এইবেলা, ওসমানীনগর :::
ওসমানীনগরে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০ শয্যার একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল সরকারের নিকট হস্তান্তর করার পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে এলাকায় একটি টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রবাসী কমিউনিটি নেতা গোলাম কিবরিয়া। ওসমানীনগর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রবাসী বালাগঞ্জ ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রস্টের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, অভিবক্ত বালাগঞ্জ উপজেলা থাকাকালিন সময়ে ওসমানীনগরে স্বাস্থ্যসেবা ছিলো অত্যন্ত নাজুক।
বিগত ২০০৪ সালে সাদিপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নূরপুরে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে তানিম হাসপাতাল নির্মাণ করি। প্রথমে ১০ বেডের হাসপাতাল নির্মাণ করে স্বাস্থ্য সেবা চালু করতে আরও ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। হাসপাতালে এম.বি.বিএস ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট, এলএমএস নিয়োগের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়নে বিগত ১৬ বছর ধরে এলাকার অসহায় মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করি। পরবর্তীতে আরো প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালে অক্সিজেন, আধুনিক অপারেশন থিয়েটার স্থাপনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করে হাসপাতালটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে পরিণত করি। বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে উদ্ভুদ্ধ হয়ে আমি উক্ত হাসপাতালটিকে সরকারের নিকট হস্তান্তর করেছি। গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে হাসপাতালের নামকরণ করা হয়েছে সাদিপুর ইউনিয়ন তানিম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এস এম শাহরিয়ার উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম কিবরিয়া বলেন, জনবহুল ওসমানীনগরে এখনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন না হওয়ায় এ উপজেলায় জনগণের স্বাস্থ্য সেবা উপেক্ষিত। অন্যদিকে তানিম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে ১০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল। তাই স্থায়ী ভবন নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত তানিম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে অস্থায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হিসাবে ঘোষণা করে এলাকার অবহেলিত মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে এলাকার শিক্ষিক ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে সাদিপুর ইউনিয়নের নূরপুরে একটি টেকনিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে সে লক্ষ্যে জায়গা নির্ধারণসহ শিগ্রই ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
গোলাম কিবরিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার সুবাধে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সাদিপুর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। পরবর্তীতের দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তে ওই নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করি। নির্বাচনে প্রার্থীতা না করলেও আমি এলাকার বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কাজে জড়িত রয়েছি। নিজস্ব অর্থায়নে এলাকার রাস্তা-ঘাট, স্কুল মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করছি। সাদিপুর ইউনিয়নের শেরপুর হতে সুরিকোনা ও ইসলামপুর (ভায়া) কুশিয়ারা ডাইকের রাস্তা প্রশস্ত করণ, বেগমপুর হতে জগন্নাথপুর পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার, নদী ভাঙ্গনরোধ, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে রাস্তায় সিএনজি গাড়ি চলাচলের বিধি নিষেধ থাকায় নুরপুর হতে হলিমপুর (ভায়া) ঊনিশ মাইল পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন।
কৃষি নির্ভর এলাকায় সেচ ব্যবস্থা, ড্রেইন নির্মাণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কৃষির উন্নয়ন, স্যানিটেশন, নারী উন্নয়ন, যুব সমাজ উন্নয়ন ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমি যথাসাধ্য ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতা পেলে এই উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন সম্ভব বলেই আমি মনে করি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুূল হক চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান গয়াছ মিয়া, সমাজসেবী হাজী গৌছ মিয়া, শাহ নূরুর রহমান সানুর, আলাউর রহমান আলা, ফারুক মিয়া, লুৎফুর রহমান, আপ্তাব আলী, আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।#
Leave a Reply