বড়লেখায় আল্লাদাদ চা বাগানের ভূমি জবর দখল, ছাড়ার তাগিদ দিলেই মামলা দিয়ে হয়রানী – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রামের ৭ জন নিহত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভিসা জটিলতা দূর করার নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার কুড়িগ্রামে নদীতে ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ‘চন্দন কাঠ’ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট : ছাতকে যুবলীগ নেতা কারাগারে আত্রাইয়ে গোয়ালঘরের তালা ভেঙে ৫ টি গরু চুরি বড়লেখায় দোকানে ঢুকে অতর্কিত হামলা : আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী মোগলাবাজার রেল দূর্ঘটনাস্থল মেরামত শেষে কুলাউড়ায় ফেরার পথে রেল কর্মকর্তার মৃত্যু ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, আটকা পড়েন উপদেষ্টা শহিদুল আলমসহ ফ্লোটিলার সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল জরাজীর্ন লাইন, মেয়াদোত্তীর্ন সেতু ও পুরনো কোচে আতঙ্ক সিলেটবাসীর

বড়লেখায় আল্লাদাদ চা বাগানের ভূমি জবর দখল, ছাড়ার তাগিদ দিলেই মামলা দিয়ে হয়রানী

  • শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

Manual3 Ad Code

এইবেলা ডেস্ক::

বড়লেখা উপজেলার আল্লাদাদ চা বাগানের লীজকৃত ব্যাপক ভূমি স্থানীয় কতিপয় আদিবাসী খাসিয়া জবর দখল করেছে। তারা আরো ভূমি জবর-দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বাগানের জবর দখলকৃত ভূমি ছেড়ে দেওয়ার তাগিদ দিলেই তারা পান ও সুপারী গাছ কেটে ফেলার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে বাগান ব্যবস্থাপকসহ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দিয়ে হয়রানী করে। এতে চা বাগানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শনিবার দুপুরে বাগান কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এমডি বাংলোয় সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।

চা বাগানের মহা-ব্যবস্থাপক সিরাজ উদ্দিনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাগানের প্রধান টিলাবাবু পলাশ চন্দ্র দাস। এসময় টিলা বাবু আবুল হাসনাত লতিফ, শ্রমিক সুরেন নায়েক, ইসলাম উদ্দিন, রোকেয়া বেগম, প্রিয়তমা ভৌমিজ বনপ্রহরী সেজু মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Manual7 Ad Code

লিখিত বক্তব্যে প্রধান টিলা বাবু পলাশ চন্দ্র দাস জানান, গত ৮ মে খাসিয়াদের বেআইনীভাবে জবর দখলকৃত বাগানের ইজারাধিন ভূমির পান জুমে কে বা কারা পান ও সুপারী গাছ কেটেছে। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে বহুবার খাসিয়াদের বাগানের লীজকৃত ভূমি ত্যাগ করার কথা বলতেই তারা নিজেরা পান, সুপারী, লেবু গাছ কেটে সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনের সিমপ্যাথি অর্জনের চেষ্টা চালায়। এবারও তারা একই ঘটনা ঘটিয়ে গত ১৭ মে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট, মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসুত তথ্য দিয়ে বাগানের মহা-ব্যবস্থাপক ও পাহারাদারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এতে আল্লাদাদ চা বাগানের চলমান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

Manual3 Ad Code

টিলা বাবু পলাশ চন্দ্র দাস বলেন, পান ও সুপারী গাছ কাটা নিয়ে খাসিয়ারা প্রথমে থানায় জিডি করেছে। এতে চাঁদা দাবির কথা উল্লেখ করেনি। তবে রহস্যজনকভাবে আদালতে করা মামলায় বাগান মহা-ব্যবস্থাপক সিরাজ উদ্দিন ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির কথা উল্লেখ করেছে। এটা থেকেই বুঝা যায় ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মামলাটি করা হয়েছে।

চা বাগানের ইজারাধিন তাদের (খাসিয়াদের) জবর দখলকৃত ভূমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেই তারা উল্টো বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। সম্প্রতি বড়লেখা আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে অলমি খাসিয়া ও ফারমিন খাসিয়ার নেতৃত্বে একদল খাসিয়া বাগানের বাংলোর গেইটের সম্মূখে এসে বাগানের ভূমি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবী করছে। খাসিয়ারা খুবই বেপরোয়া এবং সন্ত্রাসী আচরণ করছে। তারা ধারালো খাসিয়া দা, রড, খুন্তি, বল্লম, তীর-ধনুক এবং অগ্রেয়াস্ত্র নিয়ে বাগানে প্রকাশ্যে মহড়া দিচ্ছে এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে। অস্ত্রধারী খাসিয়াদের ভয়ে বাগানের নিরীহ চা শ্রমিক, টিলা বাবু ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। ইতিমধ্যে খাসিয়ারা বাগানের প্রায় ২শত একর ভূমি জবর দখল করেছে এবং প্রতিনিয়ত নতুন করে জবর দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এতে তাদের বাধা দিতে গেলেই তারা প্রশাসনের সিমপ্যাথি পাওয়ার জন্য নিজেরাই নিজেদের পান, লেবু সুপারী গাছ কেটে মিথ্যা নাটক সাজায়।

