নাজমুল হক নাহিদ, নওগাঁ :: মাঘের কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত নওগাঁর আত্রাই নদীর তীরবর্তী দরিদ্র শ্রমজীবীদেরর জনজীবন । বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা চরমে ।
গত কয়েক দিনের বেড়ে চলা শীতের তীব্রতায় সন্ধ্যা নামার সাথে বৃষ্টির মতো ভরে কোয়াশা। সেই সাথে বইছে ঠান্ডা বাতাস । যার ফলে প্রচন্ড শীত অনুভূত হচ্ছে এ অঞ্চলে। হাড় কাঁপানো শীতে কষ্ট দিন পার করছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা । শীতের তীব্রতায় কাজে যোগ দিতে না পেরে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। তাদের অনেকের নেই শীতের গরম কাপড়। যার ফলে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শ্রমজীবী নারী ও বৃদ্ধারা।
সোমবার (১৭ জানুয়ারী) দিনব্যাপী সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাযায়, শ্রমজীবী নারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কাজ করেন বাড়িতে ও বিভিন্ন ফসলের মাঠে। তারা জানান, ভোরে ঘুম থেকে ওঠে নিজেই রান্না-বান্না করতে হয় । এই শীতে সাংসারিক কাজকর্ম সেরে কর্মস্থলে যেতে তাদের অনেক কষ্ট হয়।
কথা হয় আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শ্রমজীবী নারী ময়নার সাথে তিনি জানান, খুব সকাল সকাল তাকে ঘুম থেকে উঠে রান্না-বান্না শেষে সন্তানদের জন্য তাকে কর্মস্থলে আসতে হয়। কয়েক দিনের শীতে তাকে কর্মস্থলে আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পেটের দায়ে অনেকেই দিনমজুর হিসেবে মাটি কেটে, ইটভাটায় কাজ করে জীবিকানির্বাহ করেন। এদের মধ্যে অনেকই রয়েছে বৃদ্ধ। শীতের তীব্রতা ও গরম কাপড়ের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
ইটভাটায় কর্মরত সাজেদুর রহমান জানান, তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ । পেটের দায়ে বৃদ্ধ বয়সে কাজ করছেন ইটভাটায় । থাকেন ইটভাটার এক খুপড়ি ঘরে । তিনি বলেন শীতের কারণে রাতে মাঝে মাঝে মনে হয় হাত-পা ঠান্ডায় বরফ হয়ে গেছে ।
উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের অটোরিকশা চালক রহিম বলেন, সকাল বেলা গাড়ি নিয়ে বের হলেও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি থাকায় লোকজন কম থাকে । এজন্য তাকে গাড়ি নিয়ে বসে থাকতে হয় । এসব নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষ চায় স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে । শীতের তীব্রতা তাদের এ বেঁচে থাকার অধিকারও যেন কেড়ে নিতে চাচ্ছে । এজন্য এসব খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের পাশে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকার সদয় হয়ে পাশে দাঁড়াবেন এমনটাই প্রত্যাশাই করছেন তারা ।
Leave a Reply