এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সৌদি আরব প্রবাসী মর্তুজ আলীর পরিবারকে পঞ্চায়েত থেকে বাদ দেয়া ও তাঁর বসত ঘরে জোরপূর্বক বিদ্যুতের মিটার সংযোগ না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে প্রবাসী মর্তুজ আলী ও তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম প্রতিকার চেয়ে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরী ও পৃথক পৃথক দুটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আছদ্দর আলীর ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী মর্তুজ আলী (৪৬)। তিনি ৬ বছর আগে সৌদিআরবে যান। একমাস আগে তিনি দেশে ফিরেন। তাঁর ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের বাসিন্দা চেরাগ মিয়ার ছেলে স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফখর উদ্দিনসহ পঞ্চায়েতের অন্যান্য লোকজন প্রবাসী মর্তুজের পরিবারের সকল সদস্যকে পঞ্চায়েত থেকে বাদ দিয়েছেন। স্কুল, মসজিদে পড়–য়া প্রবাসীর ছেলে-মেয়েদের মসজিদে যাওয়া নিষেধ করেন এবং রাস্তাঘাটে প্রবাসীর পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন ফখর মিয়া গং।
এমনকি প্রবাসী মর্তুজের বসত ঘরে বিদ্যুতের মিটার লাগানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন মিটার সংযোগ দিতে চাইলে তাদের ফিরিয়ে দেয় ফখর মিয়া গং। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানদেরকে অবগত করলে তারা অভিযুক্তদেও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী মর্তুজের পিতা আসদ্দর আলী কুলাউড়া বিউবো’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে জোরপূর্বক বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ার বিষয়ে ফখর মিয়াকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগও দেন। বিষয়টি নিয়ে ৯ মার্চ ও ২০ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দুটি লিখিত অভিযোগ দেন প্রবাসীর স্ত্রী রহিমা বেগম।
ভুক্তভোগী প্রবাসী মর্তুজ আলী বলেন, ফখর মিয়া পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। আমার সাথে তাঁর পূর্ব বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে আমার পরিবারকে পঞ্চায়েত থেকে বাদ দেয় ফখরসহ পঞ্চায়েতের লোকজন। আমার বাড়িতে বিদ্যুতের মিটার সংযোগ দিতে চাইলে তারা বাঁধা দেয়ায় আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার গেলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। আমি নিরুপায় হয়ে ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।
স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত ফখর মিয়া হুঙ্কার দিয়ে বলেন, আমাকে অহেতুক বিরক্ত করবেন না। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না এটা এলাকার অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনার কিছু জানতে হলে সরেজমিন এলাকায় আসুন চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলুন।
ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার দু’পক্ষকে নিয়ে বসেছি। আমি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছি তা প্রবাসী মর্তুজ মানেননি। এলাকার লোকজন গ্রামের সবার কাছ থেকে চাঁদা তুলে অনেক টাকা খরচ করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। তখন মর্তুজ আলী এলাকাবাসীর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কোন টাকা দেননি বিদ্যুৎ সংযোগও নেননি। এখন তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাইলে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ সংযোগের চাঁদা বাবদ ২০ হাজার টাকা স্থানীয় মসজিদের উন্নয়নের জন্য দেয়ার কথা বলেন। কিন্তুু তিনি সামান্যতম টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেননি বরং উল্টো বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, প্রবাসীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধান করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান না হলে আমরা সমাধান করবো।#
Leave a Reply