কমলগঞ্জে লাঘাটা নদী খনন : কৃষক মনে স্বস্তি কমলগঞ্জে লাঘাটা নদী খনন : কৃষক মনে স্বস্তি – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখায় জাতীয় সামাজিক সংগঠন নিসচা’র মানববন্ধন আত্রাইয়ে উপজেলা পরিদর্শণ করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার কুলাউড়ায় প্রান্তিক এলাকায় নারীদের উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার- কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়ন ওয়াটসান কমিটির ওয়াশ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন বার্সেলোনায় সীফুড এক্সপো গ্লোবালে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : কুলাউড়ায় চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের ৩ শীর্ষনেতা বোরো ধানের সোনালী শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন বড়লেখায় যুব ফোরামের অর্ন্তভূক্তিকরণ সভা রাজারহাটে শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে স্থানীয় স্টেক হোল্ডারদের সাথে সংলাপ ওসমানীনগরে বিদ্যুৎপৃষ্টে স্যানেটারী মিস্ত্রির মৃত্যু

কমলগঞ্জে লাঘাটা নদী খনন : কৃষক মনে স্বস্তি

  • শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ ::

এক সময়ের বৃহত্তর সিলেটের শস্যভান্ডার খ্যাত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল এলাকার কৃষকদের বহুল প্রতিক্ষিত লাঘাটা নদী খননের কাজ দু’বছর ধরে চলছে। কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত লাঘাটা নদীর খনন কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। কাজ শুরু হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিলেও নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর লাঘাটা নদীর খনন শুরু হয়। তবে নদী খননের দাবীতে দীর্ঘদিন ধরে এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সভা, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানসহ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছেন।

কৃষকরা জানান, ফি বছর ভারী বর্ষন, পাহাড়ি ঢল ও নদী ভাঙ্গনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন কমলগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের পতনঊষার, শমসেরনগর, মুন্সীবাজার ইউনিয়ন এবং রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের কৃষকরা। তারা বোরো, আউশ, আমন, সবজি ক্ষেত হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েন। এ থেকে উত্তরণের জন্য পানি নিস্কাশনের একমাত্র রাস্তা লাঘাটা নদী খনন ও সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। সভা, সমাবেশসহ নানা ধরণের কর্মসূচী পালন করেন তারা।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সনে লাঘাটা নদী খননের জন্য সার্ভে কাজ সম্পন্ন হয়। নানা জটিলতায় খনন কাজ কিছুটা বিলম্বে শুরু হয়।

দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের লাঘাটা নদীর উৎসস্থল পর্যন্ত ২৪ কি.মি. খনন কাজ চলবে। ১১ দশমিক ৮শ’ মিটার ও ১২ দশমিক ৮৩০ মিটার মিলিয়ে ২৪ দশমিক ৬৩০ মিটার খনন কাজ হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএএসআই এন্ড ইশরাত এন্টারপ্রাইজ জয়েনভেঞ্চার ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নিম্নাঞ্চল এলাকার খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শমশেরনগর এলাকায় অপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ করছে।

লাঘাটা নদীকে ঘিরে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, আলীনগর, শমসেরনগর ও পতনঊষার মুন্সীবাজার ইউনিয়ন একাংশ এবং রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন একাংশের কৃষকরা কৃষি চাষাবাদ ও প্রাকৃতিক মাছ আহরণ করেন। কৃষি ও মাছ আহরনের মধ্যদিয়ে অসংখ্য পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে ফি বছর নদী ভাঙ্গন, পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানি নিস্কাশনের একমাত্র পথ পতনঊষারের কেওলার হাওরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত লাঘাটা নদী। নদীটি রাজনগর উপজেলায় মনু নদীতে পতিত হওয়ায় বন্যা ও জলাবদ্ধতার পানি মনু নদীতে গড়ি যায়।

দীর্ঘদিন ধরে লাঘাটা নদী ভরাট, ঝোপজঙ্গল, পলিবালি ও নানা অত্যাচারে নদী সংকোচন হয়ে খালে পরিণত হয়। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশন হতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়। এতে জলাবদ্ধতায় ধানী জমি ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা।

কমলগঞ্জে হাওর ও নদী রক্ষা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি দুরুদ আলী, সদস্য সচিব তোয়াবুর রহমান তবারক, মৌলভীবাজার কৃষক সংগ্রাম সমিতির নেতা রমজান আলী বলেন, গত কয়েক বছরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও আমাদের পক্ষ থেকে ইউএনও, জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আমরা স্মারকলিপি প্রদান ও সভা সমাবেশ করেছি। নদী খনন, সংস্কার ও ড্রেজিং না করার কারনে নদী সংকোচন হয়ে পড়েছিল। ধলাই ও লাঘাটা নদীর প্রশস্ত ও গভীরতা কমে যাওয়া, দু’পাশে ঝোঁপজঙ্গল ও গাছ গাছালিতে ভরপুর হয়ে উঠা, বসতি স্থাপন এবং অসাধু মাছ শিকারী চক্রের স্থানে স্থানে ফেলা বাঁশের খাঁটি (বেড়া) ও বাঁধ দেয়ার ফলে পানি নিস্কাশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।

লাঘাটায় খনন শুরু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন না হলে আবারও কৃষকদের ক্ষতি বয়ে আনবে। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম, পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তওফিক আহমদ বাবু, হাওর ও নদী রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড সিকন্দর আলী পৃথক পৃথকভাবে লাঘাটা নদীর খনন কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজের ক্রুটি বিচ্যুতির কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, গত বছর থেকে সরকারি উদ্যোগে নদীর খনন কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষের উপকারে আসবে। আমরা নিয়মিত তদারকি করছি। রাজনগর অংশে একজন ও কমলগঞ্জ অংশে একজন দুইজন ঠিকাদারের মাধ্যমে খনন কাজ হচ্ছে। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, সাবেক চিফ হুইপ ও অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ জানান, কৃষকদের বহুল প্রতিক্ষিত লাঘাটা নদীর খনন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার এটি একটি কাজ। এলাকার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা লাঘাটা নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছি। খনন কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিজে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি ও নিয়মিত তদারকি করছি। ফলে কৃষি চাষাবাদ, বন্যা ও জলাবদ্ধতাসহ নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা উপকৃত হবেন।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews