নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: উত্তর জনপদে শীত আসলেই শুরু হয় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শেষে গুড় তৈরির প্রস্তুতি। এরই ধারাবাহিকতায় নওগাঁর আত্রাইয়ে খেজুর রসের লালি ও গুড় তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীতের আমেজের সাথে যেন খেজুরের লালি ও গুড়ের কদর বেড়ে যায়। তাই শীতের শুরু থেকেই গাছিরা প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন খেজুর রসের লালি ও গুড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার শাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রেললাইনের পাশে দেখা মেলে সারি সারি খেজুর গাছের। এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু করেছেন গাছিরা। এক সময় এলাকার লোকজনই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করলেও এখন এসব গাছ চুক্তি ভিত্তিতে দেয়া হয় অন্য এলাকার গাছিদের। শাহাগোলা গ্রামের প্রায় দুইশত খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পান্নাপাড়া সোনাদহ গ্রামের জাহিদ হোসেন (৫৬), লিটন (৪০) ও বিলুল (৪৫)।
গাছি জাহিদ এ প্রতিবেদককে জানান, তাদের এলাকার অনেক গাছি শীত মৌসুমে এ এলাকায় খেজুর রস সংগ্রহের জন্য এসে থাকেন। এবারেও অনেকেই এসেছেন। তারা তিনজন শাহাগোলা গ্রামের খেজুর গাছ চুক্তি ভিত্তিক মালিকের কাছ থেকে নিয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় দুইশত খেজুর গাছ থেকে ৬-৭ মণ রস নামে। এ রস জাল করলে প্রায় দেড়মণ গুড় হয়। গুড়গুলো নওগাঁসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করে যে অর্থ আসে তাতে তারা খুশি। শীত মৌসুমের শুরুর দিক নভেম্বর মাস থেকে মার্চ এপ্রিল ৫ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত রস সংগ্র করা যায়। আর এ রস জাল করে লালি বা গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রির অর্থ দিয়ে প্রায় সারা বছর পরিবার পরিজন নিয়ে জিবীকা নির্বাহ করেন তারা।
শাগাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার বলেন, আমরা ছোট বেলায় দেখেছি আমাদের এলাকার গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে বাজারে রস বিক্রি করতো। এখন কালের বিবর্তে এলাকার গাছিরা আর খেজুর রস সংগ্রহ করে না। গাছগুলো বছের পর বছর পরিত্যক্ত থাকতো। গত কয়েক বছর থেকে অন্য এলাকার গাছিদের কাছে আমরা চুক্তি ভিত্তিক গাছগুলো দিয়ে দিয়ে দিচ্ছি। এতে করে গাছগুলোরও পরিচর্যা হচ্ছে আবার বাড়তি অর্থও আমরা পাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, খেজুর গাছ একটি লাভজনক গাছ। এ গাছের পরিচর্যা করলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে।
এদিকে উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে। #
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply