কমলগঞ্জে চা বাগানে প্রতিবন্ধি নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠান কমলগঞ্জে চা বাগানে প্রতিবন্ধি নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠান – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কমলগঞ্জে পূবালী ব্যাংকের ইসলামী কর্ণার উদ্বোধন একদিনের রিমান্ডে সাবেক কৃষি মন্ত্রী আব্দুস শহীদ কুলাউড়ায় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা : প্রধান শিক্ষক শ্রীঘরে কুলাউড়ায় স্বামী পরিত্যক্তা গৃহবধু ধর্ষণের অভিযোগ : আটক ১ আত্রাইকে পরিচ্ছন্ন উপজেলা গড়তে দৃঢ় প্রত্যয়ী ইউএনও কামাল হোসেন নিটার ব্যাচওয়াইজ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪ এর চ্যাম্পিয়ন দশম ব্যাচ সমাধান হচ্ছে নিটারের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জটিলতা কমলগঞ্জে চারণ কবি গীতিস্বামী গোকুলানন্দ সিংহ’র ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন কুলাউড়ায় প্রতিবন্ধিকে ধর্ষণের অভিযোগে ৭০ বছরের বৃদ্ধ শ্রীঘরে! কমলগঞ্জে ডিবির অভিযানে ভারতীয় মদসহ আটক ১ জন

কমলগঞ্জে চা বাগানে প্রতিবন্ধি নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠান

  • শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে ‘চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধি উন্নয়ন পরিষদ’র সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিবন্ধি নারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। সংগঠনটির এই উদ্যোগ চা বাগানের অসহায় প্রতিবন্ধি নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। প্রতিবন্ধি চা শ্রমিক সন্তান উত্তম যাদব এর নিজ উদ্যোগে দু’বছর ধরে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে প্রতিবন্ধি নারীরা আত্মকর্মসংস্থানে নিজেরা পথ খুঁজছে। ইতিমধ্যে চা বাগানের ৩০ জন নারী সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে নিজ নিজ বাসায় কাজ করছে।

শমশেরনগর চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধি উন্নয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, চা বাগানে প্রতিবন্ধিদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলায় ২৪টি চা বাগানে ৫১৩ জন প্রতিবন্ধি রয়েছে। এই প্রতিবন্ধিরা দু:সহ অবস্থায় জীবন ধারণ করছে। তাদের জীবনমান উন্নয়নে ও আত্মপ্রতিষ্ঠায় সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০২১ সনের ৭ জানুয়ারি থেকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। ইতিমধ্যে চা বাগানের ৩০ জন নারী সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে নিজ নিজ বাসায় কাজ করছে। দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জন নারীকে নিয়ে ৫০ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু হয়।

চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধি উন্নয়ন পরিষদ সভাপতি উত্তম যাদব বলেন, প্রতিবন্ধিদের অনেকেই বোঝা মনে করে। আমি নিজেও একজন প্রতিবন্ধি। তাই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পর থেকে চা বাগানের প্রতিবন্ধীরা যাতে ঘরে বসে আয় করতে পারেন সেজন্য সেলাই প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। যাতে প্রতিবন্ধি প্রত্যেকেই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠে। প্রতিষ্ঠানে ১০টি সেলাই মেশিনে প্রতিদিন ১৫ জন করে দু’শিফটে ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সেলাই প্রশিক্ষণ সেন্টার এর প্রশিক্ষক শমশেরনগর চা বাগানের শ্রমিক সন্তান অসীম পাল অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধি উন্নয়ন পরিষদ থেকে তাঁকে প্রায় ৬/৭ হাজার টাকা মাসিক সম্মানী প্রদান করা হয়।

উত্তম যাদব আরও বলেন, অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে আরও নতুন সেলাই মেশিন ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম পরিষদের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ নেয়া এক প্রতিবন্ধি নারীকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন।

এছাড়া শমশেরনগর ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে নগদ ১০ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। এছাড়া জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস এর প্রচেষ্টায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নাগরিক উদ্যোগ কর্তৃক ৩০টি সেলাই মেশিন বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিপূর্বে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিনের মাধ্যমে ৩০ জন প্রতিবন্ধি নারীকে ৩০টি কম্বল প্রদান ও করোনাকালীন সময়ে ৩০ জন প্রতিবন্ধির জন্য জনপ্রতি এক হাজার টাকার খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়। এছাড়া আর কোন সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক ও চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, চা বাগানের প্রতিবন্ধীদের উদ্যোগে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই প্রতিষ্ঠান নারী প্রতিবন্ধীদের সমাজের সম্পদ হিসাবে গড়তে চায়। এজন্য সরকারি উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে প্রতিষ্ঠানটি উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করবে।

প্রতিবন্ধি চা শ্রমিক সন্তান উত্তম যাদবের নিজ চেষ্টায় গড়ে তোলা সংগঠন চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধি উন্নয়ন পরিষদ। এ পরিষদের মাধ্যমে চা বাগানের প্রতিবন্ধিদের উন্নয়নে ও নিজেদেরকে কর্মমুখী করতে কাজ করছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে প্রতিবন্ধী নারীরা বোঝা নয় সম্পদে পরিণত হবে বলে মনে করেন সুশীল সমাজের লোকজন।

কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম বলেন, সেলাই প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রতিবন্ধি নারীরা সংগ্রামী ও ত্যাগী। তারা সংগ্রাম করছে। তাদের সাফল্য সমাজের অন্য নারীদের পথ দেখাবে। সেজন্যই নারীকে এখান থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধি উন্নয়ন পরিষদ প্রতিবন্ধি নারীদের জন্য শমশেরনগর চা বাগানে এর সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগে। প্রতিবন্ধি নারীদেরে উন্নয়নে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানে আমরা সচেষ্ট আছি।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews