বড়লেখা প্রতিনিধি ::
বড়লেখা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদ বৃহত্তর বোবারথল গ্রামের ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি ঘূর্নিঝড় রেমাল প্রভাবে সৃষ্ট টানা ভারিবর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ধসে পড়েছে এলাকাবাসির অর্থায়নে নির্মিত চারটি কালভার্ট। এতে এলাকাবাসি চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরবর্তী বৃহত্তর বোবারথল গ্রামে রয়েছে একটি হাইস্কুল, চারটি প্রাইমারি স্কুল, দুইটি মাদ্রাসা, দুইটি উপজাতি পল্লী ও একটি বিজিবি ক্যাম্প। ওই এলাকায় অন্তত ১০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। তাদের প্রধান জীবিকা কৃষি। প্রতিদিন কৃষিপণ্য বিক্রয়ে উপজেলা সদরে যেতে গিয়ে বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এজন্য গত ৩/৪ মাস পূর্বে এলাকাবাসি চাঁদা তোলে ছোটলেখা-বোবারথল রাস্তাটি সংস্কার করেন। নিজেদের অর্থায়নে বেশ কয়েকটি কালভার্টও নির্মাণ করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘূর্নিঝড় রেমাল প্রভাবে সৃষ্ট টানা ভারিবর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা রাস্তা, কালভার্ট ও রাস্তায় সরকারিভাবে করা আংশিক ইটসলিং। এতে সেই আগের মতোই এলাকার সর্বস্তরের জনসাধরণ দুর্ভোগে পড়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাটির নালিখাই, কাঠালীগাছ ও চইলতারপুল নামক স্থানের চারটি কালভার্ট ভারিবর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে গেছে। ঢলের পানিতে ভেঙ্গেছে রাস্তা, উঠে গেছে ইটসলিং। এতে রাস্তাটি আবারও এলাকাবাসীর চলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মো. বদরুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগি ও সমাজসেবক ফখরউদ্দিন, সাবেক প্রধান শিক্ষক তৈমুছ আলী প্রমুখ জানান, বছরের পর বছর বোবারথলের লোকজন মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন। গত শুকনো মৌসুমে এলাকাবাসির অর্থায়নে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়। এছাড়া সরকারিভাবেও কিছু জায়গা ইটসলিং হয়। যার কারণে যাতায়াতের ক্ষেত্রে লোকজনের দীর্ঘদিনের কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়। কিন্তু ঘূর্নিঝড় রেমালের কারণে সৃষ্ট টানা ভারিবর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গা ভেঙ্গে গেছে। ধসে পড়েছে সদ্য নির্মিত চারটি কালভার্ট। উঠে গেছে রাস্তার ইটসলিং। ফলে আবারও বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ব্যবসায়ি আব্দুল হাছিব জানান, রাস্তা সংস্কার হওয়ায় ছোটলেখা বাজার থেকে বোবারথল বাজারে একবস্তা চাল নিতে খরচ হতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কিন্ত রাস্তা ধসায় ও কালভার্ট ভাঙ্গায় এখন ব্যয় হচ্ছে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। তার উপর রাস্তার দুরাবস্থার জন্য মানুষের ব্যয় বাড়ায় সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়িরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
এলাকাবাসীর দাবী সরকারিভাবে রাস্তার সংস্কার ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য যেন দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম সিকদার জয় জানান, রাস্তা সংস্কার ও কালভার্টগুলো এলাকাবাসির অর্থায়নে নির্মিত হয়ে থাকলে দেখভাল তাদেরকেই করতে হবে। তবে এই রাস্তাটির উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে রাস্তার সাথে কালভার্টগুলোও নির্মাণ করা হবে।
Leave a Reply