কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারি/ক্রেডিট চেকিং/সার্টিফিকেট সহকারি ও নাজির পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার। এ নিয়োগ পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন ও চা শ্রমিকদের হেয় করে ছাপানো প্রশ্নের প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছে চা শ্রমিক ও শ্রমিক সন্তানরা। প্রশ্নের দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তির শাস্তির এবং ভুলের দায় নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা না করলে প্রয়োজনে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের দাবি।
বিভাগীয় নির্বাচনী বোর্ড নিয়োগ পরীক্ষা মৌল ১-২২ ছাপানো প্রশ্নে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের অধীন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক/ ক্রেডিট চেকিং কাম সায়রাত সহকারী/সার্টিফিকেট সহকারি ও নাজির পদে শুক্রবার ১ ঘন্টা ৩০ মিনিটে ১০০ নম্বরের এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষার ছাপানো ৬ নং প্রশ্নে ৫ নম্বরের জন্য ইংরেজীতে অনুবাদ করুন লেখা রয়েছে“ শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানী বলা হয়। শ্রীমঙ্গলে ৯২টি চা বাগান রয়েছে। শ্রীমঙ্গলের চা খুবই উৎপাদনে কুলিরা হাত দিয়ে পাতা সংগ্রহ করে। প্রক্রিয়াজাত চা পাতা থেকে চা উৎপন্ন করা হয়।
এ প্রশ্ন পেয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অংশ গ্রহনকারী চা শ্রমিক সন্তানরা ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিয়ে আসার পর নিজ নিজ চা বাগানে এসে প্রতিবাদ মুখর হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চা ছাত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দ, চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করে প্রতিবাদী হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা বাগানের চা-ছাত্র পরিষদের নেতা সজল কৈরী, চা বাগান থেকে প্রকাশিত মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতারাম বীন বলেন, বাংলাদেশের অর্থকরী শিল্প চা শিল্পের প্রাণই হচ্ছে চা শ্রমিকরা। তাদের পরিচয় হলো চা শ্রমিক। এ নামেই তাদেরকে সম্বোধন করা হয়। অথচ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নে লেখা রয়েছে চা খুবই উৎপাদনে কুলিরা হাত দিয়ে পাতা সংগ্রহ করে। কুলি আপত্তিকর একটি শব্দ। চা শ্রমিকদের হেয় করতেই এ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বলে তারা মনে করেন। আর তা একটি প্রশাসনিক কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় লেখা হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জানান তারা।
তারা আরও বলেন ৬ নম্বর প্রশ্নে আরও লেখা শ্রীমঙ্গলে ৯২টি চা বাগান রয়েছে। তা সম্পূর্ণ ভুল। মূলত পুরো মৌলভীবাজার জেলায় ৯২টি চা বাগান রয়েছে। এ ঘটনার জন্য চা শিল্পাঞ্চলে প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও তারা জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদরে ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা রাম ভজন কৈরী এ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নে আপত্তির শব্দ ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানান। একটি নিয়োগ পরীক্ষায় ভুল তথ্য, তারপর একটি পরিশ্রমী জাতিগোষ্ঠীকে হেয় করে কিভাবে কুলি আখ্যায়িত করা হয়েছে তা দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জবাব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারি শ্রম আইনে চা বাগামের কর্মীদের চা শ্রমিক সম্বোধন করা হয়েছে। আর শ্রম আইনের পরিপন্থী শব্দ কিভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যবহার করা হলো ? এর সুস্পষ্ট জবাব দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান তিনি। অন্যথায় চা শিল্পাঞ্চলে আন্দোলন শুরু হবে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের জানান, আমি এখনো প্রশ্নপত্র দেখিনি। আমরা শুধু পরীক্ষার্থীদের অ্যাকোমোডেশনের ব্যবস্থা করেছি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিনে নির্বাচন বোর্ড এই পরীক্ষা নিয়েছে। #
Leave a Reply