আল্লাদাদ চা বাগানটি অল ইন্ডিয়া টি এন্ড ট্রেডিং কোং কর্তৃক শ্রীধরপুর চা বাগান নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বাগানটি ক্রয় করেন বর্তমান মালিকের পিতামহ মোতাব্বির হোসেন চৌধুরী। ১৯৯৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত বাগানটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ছিল। পরবর্তীতে মালিক পক্ষ সরকারের নিকট থেকে বাগানটি ইজারা গ্রহন করেন। উল্লেখ্য স্বাধীনতার পূর্বে আল্লাদাদ চা বাগানের বড়গুল নামক স্থানে জনৈক চান্দ মনি রায়সহ তিনটি খাসিয়া পরিবার বসবাস করতেন যাহাকে স্থানীয় ভাবে পুরাতন খাসিয়া বাড়ী নামে ডাকা হত। পরবর্তীতে তাহারা উক্ত এলাকা ত্যাগ করে ভারতে চলে যান এবং এখানে তাদের কোন বসতগৃহ বা বাড়িঘর অবশিষ্ট ছিল না। স্বাধীনতার পর অনুমান ১৯৭৩ সালে সুনীল, সুভেষ ও সুশীল নামে ৩ জন খসিয়া এসে ভূমিহীন হিসাবে চা শ্রমিকের সাথে চা বাগানে মালিক পক্ষের কোনরূপ অনুমতি ছাড়াই বাগানের তৎকালীন ম্যানেজারের মৌখিক অনুমতিতে বসবাস শুরু করেন। তাহারা সেখানে চা শ্রমিকদের সাথে বাগানের বিভিন্ন কাজকর্ম করত। তখন চা বাগানটি ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান ছিল এবং বাগানের অনাবাদী ভূমিতে বাগানের সহিত জড়িত শ্রমিক কর্মচারীরা মাটির কুঁড়েঘরে বসবাস করত। তাই এই ব্যাপারে বাগান কর্তৃপক্ষ বিশেষ দৃষ্টিপাত করেন নাই বা খাসিয়াদের সেভাবে উচ্ছেদ করেন নাই কিংবা খাসিয়ারাও কখনো নিজেদের অত্র ভূমির মালিক মনে করে নাই। বরং তারা বাগানের অন্যান্য শ্রমিকদের মতই বাগানের অনাবাদী ভূমিতে অস্থায়ী মাটির কুঁড়েঘর বসবাস করত এবং বাগানের অনাবাদী কিছু জায়গায় পান, সুপারী ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের পর পূরাতন খাসিয়াদের সহযোগিতায় আরও কিছু খাসিয়া, গারো, চাকমা, মুকিসহ বেশ কয়েকটি উপজাতী পরিবার এসে বাগানের পুরাতন খাসিয়াদের সাথে বসবাস ও অনাবাদী কিছু জমির জঙ্গল কেটে পান চাষ শুরু করে। তখন বিষয়টি মালিক পক্ষের ও বাগান কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে খাসিয়াদের বাগানের ভূমি ত্যাগ করার জন্য বলা হয়। তখন খাসিয়ারা জানায় যে, তারা বাগানের অব্যবহৃত অনাবাদি অংশে অস্থায়ী হিসাবে বসবাস ও চাষাবাদ করছে। যে কোন সময় বাগানের প্রয়োজন পড়লে বলা মাত্র বাগানের ভূমি ছেড়ে দিবে।

Manual2 Ad Code

২০০৮ সালের পর খাসিয়ারা ধিরে ধিরে আগ্রাসী ও দখলবাজ হয়ে উঠে। ইতিমধ্যে বাগানের সরলতার সুযোগে তারা বাগানের বিভিন্নস্থানে বসতি স্থাপন এবং ভারতসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে এসে লোক সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা বাগানের ইজারাধিন ভূমি জবর দখল করতে শুরু করে। তাদের পুরাতন বসবাসের অস্থায়ী বাঁশ বেতের ও মাটির ঘরগুলো সংস্কার ও পূর্ননির্মাণ করে টিনসেড, আধা পাঁকা ও পাকা স্থায়ী ঘর নির্মাণ শুরু করে। তখনই বাগান কর্তৃপক্ষ খাসিয়াদের এহেন বেআইনী কাজে বাধা প্রদান করলে তারা ব্যাপকভাবে উগ্র, উশৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী আচরণ শুরু করে। তখন থেকে বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে খাসিয়াদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে তারা প্রতিনিয়ত বাগানের ইজারাধিন ভূমিতে বেআইনীভাবে টিলা কেটে পান, সুপারী ও লেবু বাগান তৈরী করছে। প্রায় ২ মাস পূর্বে খাসিয়ারা বাগানের ইজারাধিন ভূমি হইতে ১২ বারটি আকাশি গাছ কাটিয়া জোর পূর্বক নিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে চৌকিদার ও শ্রমিকরা বাধা প্রদান করে। তাৎক্ষণিক শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দায়ের করলে, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাটা গাছের ১২ খাড়া জব্দ করে অলমিন খাসিয়ার জিম্মায় রাখেন।

অপরদিকে গত ৬ মে অলমি খাসিয়া এবং ফারমিন খাসিয়ার নেতৃত্বে আমাদের বাগানের ৩নং সেকশনের পূর্ব পাশ সংলগ্ন বাঘমারার কোনা নামক স্থানে ইট, বালু, সিমেন্ট মজুদ করে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে। বাগানের ফরেষ্ট চৌকিদার আব্দুন নুর, আব্দুল জব্বার ও আব্দুস সামাদ বাধা দিলে খাসিয়ারা বাধা উপেক্ষা করে উল্টো বাগানের কর্মচারীদেরকে আক্রমনের চেষ্টায় চালায়। বাগানের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়ে সেখানে গিয়ে তাদের বাধা দিলে অলমি এবং ফারমিনের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন খাসিয়া ধারালো দা, রড, খুন্তি, বল্লম, তীর-ধনুক ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে এবং জোরপূর্বক বাগানের ভূমি দখল করে ঘর নির্মাণ করতে থাকে। রাতে উত্তর শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিন মন্টু মেম্বারকে বিষয়টি জানালে তিনি খাসিয়াদের ঘর নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও তারা তা মানেনি। উল্টো বাগানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।

Manual5 Ad Code

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code