এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেই অসহায় ক্যান্সার আক্রান্ত আদিবাসী (খাসিয়া) পরিবারটির জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ৯ নভেম্বর সোমবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রশাসন, র্যাব ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে অবৈধ দখল উচ্ছেদে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরী।
অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তানভীর হোসেন, র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গলের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, কুলাউড়া থানার এস আই আব্দুর রহিম জিবানসহ র্যাব ও পুলিশের প্রায় ত্রিশ সদস্যের একটি টিম।
সরেজমিন দেখা যায়, কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের কাটাবাড়ি পান জুমে সোমবার দুপুরে প্রশাসন, র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পান জুমের দখলকৃত ওই স্থানে পাহারা দেবার দুইটি ছাউনী ও একটি অর্ধ পাকা টিন শেডের ঘর ভেঙ্গে উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানকালে অবৈধ দখলদার প্রভাবশালী রফিক মিয়াকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের আসার খবর টের পেয়ে রফিক মিয়া ও তার সহযোগিরা পালিয়ে যায়। তবে দখলকৃত স্থানের একটি ঘরে থাকা দু’জন মহিলা শ্রমিককে আটক করে প্রশাসন। একজন হলেন কুলাউড়ার গাজীপুরের বাসিন্দা মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী লতিফা বেগম (৪১) ও কর্মধার টাট্টিউলি এলাকার বাসিন্দা মৃত তছির আলীর স্ত্রী রোমেনা বেগম (৩৮)।
তারা দু’জনেই জানান, গত দেড় মাস থেকে স্থানীয় রফিক মিয়া তাদের মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতন দিবে বলে এখানে শ্রমিকের কাজ করতে তাদের ভাড়া করে এনেছে। আটক ওই দুই মহিলাকে পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত মুচলেখা নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠাংয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
পান জুমের মালিক জসপার আমলরং বলেন, পান জুমের মালিক আমি। আমার বৈধ কাগজ পত্র আছে। অথচ ভূয়া দলিল দিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতের আধারে জোরপূর্বক প্রায় পাঁচ একরের পানের জুমটি দখল করে স্থানীয় টাট্টিউলি গ্রামের প্রভাবশালী প্রবাসী রফিক মিয়া। গত দেড় মাসে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার পান সে এই জুম থেকে বিক্রি করে আমার আর্থিক ক্ষতিসাধন করে। একমাত্র আয়ের উৎস পান জুমের টাকা দিয়েই তিন বছর ধরে নিজের ক্যান্সারের চিকিৎসাসহ পরিবার পরিচালনা করছি। এখন প্রশাসনের প্রচেষ্টায় আমার পানের জুমটি ফিরে পেলেও এখনো আমার মনে আতঙ্ক কাজ করছে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, খাসিয়াদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’পক্ষকে নিয়ে বসার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তুু দখলকারী রফিক মিয়া আসেননি, এমনকি রফিক মিয়া তার দলিলও দেখাননি। আমরা ওই দলিলের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য ঢাকা সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে পাঠাই। তাদের দেওয়া তথ্য মতে এই দলিলের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। এরপর জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করি এবং পান জুমের প্রকৃত মালিককে পানের জুম ফিরিয়ে দেয়া হয়#
এইবেলায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর সংবাদ প্রকাশিত হয়, শিরোনাম
https://eibela.net/2020/09/28/%e0%a6%a5%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be-%e0%a6%85%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%97-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%be/
Leave a Reply