এইবেলা, বিশেষ প্রতিনিধি ::
কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডি ইউনিয়নে একটি ধর্ষণের ঘটনায় এলাকার জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন স্থানীয় লোকজন। গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) থেকে এ ঘটনা নিয়ে জমমনে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা কল্পনা চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার জয়চণ্ডি ইউনিয়ন থেকে মেয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পিতা চিনু মিয়া আটক হওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমের কিছু কর্মী নিয়ে থানায় প্রেসব্রিফিং করেন ওসি আব্দুস ছালেক। পরে ‘ওসি কুলাউড়া থানা’ পেইজসহ বিভিন্ন পেইজ থেকে ভিকটিমের নাম, পরিচয়সহ প্রেসব্রিফিংয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সচেতন মহলের অনেকেই পুলিশের এমন প্রেস ব্রিফিং নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ওইদিন রাতেই আবার সকল পেইজ থেকে ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অনেকেই দাবী করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসব্রিফিংকালে ওসি বলেন, ভিকটিমের নানির দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চিনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। চিনু মিয়া ঈদের দিন দিবাগত রাতে তার ১২ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ২-৩ দিন মেয়েকে নিজ ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন, যাতে কেউ ঘটনাটি জানতে না পারে।
এদিকে সরেজমিন জয়চণ্ডি ইউনিয়নের ওই এলাকায় গেলে ভিকটিমের বাড়ীর আশপাশের লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে ভিন্ন কথা বলছেন।
তারা জানান, চিনু মিয়া এবং তার স্ত্রী আয়েশা বেগমের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে মনোমালিন্য চলছে। এ নিয়ে ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান একাধিকবার শালিস বৈঠক করেছেন। সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ফের ঝগড়া-ঝাটি হলে দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান আয়েশা বেগম। এবং সেখান থেকে স্বামীকে না জানিয়ে তিনি বিদেশ পাড়ি জমান। এদিকে গত ২৬ রমজান (১৮ এপ্রিল) নানার বাড়ি থেকে মেয়ে দুটি তাদের পিতার বাড়িতে চলে আসে।
স্থানীয়রা আরও জানান, ঈদের আগের দিন চিনু মিয়া মেয়ে দু’টোকে নিয়ে কুলাউড়া শহর থেকে নতুন জামাকাপড় কিনে দেন। ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিন ভিকটিম নতুন জামাকাপড় পরে আশপাশের বাড়ি বেড়াতে যায়। সহপাঠী অনেকের সাথে খেলাধূলা করেছে। ঈদের পরদিন দুই মেয়েকে তাদের নানা বাড়িতে অটোরিকশায় করে পৌঁছে দেন চিনু মিয়া। তিনি দীর্ঘদিন থেকে অভিমান করে তার শ্বশুরবাড়ি যাননি।
তাহলে ভিকটিমকে কিভাবে ঘরে বন্ধি করে রাখা হলো এবং পুলিশ কোথা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করলো, এমন প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। শুধু তাই নয়, তাহলে কারা এই কিশোরী মেয়েকে রক্তাক্ত করলো? যদি ওই মেয়ে ধর্ষনের শিকার হয়ে থাকে তাহলে কে এই ঘটনার জন্য দায়ী? সে কেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে? কার ইশারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে? যদি ঘটনা মিথ্যে হয় তাহলে কি হবে ওই নিরপরাধ পিতার? কিভাবে তিনি মুক্তি পাবেন? এবং পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ে যে মেয়েটির পুরো পরিচয় তুলে ধরলো, সেই মেয়ে কিভাবে আবার সমাজে মুখ দেখাবে বা শিক্ষাকেন্দ্রে ফিরে যাবে। এসব ঘটনায় এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। ধর্ষনের ঘটনাকে এখন ধর্ষনের চেষ্টা এবং নিরপরাধ পিতাকে আসামি হিসেবে রাখার অপচেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে জয়চণ্ডি ইউপি’র চেয়ারম্যান আব্দুর রব মাহাবুব জানান, চিনু মিয়া ও তার স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল দীর্ঘদিন থেকে। আমি নিজেও শালিসের মাধ্যমে একাধিকবার বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। হঠাৎ শুনলাম চিনু মিয়ার স্ত্রী বিদেশ চলে গেছেন। তিনি সুক্ষ্ম তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার তথ্য উদ্ঘাটনের জোর দাবী জানিয়েছেন।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply