কমলগঞ্জে দুই চা-শ্রমিক নেতার স্মরণে শোকসভা কমলগঞ্জে দুই চা-শ্রমিক নেতার স্মরণে শোকসভা – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

কমলগঞ্জে দুই চা-শ্রমিক নেতার স্মরণে শোকসভা

  • রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০২০

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সুনছড়া চা-বাগানের প্রবীণ দুই শ্রমিকনেতা সুখরাম নায়েক ও সন্ন্যাসী নাইড়ুর মৃত্যুতে শোক সভা অনুষ্টিত হয়েছে। চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির উদ্যোগে রোববার বেলা ১২ টায় সুনছড়া চা-বাগানে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই দুই শ্রমিক নেতা পূর্ব পাকিস্তান চা শ্রমিক সংঘ ও ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির নেতা ছিলেন।

চা-শ্রমিক নেতা জিবাধন নায়েক এর সভাপতিত্বে ও চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক হরিনারায়ন হাজরার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোকসভার শুরুতে দুই চা-শ্রমিকনেতার স্মতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

শোকসভায় প্রয়াত সুখরাম নায়েক ও সন্ন্যাসী নাইড়–র সংগ্রামী জীবনের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতা রজত বিশ্বাস, সুনছড়া বাগানের চা-শ্রমিকনেতা দিবা শুক্ল বৈদ্য, স্যামুয়েল বেগম্যান, প্রশান্ত কৈরী, প্রয়াত সুখরাম নায়েকের ভাই বুধুরাম নায়েক, চাতলাপুর চা বাগানের নারায়ন নায়ক, লংলা বাগানের চা-শ্রমিকনেতা শিশুলাল লোহার প্রমূখ।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রবীন এই নেতারা সাহসী, দৃঢ়চেতা শ্রমিকনেতা হিসেবে চা-শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। দীর্ঘদিন যাবত তারা নানা রকম শারীরিক অসুস্থ্যতায় শয্যাশায়ী অবস্থায় গত ২ মে সন্ন্যাসী নাইডু ও ১০ অক্টোবর সুখরাম নায়েক সুনছড়া চা-বাগানের নিজ নিজ বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন।

সাম্প্রতিক চা শ্রমিকদের মজুরি চুক্তির প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, যখন বাজারে চাল, আলু, ডাল, পেঁয়াজের উর্দ্বমূল্য সেই সময়ে দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে কি করে একজন চা-শ্রমিক ৬ থেকে ৭ জনের পরিবার চালাবে? উপরন্ত শ্রমিকদের কাজের নিরিখ বাড়ানো ব্যাপারে ইউনিয়নের নেতারা চুক্তি করায় শ্রমিকদের মজুরি না বেড়ে আরও কমে যাবে।

সভায় বক্তারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের চা-শ্রমিকরা সবচেয়ে কম মজুরি পান উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ১৭৬ রূপি, আসামের চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ১৪৫ থেকে ১৬৭ রুপি, শ্রীলঙ্কায় দৈনিক ১ হাজার রুপি, নেপালে ২৭৮ রুপি, শীর্ষ চা উৎপাদনকারী দেশ চীনের শ্রমিকদের প্রদেশ ভিত্তিক নিম্নতম মজুরি ঘন্টা প্রতি ১৮ দশমিক ৪ থেকে ২৪ ইউয়ান (২৩৩ থেকে ৩০৫ টাকা)। করোনাকালে পশ্চিমবঙ্গেরর চা-বাগান বন্ধ থাকার পরও শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে দুর্গা পূজায় তাদের বোনাস ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশে এবং বোনাসের সিলিং বাড়িয়ে ১৪,৫০০ রুপি করা হয়।

বলাবাহুল্য অন্যান্য দেশসমূহের চা-শ্রমিকরা আমাদের থেকে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি পেয়ে থাকেন। অথচ বাংলাদেশে এর ভিন্ন চিত্র। সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ৬ থেকে ৭ জনের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য দৈনিক ৬৭০ টাকা মজুরিসহ চা-শ্রমিক সংঘের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews