বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম সদর ::
কুড়িগ্রামে অপরাধ নিয়ন্ত্রণসহ জেলা পুলিশকে গণমুখী, জনবান্ধব ও পুলিশের কল্যাণে নানা উদ্যোগ গ্রহন করছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম। আইনগত পরিকাঠামো এবং জনবল ও পুলিশ ইকুইপমেন্টের সীমাবদ্ধতার মাঝেও এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে পুলিশের ভূমিকাকে আরও উজ্জ্বল করেছে এবং পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট কাটিয়ে পুলিশ-জনতা সম্পর্কোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় পুলিশকে জনমুখী ও জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিটি থানার প্রত্যন্ত এলাকাতে পুলিশের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করাসহ থানার পুলিশি সেবা জনগণের একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছানো এবং পুলিশের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও গণমুখী করার লক্ষ্যে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শুরু করা হয়েছে বিট পুলিশিং কার্যক্রম। বিটপুলিশিং কার্যক্রমের সেবা পেতে সকল কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন বিট পুলিশ অফিসারদের পদবী ও মোবাইল নাম্বার লিফলেট, পোস্টার এবং গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম এলাকায় সাইনবোর্ড আকারে দেয়া হচ্ছে।
পুলিশ ট্রাফিক বিভাগের সেবা পেতে বাস কাউন্টার, টার্মিনাল ও যাত্রীদের পুলিশী সেবা নিশ্চিত করতে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ও জরুরী সেবা সংক্রান্ত নাম্বারসহ স্টিকার গনপরিবহন গুলোতে লাগানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। প্রতিটি থানায় চালু করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা হেল্প ডেস্ক,নারী ও শিশু হেল্প ডেস্ক সহ বৃদ্ধ পিতা মাতা এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হেল্প ডেস্ক। এছারাও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের জন্যও আলাদা হেল্প ডেস্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে জেলার মডেল থানাগুলোতে হেল্প ডেস্ক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে ও দাগী পলায়নকৃত আসামীদের ছবিসহ নাম ঠিকানা স্থানীয় থানা গুলোর পাশাপাশি ইউপি কার্যালয় বোর্ডে সাটানোর প্রস্তুতি চলছে।
ইতিমধ্যে মাদক জঙ্গী ও নারী শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সহ করোনা ভাইরাস সংক্রমন ঠেকাতে থানার ওসিদের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পর্যায়ে সচেতনতামুলক প্রচারনা ও কার্যকরি বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে। মানবিক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম’র নির্দেশে জেলার প্রত্যেকটি থানার জন-সাধারণের সমস্যা সমাধানে কাজ করছে পুলিশ। জেলার প্রত্যেক উপজেলার বাজারগুলোর চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটির সাথে জেলা পুলিশের আলোচনার মাধ্যমে সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে। এছারাও বাজার নৈশপ্রহরীদের মানোন্নয়নে পুলিশ কাজ করবে। করোনা কালিন সময়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নৈশপ্রহরীদের কম্বল ও খাদ্য সহযোগিতা দেয়া হয়েছিলো।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম জানান, চলমান পরিস্থিতিতে জেলা পুলিশের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছে।জেলা পুলিশকে মানবিক কাজে রুপান্তরিত করা হয়েছে। থানায় কোন মানুষ সেবা নিতে এসে হয়রানির শিকার যেন না হয়,সে বিষয়ে প্রত্যেক থানা পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার শ্লোগানে পুলিশী সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা অনুযায়ী জেলায় মাদক নির্মূলে নৌ-পথসহ বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত রয়েছে।যেকোন অনাকাংখিত ঘটনার দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে মূলরহস্য উন্মোচন করছে পুলিশের সদস্যরা । ইতিমধ্যে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্তে সফলতার নজিরও স্থাপন হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, জেলা পুলিশের কল্যাণে জিমনেসিয়াম লাইব্রেরী ও আধুনিক ক্যাফেটেরিয়া নির্মান এবং পুলিশ হাসাপাতালের উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে।পুলিশ সদস্যদের স্বাস্বসুরক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের কল্যাণে নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা, শীত ও করোনা সংকটে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় ও পুলিশ সুপারের উদ্যোগে কয়েক হাজার পরিবারকে শীতবস্ত্র ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।#
Leave a Reply