এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভাবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় মনু নদীতে ০৭ নভেম্বর সোমবার থেকে ৩দিন ব্যাপী মাছ ধরা উৎসব ‘মাছ হাট’ উৎসব শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন এ মাছ ধরা উৎসবকে ‘মাছ হাট ’ উৎসব বলে থাকেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌখিন ও পেশাদার মাছ শিকারিরা জড়ো হয়েছে মনু নদীতে মাছ ধরতে।
মনু নদীর হাজিপুর ইউনিয়নের মনু এলাকার মাহতাবপুর থেকে সোমবার থেকে মাছধরা শুরু হয়েছে। মনু নদীর পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বেলেরতল নামক স্থান পর্যন্ত মাছ শিকার চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত । সকালে বিভিন্ন এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে হই হুল্লোড় করে জাল নিয়ে নদীতে নেমে মাছ শিকার শুরু করেন। নদীর বিভিন্ন বাঁকে স্থানীয় ভাষায় ‘ডহর’ রয়েছে সেসব স্থানে তিনদিন ব্যাপী এ হাট উৎসব অনুষ্টিত হয়।
সৌখিন মাছ শিকারি অনেকের জালে নানা প্রকারের দেশী মাছ ধরা পড়ছে। মাছ ধরে সবাই আনন্দিত। হাট উৎসবে কেউ কেউ দেখতে আবার কেউ কেউ মাছ ক্রয় করতে আসেন। এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
হাজারো সৌখিন ও পেশাদার শিকারী একসাথে আনন্দ করে পলো, কুচা, ঝাকি জাল, প্লেন জাল, টানা জাল নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে নামেন। কেউ নৌকা করে, কেউ কলাগাছের ভেলায় চড়ে, কেউ বা নদীতে নেমে মাছ ধরেন। এ যেন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। সবাই আনন্দে মেতে উঠে মাছ শিকার নিয়ে। এদৃশ্য দেখতে দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এসে জড়ো হন। কেহ আসেন মাছ শিকার দেখতে, কেহ বা আসেন মাছ বিক্রি হলে ক্রয় করতে।
প্রথম দিন মনু রেল সেতুর পূর্ব স্থান থেকে শুরু হয় মাছ ধরা। জালে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আইড়, ঘাঘট, বোয়াল, রুই, কালো বাউশ, বাছা, লাড়িয়া, বাশপাতা সহ নানাজাতের দেশীয় মাছ। সৌখিন মাছ শিকারী ছাড়া অন্য অনেকেই মাছ শিকার করে নিজের চাহিদার অতিরিক্তটা সেখানে বিক্রি করে থাকেন।
প্রতি বছর কুলাউড়ায় মনু নদে এ উৎসবটি পালন করা হয়। ভারতের কাছাকাছি জায়গার ডহরগুলোতে মাছ ধরার মধ্য দিয়ে শেষ হয় মাছ ধরা উৎসব। এখানকার বিভিন্ন বাড়িতে আত্মীয় স্বজন এসে জড়ো হন মাছ শিকার দেখতে। মুলত শীতের শুরুতে মনু নদীতে মাছ ধরা উৎসব হয়ে থাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার লোকজন এসে মাছ ধরায় অংশ নেন।
হাজিপুরের বাসিন্দা আলম সাইফুল জানান, মনু নদীর মাছ সুস্বাদু ও সতেজ থাকায় মানুষের আকর্ষণ বেশি থাকে। বিভিন্ন প্রজাতির সতেজ মাছ একসাথে পেয়ে ক্রেতারা খুশি হন অন্যদিকে ভালো দামে মাছ বিক্রি করে বিক্রেতারাও লাভবান হন।#
Leave a Reply