সরকার কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত-
এইবেলা, কুলাউড়া :: কুলাউড়া সাবরেজিস্টার গত ১১ ডিসেম্বর থেকে ২০ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ কর্মদিবসে দায়িত্ব পালন না করায় সরকার রাজস্ব হারিয়েছে কোটি টাকারও বেশি। নিরাপত্তার অযুহাতে গত ১০ ডিসেম্বর কুলাউড়া থানায় একটি ডায়রি করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
কুলাউড়া সাবরেজিস্ট্রি অফিস সুত্রে জানা যায়, একদিন দলিল রেজিস্ট্রি হলে তা থেকে সরকার কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা রাজস্ব পায়। সেই হিসেবে ৮ কর্মদিবসে সরকার দেড় কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব হারিয়েছে। দলিল রেজিস্ট্রি করতে পেরে জমি ক্রেতা বিক্রেতারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নারী পূরুষরা জমি বিক্রি করতে এসে দলিল করতে না পেওে ফিরে যাচ্ছেন হতাশা নিয়ে।
দলিল লেখকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ০৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দলিল রেজিস্ট্রি করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ ভূমি মালিকরা সাব রেজিস্টার সাইফুল আলমকে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ ঘটনার পরদিন ০৯ ডিসেম্বর শুক্রবার তিনি কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে তিনি দলিল লেখকদের অভিযুক্ত করেন।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে দলিল লেখকরা জানান, ভূমি মালিকরা তাকে অবরুদ্ধ করার আগে কুলাউড়ায় তিনি ৩ সপ্তাহ তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অনেক দলিল রেজিস্ট্রিও করেছেন। কিন্তু টাকার পরিমান বাড়ানোর জন্য তিনি নানা অযুহাত দাঁড় করান এবং দলিল রেজিস্ট্রিতে অনিহা প্রকাশ করেন। বিষয়টি জেলা রেজিস্টারকেও তারা অবগত করেন। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়। আরও ক্ষুব্ধ হন। বায়া দলিল ও ৫৬ থেকে দলিলের রেফারেন্স দাবি করেন। আসলে এসব কোন অযুহাতই নয়। এ নিয়ে দলিল লেখকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সাবরেজিষ্টারের থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়রি প্রসঙ্গে কুলাউড়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বিমলেন্দু রায় চৌধুরী জানান, ভূমির মালিকরা উনার সাথে খারাপ আচরণ করেছে। এখন উনি দলির লেথকদের দায়ী করছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে আমাদের লোকজনকে সাথে নিয়ে জেল্ ারেজিষ্টারের সাথে কথা বলবো। অবিলম্বে একজন সাবরেজিস্টার পদায়ন না করলে সরকারের রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে না।
এদিকে ঘটনার পর থেকে কুলাউড়া উপজেলার সাবরেজিষ্টার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইফুল আলম আর কুলাউড়ায় দায়িত্ব পালনে আসেননি। তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কুলাউড়া থানায় দায়েরকৃত সাধারণ ডায়রির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনির এ সংক্রান্ত কোন কথা বলতে রাজি হননি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তদন্তক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাকি বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বলতে পারবেন।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার জানান, জেলার সভায় বিষয়টি নিয়ে জেলা রেজিষ্টারর সাথে আলোচনাও হয়েছে। কুলাউড়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ সাবরেজিষ্টার দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কুলাউড়া একটি বৃহৎ উপজেলা একদিন দলিল রেজিষ্ট্রি বন্ধ থাকলে সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হয়।#
Leave a Reply