ভূ-মধ্যসাগরে নৌকাডুবির ২বছর :বড়লেখার নিখোঁজ জুয়েলের ফেরার আশায় পরিবার – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাত- বড়লেখা উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক বরখাস্ত, বিভাগীয় মামলা বড়লেখায় নবপল্লব প্রকল্পের ‘প্রকল্প অবহিতকরণ’ সভা একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে : শফিকুর রহমান আধ্যাত্মিক, মানবিক দর্শন ও লোক ক‌বি সাধক হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী আজ আজ বড়লেখা মুক্ত দিবস : মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আলোচনা সভা প্রয়াত ডা. পবন চন্দ্র দেবনাথের ছোট ভাই ব্রজেন্দ্র দেবনাথ আর নেই কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান

ভূ-মধ্যসাগরে নৌকাডুবির ২বছর :বড়লেখার নিখোঁজ জুয়েলের ফেরার আশায় পরিবার

  • সোমবার, ১৫ মার্চ, ২০২১

Manual8 Ad Code

আব্দুর রব, বড়লেখা ::

Manual3 Ad Code

বড়লেখায় পরিবারের সাথে প্রায় দুই বছর পূর্বে সর্বশেষ কথা হয় লিবিয়ায় ভূ-মধ্যসাগরে নিখোঁজ জুয়েল আহমদের। মায়ের সাথে বলা সেই ফোনালাপে জুয়েল জানায় ‘মা আমি বোটে উঠে গেছি। আমার জন্য দোয়া করো। ইতালি পৌঁছার পর কথা হবে।’ এই যে শেষ কথা হয়েছিলো, এরপর আর কোন কথা হয়নি জুয়েলের সাথে। তারপর থেকে নিখোঁজ উপজেলার সীমান্তবর্তী উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছাতারখাই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে জুয়েল আহমদের।

ছেলে নিখোঁজের প্রায় ২ বছর পার হলেও এখনো জুয়েলের অপেক্ষায় প্রহর গুনেন তার বাবা জামাল উদ্দিন ও মা জমিলা বেগম। প্রতি ওয়াক্ত নামাজে অশ্রুসিক্ত নয়নে ছেলের ফিরে আসার মোনাজাত করেন। তবে ছেলে আদৌ বেঁচে আছে কিনা তাও জানেননা তারা। জুয়েল সাগরে ডুবে মারা গেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারলেও এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা।

বিবিসি বাংলার তথ্য মতে, ২০১৯ সালের ৯ মে গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। গভীর সাগরে তাদের বড় নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোটো একটি নৌকায় তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়। এরপর নৌকায় থাকা ৬০ জন অভিবাসী মারা যান। যার অধিকাংসই বাংলাদেশি। এর দুই দিন আগে বাবা মায়ের সাথে সর্বশেষ কথা হয় জুয়েলের। পরিবারের ধারণা সেই নৌকায় জুয়েলও ছিলেন। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে তিনি মারা গেছেন তবে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Manual7 Ad Code

পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, নিজেদের ইচ্ছা না থাকলেও পাশের গ্রামের দালাল নাসির উদ্দিনের জুরাজুরিতে ইউরোপের উদ্দেশ্যে জুয়েলকে লিবিয়া পাঠান তারা। ২০১৮ সালের ৫ মে লিবিয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ে জুয়েল। এরপর ৭ মে লিবিয়ায় পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছার পর কথা অনুযায়ী দালাল নাসিরকে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এরপর ৩ মাসের ভিতরে লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানোর কথা থাকলেও দালাল নাসির টালবাহানা শুরু করে। কিছুদিন পর লিবিয়ার মাফিয়ারা জুয়েলকে জিম্মি করে নির্যাতন চালায়। তারা পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করলে পরিবারের পক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা দিতে রাজি হলে তারা তাথে সম্মতি প্রকাশ করে। এরপরও জুয়েলকে তারা ইতালি পাঠায়নি। কেটে যায় দেড় বছর। পরে লিবিয়ায় থাকা অবস্থায় জুয়েলের এক বন্ধুর মাধ্যমে বিশ্বনাথ উপজেলার পারভেজ নামে আরেক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয়। পারভেজ ইতালিতে থাকেন। সেও জুয়েলকে ইতালি নেয়ার জন্য আড়াই লাখ টাকা নেয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে পারভেজের বাবা রফিক উদ্দিনের হাতে নগদ আড়াই লাখ টাকা তুলে দেন জুয়েলের বাবা। এরপর গত ২০১৯ সালের ৯ মে নৌকাযোগে জুয়েলসহ অনেকে ইতালিতে উদ্দেশ্যে রওয়ান দেন। রওয়ানা দেয়ার দুদিন পর খবর আসে লিবিয়ার উপকূলে ৭৫ জন অভিবাসীসহ একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।পরিবারের ধারণা সেই নৌকায় জুয়েলও ছিলেন।

নিখোঁজ জুয়েলের বাবা জামাল উদ্দিন কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি জানান, জুয়েলকে ইউরোপ পাঠানোর খবর শুনে নাসির দালাল তার বাড়িতে আসেন। এসে জুরাজুরি করে আর জুয়েলের ইচ্ছায় প্রথমে তাকে লিবিয়া পাঠায় নাসির। তিন মাসের ভিতরে লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানোর কথা থাকলেও তারা দেড় বছরেও ইতালি পাঠাতে পারেনি। এরপর ২০১৯ সালের ৯ মে অন্য এক দালালের মাধ্যমে ইতালির উদ্যেশ্যে নৌকায় যাত্রা করে জুয়েল। কিন্তু দূর্ভাগ্যবসত সেই নৌকা ডুবে যায়। এরপর থেকে জুয়েলের আর খুঁজ মেলেনি। এই বলে চোখ মুছেন জুয়েলের বাবা। জুয়েলের বাবা আরও জানান, তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ছিলেন। নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ছেলেকে ইউরোপ পাঠাতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেই স্বপ্ন সাগরে ধুলিসাৎ হয়ে গেলো।

Manual6 Ad Code

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি আরো জানান, জুয়েল সদ্যবিবাহিত। তার একটি সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানকে নিয়ে জুয়েলের কত স্বপ্ন ছিলো। সেই স্বপ্ন পুরন হলো না। জুয়েলের সন্তান ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। তাকে তার বাবার কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলে বাবা বিদেশে থাকেন। কিন্তু সে তো জানে না তার বাবা হয়তো আর ফিরবে না। ইউরোপের স্বপ্নে অকালে হারিয়ে গেলো ছেলেটি। জুয়েলের বাবা জানান, তিনি এখনো স্বপ্ন দেখেন তার ছেলে বেঁচে আছে, একদিন সে ফিরে আসবে। ফিরে এসে বাবা বলে তাকে আবারও জড়িয়ে ধরবে। এই বলে চোখের জল ছেড়ে দেন জামাল উদ্দিন।

Manual2 Ad Code

এদিকে জুয়েলের সঠিক কোন খবর না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তার মা, ভাই বোনসহ পরিবারের লোকজন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় আশায় বুক বেঁধেছেন তার মা, বাবা, ভাই বোন আর স্ত্রী-সন্তান। তাদের প্রতীক্ষার প্রহর যেনো শেষ হয় না, অন্তত লাশটা পেলে মনকে বোঝাতে পারতেন যে, জুয়েল মারা গেছে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!