কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ন্যাশনাল টি কোম্পানীর মালিকানাধীন মাধবপুর চা বাগানের ১৮নং সেকশনের পাত্রখোলা লেইক অতিথি পাখিদের অভয়াশ্রম পরিণত হয়েছে। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গেই অতিথি পাখিরা দলে দলে আসছে। পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত লেইকটি। হিমেল বাতাসে সুনসান চা বাগানের ভিতরে সবুজের এক প্রাকৃতিক স্পট পাত্রখোল কৃত্রিম লেইক। চারদিকে চা বাগান বেষ্টিত এ লেকে এখন ফুটে থাকা পদ্ম আর পাখির ওড়াউড়ি, জলকেলি-খুনসুটি যেন চেনা দৃশ্য হয়ে উঠেছে। লেইকটি লোকচক্ষুর অন্তরালে হলেও প্রতিদিন ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। লেকের সৌন্দর্য্য রক্ষায় বাগান কর্তৃপক্ষ নিয়েছে আলাদা পাহারার ব্যবস্থা। কৃত্রিম এ লেইকটি ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চার দিকে উঁচু চা বাগান আর এক পাশে উঁচু টিলার বাঁকের লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ। নানা বর্ণের ছোট-বড় দেশীয় পরিযায়ী পাখি। সব মিলিয়ে পাত্রখোলা লেইক অভয়াশ্রমে অন্যরকম এক আবহ তৈরি হয়েছে। মাধবপুর সড়ক দিয়ে ফ্যাক্টরীর সামনের রাস্তা দিয়ে চা বাগানের ভিতরেই যেতেই দেখা মিলবে এদের। নিজেদের বাঁচার প্রয়োজনে এরা হাজার-হাজার মাইল পথ উড়ে বছরের এ সময়টাতে এখানে আসে। অনেকেই আবার দুুই-আড়াই মাস পর চলে যায়। কেউবা স্থায়ীভাবে থেকে যায়। পাখিদের মধ্যে রয়েছে কালকোর্ট, পানকৌড়ি, ধনেশ পাখি, সাপ পাখি, মচরংভূতি হাঁস, সাদা বক, লালচে বক, কাললেজ জহুরালীসহ নানা প্রজাতির অতিথি পাখি।
স্থানীয়রা জানান, সাধারণত শীতের মৌসুমে এখানে থাকে বলে সাধারণত ‘অতিথি পাখি’ বলেই এদের পরিচিতি। পাত্রখোলা পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো ও পানিতে ঝাঁপাঝাঁপিতে যেনো অন্যরকম সৌন্দর্যে সাজে লেকটি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ আর ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য দেখতে খুবই ভাল লাগে। সারাদিনই এখানে থাকে পাখি। তারা আরো জানান, অন্যান্য বছর ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে অনেক অতিথি পাখির সমাগম হয় এখানে। কিন্তু এবছর অতিথি পাখির পরিমাণ কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে। তবে শীত বাড়ার সাথে সাথে আরো অতিথি পাখি আসবে বলে তারা আশাবাদী। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা অতিথি পাখিদের বিরক্ত না করতে দর্শনার্থীদের প্রতি আহবান জানান তারা।
পাখি দেখতে আসা সজীব দেবরায়, আব্দুল আহাদ, সাইফুল ইসলাম, সুমন কৈরিসহ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, ‘এমন কাছ থেকে দেশের আর কোথাও অতিথি পাখি দেখা যায় না। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অতিথি পাখিদের অবাদ বিচরনের ব্যবস্থা করা হলে দিন দিন আমাদের দেশে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। অতিথি পাখি যাতে অবাধে বিচরন করতে পারে সে দিকে বাগান কর্তৃপক্ষ ও বনবিভাগের নজর রাখা উচিত।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) উপ-মহাব্যবস্থাপক শামছুল ইসলাম বলেন, মূলত শীত মৌসুমে চা গাছ ছাঁটাইকালে লেইক থেকে চাগাছে সেচ দেওয়া হয়। এই উদ্দেশ্যেই পাত্রখোলা চা–বাগানের ১৮ নম্বর সেকশনে লেইকটি করা হয়েছিল। লেইকটি করার পর থেকে শীত এলেই লেকে আগমন ঘটে অতিথি পাখির। পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো ও পানিতে ঝাঁপাঝাঁপিতে যেন অন্য রকম সৌন্দর্যে সাজে লেইকটি। লেইকের সৌন্দর্য্য রক্ষা ও অতিথি পাখি শিকার রোধে নেওয়া হয় পাহারার উদ্যোগ। শীতপ্রধান দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা অতিথি পাখিদের বিরক্ত না করতে দর্শনার্থীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply