাদের মালিকানাধীন দাবী করে। মৌলভীবাজার আদালতে একটি স্বত্ব মামলা দায়ের করলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বনবিভাগ মামলার জবাব ও আপত্তি দাখিল করে। গত ১০ আগষ্ট উভয়পক্ষের শুনানী গ্রহন করে খাসিয়াদের মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। আদালতে খাসিয়াদের মামলা খারিজ হওয়ার পর বনবিভাগ ও উপকারভোগীরা ১০ হেক্টর জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির ২৫ হাজার চারা রোপন করে পাহারা ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করে। কিন্তু খাসিয়ারা বনায়ন বিনষ্টের বিভিন্ন পায়তারা চালাচ্ছে বলে বন বিভাগ অভিযোগ করেছে।
খাসিয়াদের স্বত্ব মামলাটি নামঞ্জুর করে আদালত রায় প্রদান করায় এর বিরুদ্ধে আলফাছ খাসিয়া পুনরায় বিবিধ আপিল করেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগে পূন:বনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কুলাউড়ার ভাটেরা হিল রিজার্ভ ফরেষ্ট-ব্লক-২ এর আওতাধীন কালিয়ারআগা নামক স্থানে পতিত ১০ হেক্টর বনভূমিতে ২০২১-২২ অর্থবছরে বনায়নের উদ্দেশ্যে পলিব্যাগে ২৫ হাজার চারা উত্তোলন করে বরমচাল বিট অফিস। এবং যথারীতি চারা রোপন শুরুও করে। কিন্তু খাসিয়ারা বাঁধা দিলে কাজ বন্ধ থাকায় বনবিভাগের ১২-১৩ হাজার চারা নষ্ট হয়।
বনায়নের উপকারভোগীরা ও বনবিভাগ জানায়, কালিয়ারআগা নামক পাহাড়ী বনাঞ্চলে কখনও কোন খাসিয়াদের অস্থিত্ব ছিল না। বনবিভাগ যে সমস্থ জায়গা খালি আছে সেগুলিতে সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নিলেই খাসিয়ারা সেই জায়গা তাদের দাবি করে বনায়নে বাঁধা দেয় বলে বনবিভাগ অভিযোগ করে। খাসিয়ারা শুধু বনের জায়গা জবরদখল করে পানের ঝুম ও বাড়ীঘর নির্মাণ করেই ক্ষান্ত হয় না, গাছ নিধন, বন্যপ্রাণী নিধন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে।
কুলাউড়া উপজেলার ১৩ হাজার একর বনভূমির মধ্যে ৮ হাজার একর বনভূমি ইতোমধ্যে জবর দখল করে পানজুম প্রতিষ্টা করে লক্ষ লক্ষ আয় করছে। অথচ এই বনে ছিলো সরকারের সংরক্ষিত বাঁশমহাল। সেইসব বাঁশ এখন অস্থিত্বহীন। সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
বরমচাল বিট কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, খাসিয়ারা যতটুকুু জায়গায় বসবাস কিংবা পান চাষ করছে সব জায়গাই বনবিভাগের। বিভিন্ন কৌশলে তারা বনবিভাগের জায়গা তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে অবৈধভাবে। বর্তমানে ভাটেরা হিল ফরেষ্টের কালিয়ারআগার এই ১০ হেক্টর বনায়নের উপরও তাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে।
কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন জানান, আইনগতভাবে খাসিয়ারা হেরে গিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ভাটেরা হিল ফরেষ্টের সামাজিক বনায়ন রক্ষায় যা যা করণিয় বনবিভাগ সবই করবে। সাজানো বাগান কাউকে বিনষ্ট করার সুযোগ দেয়া হবে না। #
Leave a Reply