এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সপ্তম শ্রেণিতে মাদ্রাসায় পড়ুয়া নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে আফতাব আলী ওরফে চিনু মিয়াকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকালে উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের তার নিজবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই ইউনিয়নের গিয়াসনগর গ্রামের কাছিম আলীর ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে থানায় এক প্রেস ব্রিফংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক।
ওসি জানান, ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। দেড়মাস আগে তার মা কাজের উদ্দেশ্যে প্রবাসে যান। তিনি প্রবাসে যাওয়ার পর থেকে চিনু মিয়া তার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে নিজবাড়িতে থাকতেন। গত শনিবার (২২ এপ্রিল) রাতে তার সন্তানেরা খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ২টার দিকে মেয়েটি ঘুমে থাকা অবস্থায় চিনু মিয়া নিজ মেয়েকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি সোমবার (২৪ এপ্রিল) লস্করপুরে তার নানাবাড়িতে বিষয়টি জানালে রাতেই ধর্ষিতার নানি থানায় এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরই ধর্ষক চিনু মিয়ার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি আরও জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা (নং-২৭) দায়ের করা হয়েছে এবং ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। একেকজন একেক রকমের মন্তব্য করছেন। অনেকেই আবার বিষয়টিকে মেনে নিতে পারছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পার্শ্ববর্তী দু’জন মহিলা জানান, চিনু মিয়া ও তার স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিলো। আর এসব বিষয় নিয়ে একাধিকবার তিনি (চিনু মিয়ার স্ত্রী) বাপের বাড়িতে আটকা ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি স্বামীকে না জানিয়ে রমজানে প্রবাস চলে যান। তিনি প্রবাসে যাওয়ার সময় সন্তানদের বাপের বাড়িতে রেখে যেতে চেয়েছিলেন। সন্তানরাও বেশিরভাগই নানার বাড়িতে থাকতো। তবে, বিষয়টি নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ে আব্দুর রব মাহাবুব জানান, চিনু মিয়া ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিলো। আমি নিজেও একাধিকবার বিচার বৈঠক করে সমাধান করে দিয়েছি। এরপর হটাৎ রমজানে শুনলাম চিনু মিয়ার স্ত্রী প্রবাসে চলে গেছেন। তবে, আমার বিশ্বাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি বের করে আনবেন।
Leave a Reply